TARC : Residential Semester of BRACU

Hi. I’m Akil Tahsin, a former resident of the savar campus of brac university. আমি ছিলাম RS46 (Fall’17)। বর্তমানে এবং ভবিষ্যতে যারা যারা টার্কে যাচ্ছে, যাবে কিংবা যাওয়ার চিন্তা-ভাবনা করছে, তাদের জন্য আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে আমি কিছু কথা লিখছি। কী কী করা উচিত কিংবা উচিত নয়, কোন কোন জিনিস সাথে রাখা প্রয়োজন, টার্কের টাইম-টেবিল; এসব কিছু নিয়েই লিখব। আশা করি আমার ব্যাচমেটরা আমার সবরকম ভুল শুধরিয়ে দিবে। :D

Things to bring:

► কাপড়-চোপড়ঃ একগাদা সাধারন রেগুলার ব্যবহার্য কাপড়-চোপড় নিয়ে যেতে হবে যেগুলো সহজেই পরিষ্কার করা যায়। ছেলেদের জন্য কলার-ওয়ালা শার্ট, গেঞ্জি আবশ্যক কেননা ডাইনিং, অ্যান্থেম আর ক্লাসরুমে কলার এবং ফুল-প্যান্ট ছাড়া প্রবেশ নিষেধ। মেয়েদের ক্ষেত্রে এই ব্যাপারে একটু শিথিলতা আছে, টি-শার্ট পড়ে থাকতে পারবে চাইলে, সাথে ওড়না রাখলেই চলবে। এটা নিয়ম। এবং অবশ্যই তোয়ালে/গামছা, রুমাল। একটার বেশী রাখলে ভালো। এছাড়া, ফর্মাল ডে তে পড়ার জন্য ছেলেদের ফর্মাল শার্ট, প্যান্ট, বেল্ট, টাই (টাই না থাকলেও সমস্যা নাই) আর মেয়েদের ক্ষেত্রে শাড়ি কিংবা ফরমাল শার্ট-প্যান্ট রাখতে হবে। কাপড়-চোপড় রাখার জন্য বিশাল একটা আলমারী দেওয়া হবে সুতরাং ঐটা নিয়ে ভাবতে হবেনা। তবে হ্যাঁ, বেশ কিছু হ্যাংগার সাথে রাখলে ভালো। যদি অ্যাথলেটিক হও - খেলাধুলার জন্য স্পোর্টস জার্সি-কিট (ইচ্ছেমতো)

► ফরমাল ডে তে পরার জন্য জুতা, শু-ক্লিনার। এছাড়া সাধারন everyday-use এর জন্য স্যান্ডেল (এবং চাইলে বাথরুমের স্লিপারস) যেগুলো আরামসে সারাদিন পড়ে থাকা যাবে। খেলাধুলার জন্য স্পোর্টস শু।

► নিত্যপ্রয়োজনীয় কসমেটিক্স যেমন লোশন, পাউডার, বডি-স্প্রে এবং মেয়েদের ক্ষেত্রে মেক-আপের সরঞ্জাম।

► টুথব্রাশ, পেস্ট, সাবান, সোপ-কেস, শ্যাম্পু, শেভিং সরঞ্জাম, ফেস-ওয়াশ, হ্যান্ড-ওয়াশ, মশা মারার স্প্রে, রুম ফ্রেশনার ইত্যাদি বাথরুমে যা যা কাজে লাগে আরকি। তবে টয়লেট-পেপার আনলিমিটেডভাবে দেওয়া হয়। :P আর প্রতিদিন অন্তত একবার বাথরুম পরিষ্কার করে দেওয়ার ব্যবস্থা আছে।

► স্টেশনারি জিনিসপত্রঃ খাতা, কলম, পেন্সিল, রাবার, স্কেল, বেশ কিছু ফাইল কভার ও বাইন্ডারস (নোট পত্র রাখার জন্যে), অনেকগুলো A4 কাগজ কেননা কম্পিউটার ল্যাবে প্রিন্টার থাকলেও নোটস তোমাকে নিজের কাগজেই প্রিন্ট করে নিতে হবে।

► টার্কে বিভিন্ন কাজের জন্য অন্তত ৬ কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি। সাথে আইডি কার্ডের দুই কপি ফটোকপি রাখা ভালো।

► ৪টি কোর্সের বই ওখানকার লাইব্রেরী থেকে কিনতে হবে, তার জন্য ২৫০০টাকা। এছাড়া অন্যান্য প্রয়োজনে কিছু টাকা সাথে রাখা ভালো। টাকার দরকার পড়লে ওখানে BKash এর ব্যবস্থা আছে।

► ছাতা, সানগ্লাস, এক্সট্রা হেডফোন আর এক্সট্রা চশমা। কখন কী দরকার পরে বলা তো যায়না!

► শুকনো খাবার-দাবার যেমন বিস্কিট, চানাচুড় ইত্যাদি যেগুলোর মেয়াদ অনেকদিন থাকে। ওখানে খাবার-দাবাড় প্রচুর দেওয়া হয়, ক্যান্টিনেও অনেক কিছু পাওয়া যায়, তাও কারো যদি ইচ্ছে করে নিজে থেকে এইসব খাবার নিয়ে যেতে পারে। রাতে জেগে থাকলে কিংবা বন্ধুরা একসাথে বসে আড্ডা দেওয়ার সময় এসব খাবার অনেক কাজে দেয়। এছাড়া প্যাকেট খুলে খাবার রাখার জন্য দুই-একটা বক্স রাখলে মন্দ হয়না!

► ইলেকট্রনিক্সঃ ফোন অতি আবশ্যক, স্মার্টফোন হলে খুবই ভালো। ল্যাপটপ রাখলে ভালো, কারন বেশ কিছু প্রেজেন্টেশন স্লাইডস বানাতে হয়, ENG101 এর জন্য একটা Advertisement presentation ভিডিও বানাতে হয়। প্রতিটি কোর্সের টার্ম পেপার রেডি করতে হয়। এছাড়াও নোটস ইত্যাদি pdf তো আছেই। পেনড্রাইভ/ পোর্টেবল হার্ডডিস্ক আর ফোটোগ্রাফারদের জন্য অতি আবশ্যকীয় ক্যামেরা। Trust me, ওখানে ছবি তুলতে তুলতে পাগল হয়ে যাবা। :D

► ফোন, ক্যামেরা, ল্যাপটপ চার্জে দেওয়ার জন্য এক্সটেন্ডেড মাল্টিপ্লাগ। প্রতিটি ছাত্র-ছাত্রীর বিছানার পাশে পড়ার টেবিলের নিচে একটা করে পাওয়ার সকেট থাকে কিন্তু সেটা অনেক দূরের এবং থ্রী-পিন। তাই একটা লম্বা তার সহ মাল্টিপ্লাগ নিয়ে গেলে বিছানার পাশে ইলেকট্রনিক্স চার্জ দিতে সুবিধা হবে।

► টার্কে সবাইকে একটা করে সিঙ্গেল বিছানা, এক সেট চাদর এবং একটা বালিশ দেওয়া হয়। কেউ চাইলে প্রয়োজনমতো একটা এক্সট্রা বালিশ কিংবা কোলবালিশ এবং গায়ে দেওয়ার চাদর/কাঁথা নিয়ে যেতে পারে। ওখান থেকে মশারি দেওয়া হয়।

► দুঃখজনক হলেও সত্য, টার্কের ক্লাসরুম, লাইব্রেরী এবং ল্যাবে থাকলেও ডর্মে কোনো এসি নেই। তাই প্রয়োজনমতো একটা ছোটখাটো টেবিল ফ্যান নিয়ে গেলে ভালো হয়।

► ওখানে মেডিকেল আছে, যেকোনো রকম অসুখ হলে চিকিৎসা এবং ওষুধের ব্যবস্থা আছে। এছাড়া তুমি সাথে করে সাধারন কিছু ওষুধ নিয়ে যেতে পারো, তবে বেশী ট্যাবলেট নিয়ে গেলে সেগুলো ডর্ম সুপারভাইজারের কাছে জমা দিয়ে দিতে হয়, তাই না নিয়ে গেলেও চলবে। যাদের প্রতিদিন ওষুধ দরকার হয়, তাদের ক্ষেত্রে জমা দেওয়ার প্রয়োজন নেই।

** টার্কে তিন মাস দুইজন রুমমেটের সাথে কাটাতে হবে। সেক্ষেত্রে কিছু কমন জিনিস যেমন বাথরুম স্লীপারস, স্প্রে, ফ্রেশনার, হ্যান্ডওয়াশ ইত্যাদি আলোচনা সাপেক্ষে কিনলে ভালো হয়। আর প্রত্যেক রুমের জন্য এক সেট তালা কিনতে হবে যার চাবি থাকবে চারটি। তিনজন রুমমেট তিনটি চাবি রাখবে আর ডর্ম সুপারভাইজারের কাছে একটি চাবি দেওয়া থাকবে।

*** কিছু জিনিস টার্কে নিষিদ্ধ। যেমনঃ ইলেকট্রিক গীটার, ইস্ত্রি, hair straightener, যেকোনো রকম playing cards (uno, তাশ), external speaker, water heater ইত্যাদি। এগুলো পাওয়া গেলে নিয়ে নেয় এবং ডর্ম সুপারভাইজার যদি কড়া হয় তবে Apology দিয়ে দেয়, সুতরাং না নিয়ে যাওয়াই উত্তম। তবে গরম পানি রাখার জন্য ফ্লাস্ক নিয়ে যাওয়া যেতে পারে।

Entering the Haven:

টার্কে যাওয়ার দুইটি উপায়ঃ ভার্সিটির বাসে কিংবা নিজস্বভাবে (personal transport)। যাদের গাড়ি আছে তাদের ক্ষেত্রে গাড়িতে যাওয়া উত্তম কেননা যাওয়ার দিন প্রচন্ড ভীড় হয়, লাইন ধরে বাসে উঠতে হয়। নিজস্ব গাড়ি নিয়ে গেলে ক্যাম্পাসের গেটে নাম-পরিচয় দিয়ে রেজিস্ট্রি করাতে হবে সবগুলো বাসে জায়গা না হলে বাসগুলো ছাত্র-ছাত্রীদের নামিয়ে আবার আসবে তবে এক্ষেত্রে সন্ধ্যা হয়ে যেতে পারে। তবে সব বন্ধুরা মিলে বাসে করে যাওয়ার মধ্যে যে মজা সেটা অন্যরকম। ভার্সিটি বাসে গেলে গার্ডিয়ান সাথে যেতে পারবেনা। ক্যাম্পাসে ঢোকার সময় তোমার সাথে তোমার গার্ডিয়ান প্রবেশ করতে পারবে তবে ডর্মের ভিতরে যেতে পারবেনা। সময় শেষ হয়ে গেলে তোমার গার্ডিয়ান তোমাকে বিদায় দিয়ে চলে যাবে।

টার্কের কাগজপত্র জমা দেওয়ার সময় তোমার ডর্ম এবং রুম নাম্বার লটারির মাধ্যমে ঠিক করা হয়, যেটা কোনভাবেই পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। ক্যাম্পাসে পৌছানোর পর তুমি তোমার নির্ধারিত ডর্মে চলে যাবা, সেখানে একটা টেবিলের উপর অ্যাটেন্ডেন্স কাগজে সাক্ষর করে তুমি তোমার রুম বুঝে নিবা। সেখানে তোমার ব্যাগ-পত্র রাখার পর সেদিনের মতো তোমার কোনো কাজ নেই। মেয়েদের ক্ষেত্রে উপর তলায় ব্যাগ পৌছে দেওয়ার সুব্যবস্থা আছে। ছেলেদেরকে নিজের ব্যাগ নিজেই টেনে তুলতে হবে। :v ক্যাম্পাসে কোথায় কী আছে এসব তুমি তোমার ফ্লোরের ডর্ম সুপারভাইজারদের কাছ থেকেই রাতের ডর্ম-মিটিং-এ জানতে পারবা।

Important Personnel:

RS এর কিছু ব্যক্তিবর্গ সেখানকার সর্বোচ্চ authority এর মর্যাদা বহন করেন। তাঁদের মধ্যে সবচেয়ে উপরে আছেন Campus Superintendent: রেহান স্যার। এর পরে আছেন Assistant CS। তারপর আমাদের সম্মানিত Dorm supervisors. প্রতিটি ডর্মের (এবং Nikunjo, Maloncho এর ক্ষেত্রে প্রতিটি ফ্লোরে) একজন করে ডর্ম সুপারভাইজার নিযুক্ত থাকেন। ছাত্রছাত্রীদের দেখাশোনা, ভালো মন্দ, বিধি-নিষেধ, ছাত্রছাত্রীরা প্রতিদিন অ্যান্থেমে যাচ্ছে কিনা, অ্যান্থেমের অ্যাটেন্ডেন্স গ্রহণ, প্রতিদিন রাতে ডর্ম মিটিং এ সারাদিনে কারো কোনো সমস্যা হয়েছে কিনা কিংবা কেউ অস্বাভাবিক কিছুর সম্মুখীন হয়েছে কিনা, কারো অভিভাবক প্যারেন্টস ডে ছাড়া কোনোদিন দেখা করতে আসতে চাইলে কিংবা কেউ (অবশ্যই ইমার্জেন্সিতে) leave নিয়ে ক্যাম্পাসের বাইরে যেতে চাইলে তার অনুমতি প্রদান, সেমিনারে সবাই অংশগ্রহন করছে কিনা, কোনো ছাত্র/ছাত্রী ক্লাস/অ্যাক্টিভিটি মিস দিলো কিনা - ইত্যাদি যাবতীয় ব্যাপারের তত্ত্বাবধানে আছেন তারা। সুতরাং তাদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা এবং প্রতিটি নিয়ম মেনে চলা প্রত্যেকে RS Student এর দায়িত্ব। আগামী তিন মাসের জন্য তাঁরাই তোমাদের অভিভাবক বলতে পারো। :D

টার্কে দু’টো শব্দ তুমি অনেক শুনতে পাবেঃ “VC Certificate” এবং “Apology”। VC Certificate হাতে গোনা অল্প কিছু মানুষকে দেওয়া হয় যাদের কোনো ক্লাস, অ্যান্থেম, সেমিনারে মিস নাই, যাদের নামে কোনো “Apology” নেই। Apology হলো এক প্রকার কেস। তুমি কোনো নিয়ম ভাঙ্গলে কিংবা উল্টা-পাল্টা কিছু করলে তোমাকে ‘apology’ ধরায় দেওয়া হয়। ২-৩টি apology খেলে অভিভাবকদের ডাকা হয় আর অনেক বেশি খেয়ে ফেললে তোমাকে ক্যাম্পাস থেকেই বের করে দেওয়া হবে, তখন বাইরে থেকে এসে ক্লাস করে চলে যেতে হবে। সুতরাং সাবধান!

Timetable:

প্রত্যেক রবিবার থেকে বৃহস্পতিবার ক্যাম্পাসে একই রুটিন থাকে। নিচে সংক্ষীপ্তভাবে সারাদিনের রুটিন দেখানো হলোঃ

7:30 am - 8:30 am: Breakfast

8:45 am: Anthem (Mandatory)

9:00 am - 3:30 pm: Classes. (রবিবার - বুধবার)। প্রতিদিন একটি ইংলিশ (ENG101/EN102) ক্লাস এবং একটি HUM103/DEV101 ক্লাস নেওয়া হয়। সপ্তাহে দুইদিন HUM, দুইদিন DEV। ক্লাস হয় ১ ঘন্টা ২০ মিনিট। ক্লাস ছাড়া বাকি সময়টুকু তোমার ইচ্ছেমতো ঘুরাঘুরি করে, ঘুমিয়ে, হেসে, খেলে কাটিয়ে দিয়ে পারো।

10:25 am - 10:40 am: Morning snacks + tea.

12:00 pm - 2:00 pm: Lunch. তবে কারো যদি back-to-back ক্লাস থাকে তবুও ১২ঃ০০-১২ঃ৩০ লাঞ্চ ব্রেক সবার জন্য।

4:00 pm - 4:15 pm: Afternoon snacks + tea.

7:00 pm - 8:30 pm: Study Hour. এই সময়ে বাইরে ঘোরাঘুরি নিষেধ। তোমাদের জন্য অন্নেষা বিল্ডিং এর ক্লাসরুম খুলে দেওয়া হয়। তোমরা চাইলে ডর্মে, লাইব্রেরীতে কিংবা ঐসব ক্লাসরুমে বসে পড়াশোনা করতে পারো। :P

8:35 pm - 9:30 pm: Dinner.

9:50 pm: বাঁশি বাজানো হয় এবং ক্যাম্পাসে ঘোরাঘুরি করা প্রতিটি ছাত্রছাত্রীকে নিজ নিজ ডর্মে ফিরে যেতে হয়। ঠিক 10:00 pm এ ডর্মের গেট লাগিয়ে দেওয়া হয়। সুতরাং সাবধান, অন্য ডর্মে থেকে গেলে যদি ধরে ফেলে সমস্যা হতে পারে বৈকি।

10:00 pm - 11:00 pm: এই সময়টুকু তোমরা ডর্মের ভিতর ঘুরাঘুরি করতে পারবা। বন্ধুদের রুমে গিয়ে আড্ডা দিয়ে পারবা। তবে ১১টার পরে রুম থেকে বের হওয়া নিষেধ আর ১২টার সময় সবার ঘুমিয়ে পরার নির্দেশ। ১১টার পরে বের হতে চাইলে একটা পানির বোতল নিয়ে পানি ভরার জন্য বের হওয়া যাবে।

বৃহস্পতিবার কোনো ক্লাস না হলেও anthem এবং study hour থাকে।

সোমবার ফরমাল ডে অর্থাট সেদিন অ্যান্থেমের সময় থেকে শুরু করে দুপুর ৩ঃ৩০ টা পর্যন্ত প্রত্যেককে formal getup এ থাকতে হবে।

What Happens on Weekends:

শুক্রবার এবং শনিবারের রুটিন কিছুটা ভিন্ন। এইদুইদিন ক্লাস হয়না, সকালে অ্যান্থেম হয়না সুতরাং ঘুমানো যায়। শুক্রবার মুসলিম ছেলেদের জুম্মাহ নামাজ এর জন্য ১২ঃ৩০ টায় বাইরের মসজিদে যেতে দেওয়া হয়, তবে মসজিদে যাওয়ার নাম করে বাইরের দোকানে ঘোরাঘুরি যেন না করে সেজন্য সিকিউরিটি গার্ড থাকে। xD আর নামাজের জন্য যাওয়ার আগে ও আসার পরে একটি অ্যাটেন্ডেস লিস্টে সিগ্নেচার করে যেতে হয়। তার উপর, আগের রাতে নামাজের স্লিপ দিয়ে দেওয়া হয় যেটা জমা দিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে হয়। সুতরাং বহিরাগতদের ঐদিনও ভিতরে ঢোকার উপায় নেই। :P প্রতি শুক্রবার লাঞ্চ শুরু হয় দুপুর ২টায়, unlike all the other days।

প্রত্যেককে RS এ থাকাকালীন কোনো একটি Activity তে অংশগ্রহন করতে হয় যার সাইনআপ সম্পর্কে ওখানে যাওয়ার পর বিস্তারিত জানানো হয়। Activity এর ক্লাস প্রতি সপ্তাহে একদিন - বৃহস্পতি, শুক্র কিংবা শনিবারে নেওয়া হয়।

এছাড়া প্রায় প্রতি বৃহস্পতিবার অথবা শনিবার সেমিনারের আয়োজন করা হয় যেখানে যাওয়া বাধ্যতামূলক। এর অ্যাটেন্ডেন্স এর উপর HUM103 তে নাম্বারও বরাদ্দ করা আছে। মেডিকেল প্রয়োজন ছাড়া সেমিনার মিস দেওয়া যাবেনা এবং এক্ষেত্রে ডর্ম সুপারভাইজারের কাছে লিখিত অনুমতি নিতে হবে। সেমিনারগুলো সাধারনত ১-২-৩ ঘন্টা পর্যন্ত হয়। ৩ ঘন্টার সেমিনারে মাঝখানে ব্রেক দেওয়া হয় অবশ্য। Trust me, সেমিনার করতে করতে পাগল হয়ে যাবা তোমরা। কিন্তু কিছু করার নেই। :D

Parents Day:

সমগ্র ৯০ দিনের মধ্যে অন্তত ৩ - ৪ বার Parents Day রাখা হয়। সাধারনত অতিরিক্ত ছাত্র-ছাত্রী থাকলে দুইদিন ধরে এটা হয়ে থাকে। প্রত্যেকে নিজের বাবা-মা এবং ক্ষেত্রবিশেষে ছোট ভাই-বোনদের এই দিন ক্যাম্পাসে আনতে পারে, এবং কিছু জিনিস যদি শহর থেকে/ বাসা থেকে আনাতে হয় কিংবা কিছু ফেরত পাঠাতে হয় তবে এদিন করলেই সুবিধা। আমাদের সময় সবার অভিভাবকরা এদিন যে পরিমান খাবার-দাবার দিয়ে যেত, সারারাত সবাই মিলে সেগুলো মিলেমিশে সাবাড় করতে করতে পেটের বারোটা বেজে যেত আরকি। সুতরাং তোমার অভিভাবক না আসতে পারলেও ক্ষতি নেই, বন্ধুরা আছে না! :D

Foods:

টার্কে পাঠানোর সময় প্রতিটি বাবা-মা এর অন্যতম প্রধান চিন্তা থাকে খাবার নিয়ে। তাদের জন্য বলছি, টার্কের সাথে সাধারন হোস্টেলের পার্থক্য আছে। এখানে খাবার দাবারের ব্যাপারে কোনো কার্পণ্য নেই। প্রতিদিন পাঁচবেলা খাবার!

সকালের ব্রেকফাস্টে দেওয়া হয় পাউরুটি, জেলি, বাটার, চিনি, একটা করে সিদ্ধ ডিম। সাথে থাকে পরোটা, ভাজি কিংবা সবজি-ডালের তরকারি, খিচুড়ি, একটি করে ডিমভাজি। সাথে থাকে দুধ চা এবং রঙ চা। ডিম ছাড়া বাকি সব আনলিমিটেড।

দুপুরের আর রাতের খাবারের মধ্যে সবচেয়ে কমন হলো বিখ্যাত “ব্র্যাক চিকেন” :P অর্থাৎ মুরগির মাংসের তরকারি এবং সাথে কোনো এক প্রকার মাছ। তবে যেকোনো একটি নিতে হয়, এক পিস করে। চিন্তার কিছু নেই ঐ এক পিস বাসার এক পিস এর চেয়ে কয়েকগুন বড় :v এই ৯০ দিন মুরগির মাংস খেতে খেতে নিজেই ব্র্যাক চিকেন হয়ে যাবা xD তবে এটা সপ্তাহে সাতদিন দেওয়া হয়না। এগুলো ছাড়াও কোনো কোনো দিন দেওয়া হয় ডিম ভুনা কিংবা স্পেশাল মুরগি ও মাছের ডিমের তরকারি।

প্রতি শুক্রবার আর সোমবার স্পেশাল খাবার-দাবারের আয়োজন করা হয়ঃ শুক্রবার দুপুরে কাচ্চি কিংবা তেহারি কিংবা মোরগ পোলাও। আর সোমবার রাতে দেওয়া হয় ফরমাল ডিনার তথা ফ্রাইড রাইস, চিকেন তান্দুরি/ফ্রাই, মিক্সড ভেজিটেবল সাথে এক গ্লাস করে কোক। তবে অনেকেই একবার খেয়ে আরেক ফ্লোরে এ গিয়ে আবার খাওয়ার মতো কুচিন্তা করতে পারে সেজন্য আগেরদিন রাতে সবাইকে একটি করে কার্ড দিয়ে দেওয়া হয়। সেই কার্ডের বিনিময়ে এক পিস মস্ত চিকেন তান্দুরি কিংবা কাচ্চির মাংস।

সকাল এবং বিকালের স্ন্যাক্সে দেওয়া হয় বার্গার, স্যান্ডুইচ, পিজ্জা, প্যাটিস, কেক, পেস্ট্রি, চটপটি, মুড়ি মাখা ইত্যাদি ইত্যাদি। সাথে আনলিমিটেড চা তো আছেই!

Canteen:

টার্কের ক্যান্টিন একেবারে অলরাউন্ডার। এখানে শুকনো খাবার-দাবার যেমন বিস্কিট, কেক, কোকের বোতল, আড়ং এর চকোলেট মিল্ক, কাপ নুডলস, কফি ইত্যাদির পাশাপাশি একাধারে খাতা-কলম থেকে শুরু করে শ্যাম্পু, ব্রাশ, পেস্ট, ফেসওয়াশ সব পাওয়া যাবে। টার্কে আমার সবচেয়ে বেশী টাকা পয়সা খরচ হয়েছে মাউন্টেন ডিউ, কাপ নুডলস আর কফি কিনতে কিনতে। তবে ক্যান্টিন ২৪ ঘন্টা খোলা থাকেনা।

এছাড়াও ক্যাম্পাসের এক কোনায় একটি লন্ড্রি আছে। সেখানে কাপড়-চোপড় ধোয়া+ইস্ত্রি করে নেওয়া যাবে।

Miscellaneous:

Orientation, DEV101 Drama, RS Activity Day, BRAC Visit, Lalbagh and Liberation war museum visit, SLL Day, Cultural Night, Smoking Zone, Medical ইত্যাদি আরো অনেক কিছু আছে ব্র্যাকের রেসিডেনশিয়াল ক্যাম্পাসে। বিস্তারিত লিখতে গেলে দিন পার হয়ে যাবে। এসব সম্পর্কে বিস্তারিত ধীরে সুস্থে জানতে পারবে ওখানে যাওয়ার পর।

তবে একটি কথা না বললেই নয়, RS এ সবচেয়ে বেশী গুরুত্ব দেওয়া হয় Discipline এর উপর। খাবার দেওয়া হয় লাইন ধরে, খাওয়া শেষে নিজের প্লেট-গ্লাস নিজেই রেখে আসতে হয় ডাইনিং এর নির্দিষ্ট জায়গায়, সম্পূর্ন ক্যাম্পাস পরিষ্কার রাখতে হয় তাই ময়লা-আবর্জনা ফেলার জন্য পুরো ক্যাম্পাস জুড়ে ডাস্টবিন রাখা আছে, টাইম টেবিল খুবই কঠোরভাবে পালন করা হয় এক মিনিটও হেরফের করার অবকাশ নেই।। সুতরাং মাথায় রেখো, টার্কে যে শুধু পড়াশোনাই করতে যাচ্ছো তা না, এটা একটা লাইফস্টাইল হয়ে দাঁড়াবে তোমার জন্য।

শেষ কথা, RS এর জন্য খুব সুন্দর একটি official theme song রয়েছে, RS39 ব্যাচের সিনিওরদের বানানো। গানটা প্রথমবার শুনলে কিছু নাও মনে হতে পারে, কিন্তু ক্যাম্পাসে থেকে আসার পর থেকে এই গানটা শুনলেই গায় কাঁটা দিবে। :D ♥

টার্ক নিয়ে প্রত্যেক ব্যাচ থেকে সুন্দর সুন্দর ভিডিও বানানো হয়। ক্যাম্পাস সম্পর্কে কিছু ধারনা পাওয়া যেতে পারে সেখানে।

Written by ;

Akil Tahsin vai,

Department of CSE,

BRAC University