সকালের দিকটায় লাউঞ্জের দিকে হাতে চায়ের কাপটা নিয়ে ঘুরছি, এমন সময় দরজা দিয়ে ঢুকলেন সহ-অধ্যাপক সান্যালদা ।
"এই যে সান্যালদা, তোমাকেই খুঁজছিলাম," আমি অত্যন্ত আগ্রহের সাথে বলে উঠলাম ।
সান্যালদা আমার দিকে আড়চোখে চেয়ে চায়ের কাপটা হাতে নিতে নিতে বললেন, "কেন বাওয়া, সক্কাল সক্কাল আমার খোঁজ কেন ?"
"আরে আজ এই একটু আগেই একটা অদ্ভুত উপলব্ধি হল ।"
সান্যালদা আমার দিকে একটু সন্দিগ্ধ দৃষ্টিনিক্ষেপ করে বললেন, "তোমার উপলব্ধি ? মানে নিশ্চয়ই এবারে একটা আষাঢ়ে গল্প দেবে ।"
আমি একেবারে বিগলিতস্বরে বললাম, "না না, এক্কেবারেই না । এ একেবারে আমার হৃদয়োচিত উপলব্ধি ।"
সান্যালদা এবারে একটু ভীতস্বরেই বললেন, "কেলো করেছে রে । কেসটা কি ?"
আমি একটু চেয়ারে আরাম করে বসে গলাটা পরিষ্কার করে নিয়ে একটু গম্ভীরস্বরে বললাম, "আমার বাবা কেন কোনোদিন কলকাতার মেয়র হতে পারবেন না, সেই কারণটা আবিষ্কার করলাম ।"
সান্যালদা প্রায় বিষম খেতে খেতে বলে উঠলেন, "অ্যাঁ ? সে আবার কি ? মাইরি সক্কাল সক্কাল পচা ফেনী খেয়েছো ?"
আমিও নাছোড়বান্দা, "আরে সত্যি বলছি সান্যালদা, শুনলে বুঝতে পারবে ।"
অগত্যা সান্যালদাও নিমরাজি হয়ে সায় দিয়ে বললেন, "আচ্ছা ঠিক আছে, বলেই ফেলো, শুনি ।"
"আচ্ছা সান্যালদা, কলকাতার মেয়রকে আমরা বাংলায় কি বলে ডাকি ?"
সান্যালদা একটু ভেবে নিয়ে বললেন, "পৌরপিতা ।"
আমি এবারে একটু দুঃখ-দুঃখ ভাব করে বললাম, "কিন্তু আমার বাবা তো তা হতে পারবেন না ।"
"হ্যাঁ, তা হয়ত ঠিক । কিন্তু কারণটা কি ?"
"তিনি তো প্রৌঢ়পিতা", বলেই আমি হো-হো করে হেসে উঠলাম ।
"শালা, জুতোটা কোথায় গেল", সান্যালদা চেয়ার থেকে উঠতেই আমি সটান চম্পট দিলাম ।