scribbling

গুপী-বাঘা আজও কেন প্রাসঙ্গিক

একজন ম্যানেজমেন্টের শিক্ষকের কাছে গুপী-বাঘা আজও কেন প্রাসঙ্গিক?


ছোট থেকে অগণিতবার দেখলেও সত্যি বলতে কি, বয়স বাড়ার সাথে সাথে আমি এই সিনেমাটাকে অনেকগুলো ভিন্ন ভিন্ন প্রেক্ষাপট থেকে বিচার করে দেখেছি । তাদের মধ্যে সবার উপরে আসে Maslow's Hierarchy of Needs। এই তত্ত্ব অনুযায়ী মানুষের জীবনের বিভিন্ন চাহিদাগুলিকে পাঁচটি স্তরে বিভক্ত করা হয় - Physiological, Safety, Love and Belongingness, Esteem, Self-Actualization । ভূতের রাজার বর প্রথম এবং পঞ্চম চাহিদাগুলিকে পরিপূর্ণ করে, এবং ধীরে ধীরে সেই পরিপূর্ণতাকে ভিত্তি করে আমাদের আদরের গুগাবাবার জীবনের বাকি চাহিদাগুলি চরিতার্থ হয় ।


  • Physiological (Basic Need) - "আমাদের যেন খাওয়া-পরার কোন ভাবনা না থাকে"

  • Self-Actualization (Need of Creative Discovery) - "আমাদের দেশ দেখার খুব শখ রাজামশাই"

  • Self-Actualization (Need of Fulfilling one's Potential) - "যদি আমরা গান-বাজনা করে লোককে একটু খুশি করতে পারতাম"


মজার ব্যাপার হল, খাওয়ার এবং ঘুরে বেড়ানোর জন্য তাদেরকে সবসময় একে অপরের হাতে তালি দিতে হত, এবং সেখান থেকে সূচনা হয় গুপী-বাঘার আজীবন বন্ধুত্বের, যা তাদের এগিয়ে নিয়ে যায় Love and Belongingness Need-টির চরিতার্থতার দিকে । মনে পড়ে, ভূতের রাজার বর পেয়ে খাওয়া-দেওয়ার শেষে বাঘার সেই আক্ষেপ, "থাকার জায়গাটা চাইলাম না কেন বল তো ?" এখানেই প্রচ্ছন্নভাবে ফুটে ওঠে Safety Need-এর কথা । কয়েদখানায় মধ্যে গুপী-বাঘার খেতে না চাওয়ার মধ্যে ফুটে ওঠে Esteem Need । এরপর নিজেদের সমস্ত চাহিদার পরিপূর্ণতার উপরে ভিত্তি করে তারা যুদ্ধজয় করে ।


প্রচ্ছন্নভাবে মাণিকবাবু আমাদের দেখিয়ে গিয়েছেন, একজন আদর্শ মানুষ কি সহজ সরলভাবে নিজের সামান্য চাহিদাগুলির চরিতার্থতার মাধ্যমে মানুষের কল্যাণ করে যেতে পারে, এবং ঠিক সেই স্বভাবজাত সারল্যের কারণেই আমাদের গুগাবাবা চিরন্তন হয়ে রয়ে যাবে