scribbling

IVF এবং বিজ্ঞাপনের গুঁতো

অর্থনীতি নিয়ে কাজ করার সুবাদে সাধারণতঃ ভারতের মহানগরগুলিতে মাতৃত্ব কেন্দ্রগুলির একপ্রকার রমরমা চোখে পড়ে । দম্পতি-কেন্দ্রিক পরিবার, ক্রমবর্ধমান প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার লড়াই, গগনচুম্বী উচ্চাকাঙ্ক্ষা, এবং নিজের শিকড় থেকে দূরত্ব বেড়ে যাওয়ার কারণে এই মহানগরগুলিতে দম্পতিদের মধ্যে সন্তান-সন্ততির চাহিদাটা হয় কমে যায়, নচেৎ কর্মবিধ্বস্ত শরীর-মন সেই সুযোগটা দিয়ে উঠতে পারে না । কর্মব্যস্ত দম্পতিদের জীবনের এই শূন্যস্থানটি পূরণার্থে একটি মুখ্য ভূমিকা থাকে এই কেন্দ্রগুলির । কৃত্তিম প্রজনন পদ্ধতিতে, যেটাকে আমরা  নামে চিনি, এই কেন্দ্রগুলি কমবেশি অনেক দম্পতির মুখেই হাসি ফোটাতে সক্ষম হয়েছে । কিন্তু কখনও কি এমন হয়েছে, সেইরকম একটি কেন্দ্রের জন্য আপনার পেটফাটা হাসির উদ্রেক হয়েছে ?


নিছক ভূমিকার মত শোনালেও আমার অভিজ্ঞতার ভাণ্ডারে এসে জমা হয়েছে গুরগাঁওর এমনই এক কেন্দ্রের এক অনির্বচনীয় গল্প । ঠিক সেই কেন্দ্রের গল্প নয়, কিন্তু সেই কেন্দ্রের এক অতিমানবিক বিজ্ঞাপনের গল্প । কথায় বলে, "অধিকন্তু ন দোষায়"। কিন্তু সেই কথা যদি কেউ স্থান-কাল-পাত্র ভুলে প্রয়োগ করে, সেটা মাঝেমাঝে অতিপ্রাকৃত হয়ে দাঁড়ায় । এই সেদিন যেমন দুপুরের দিকে অটো করে বাইরে বেরিয়েছিলাম একটা কাজে । যথারীতি একটু পরেই গুরগাঁওর কুখ্যাত যানজটে জড়িয়ে পড়ে স্থবিরত্বপ্রাপ্ত হয়েছি । কাঠফাটা রোদে অটোর ভিতরে সেদ্ধ হতে হতে ইতিউতি চেয়ে দেখতে দেখতে আচমকা চোখ পড়ল সামনের অটোটির পিছনে লাগানো একটি বিজ্ঞাপনের উপরে । বিজ্ঞাপনটি পড়েই সেই দুপুরে চোখে প্রায় অন্ধকার দেখছি । মাইরি বলছি, মানে এডাম স্মিথ, কার্ল মার্ক্স, আর সাইমন কুজনেটের দিব্যি গেলে বলছি, কয়েক সেকেন্ডের জন্য অর্থনীতির সাথে আরও অন্য কিছুও মাথায় উঠে গিয়েছিল । মুখ থেকে অজান্তেই বেরিয়ে গিয়েছিল, "মারিয়েছে রে, এতগুলো !!!" সেই বিজ্ঞাপনে বড় বড় করে লেখা ছিল :


১৯ বচ্চে হর হফতে


মানে হিসেবে করলে দিনে প্রায় তিনটে করে বাচ্চা । আমি চোখ বুজে মনেমনে বললাম, "মাইরি সেলুকাস, কি বিচিত্র এই গুরগাঁও ।"