Eye Donor Awareness

০১) মরণোত্তর চক্ষু দান কি?

মরণোত্তর চক্ষু দান হল মৃত্যুর পর কোনো ব্যক্তির চক্ষু দান। এক্ষেত্রে মৃত ব্যক্তির পরিবার যদি রাজি থাকে তাহলেই দান করা সম্ভব।

০২) মৃত্যুর পূর্বে চক্ষু দান করা যায় কি?

না, মৃত্যুর পূর্বে চক্ষু দানা করা যায় না। কেবলমাত্র চক্ষু দানের অঙ্গীকার করা যায়।

০৩) অঙ্গীকার করে রাখা কি অত্যন্ত জরুরী?

মৃত্যুর পূর্বে অঙ্গীকার করার সময় অঙ্গীকার পত্রে দুই জন ব্যক্তির সাক্ষী অবশ্যই প্রয়োজন। এক্ষেত্রে সাক্ষীগন জ্ঞাত হলেন যে উক্ত ব্যক্তি চক্ষু দান করতে ইচ্ছুক। মৃত্যুর পর ঐ সাক্ষীগনই শেষ ইচ্ছার এই বিষয়টিকে সকলকে জানানোর সহযোগিতা করবেন। এক্ষেত্রে মনে রাখা প্রয়োজন যে মৃত্যুর পর নিকট আত্মীয় যদি সম্মতি না দেন তাহলে অঙ্গীকার করা থাকলেও চক্ষু দান করা সম্ভব নয়। সে কারনে মৃত্যুর পর নিকট আত্মীয়কে সম্মতি পত্রে স্বাক্ষর করতে হয় এবং দুইজন সাক্ষিকেও স্বাক্ষর করতে হয়।

০৪) চক্ষু দানের ক্ষেত্রে কি সম্পূর্ণ চক্ষু গোলকটাই কি তুলে নেওয়া হয়?

না, আগে নেওয়া হত। কিন্তু প্রযুক্তিবিদ্যার উন্নতি হওয়ায় এখন শুধুমাত্র কর্ণিয়াদুটি তুলে নেওয়া হয়।

০৫) কর্ণিয়া কি?

চোখের উপরে সবচেয়ে বাইরের পর্দার নাম কনজাংক্টিভা (conjunctiva)। ঠিক তার পরের স্তরটিই হল কর্ণিয়া (cornea)। এটি একটি স্বচ্ছ পর্দা। নিচের ছবিতে দেখানো হল।

০৬) চস্‌মা পরা থাকলে বা ছানি অপারেশন করা থাকলেও কি কর্ণিয়া দান করা যায়?

অবশ্যই। কারন কাছের জিনিস বা দূরের জিনিস দেখতে পাওয়া বা না পাওয়া নির্ভর করে চোখের লেন্সের উপর। এক্ষেত্রে লেন্স ঠিক মত মোটা বা পাতলা হয়ে বস্তুর প্রতিবম্বকে রেটিনায় মিলিত করতে পারে না। চস্‌মা (উত্তল বা অবতল বা উভয় লেন্স) পরে বস্তুর প্রতিবম্বকে রেটিনায় মিলিত করতে সাহায্য করা হয়। কর্ণিয়া এর জন্য দায়ী নয়।

যদি কোনো কারনে চোখের লেন্সে ছানি পরে তাহলে অপারেশনের মাধ্যমে বাদ দিয়ে কৃত্রিম লেন্স বসিয়ে দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে কর্ণিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হয় না। ফলে কর্ণিয়া দান করা যায়।

০৭) কি কি কারনে কর্ণিয়া দান করা যায় না?

কর্ণিয়া বিভিন্ন কারনে দান করা যায় না। যেমন-

        • অপুষ্টি, ইনফেক্সন, আঘাত লাগা, জন্মগত, পুড়ে যাওয়া ইত্যাদি কারনে কর্ণিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হলে।
        • এড্‌স(AIDS) হলে।
        • হেপাটাইটিস (Hepatitis)হলে।
        • এনসেফালাইটিস(Encephalitis) হলে।
        • র‍্যাবিস(Rabies) হলে।
        • সেপ্টিসেমিয়া(Septicemia) হলে।
        • রেটিনোব্লাস্টোমা(Retinoblastoma) হলে।
        • লিউকেমিয়া(Leukemia) হলে।
        • লিম্ফোমা(Lymphoma) হলে।

০৮) মৃত্যুর পর কত সময়ের মধ্যে কর্ণিয়া তুলে নেওয়া উচিৎ?

সময় নির্ভর করে কর্ণিয়া কত ভালো আছে বা মৃত্যুর পর কতটা যত্নে রাখা হয়েছে তার উপর। সাধারনতঃ ৪ ঘন্টা থেকে ৬ ঘন্টার মধ্যে তুলে নেওয়া উচিৎ।