বাংলাদেশের বিভিন্ন কলেজে ভর্তি প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে একটি প্রধান প্রশ্ন থাকে— কোন কলেজে কত পয়েন্ট লাগবে? শিক্ষার্থীরা সাধারণত এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল অনুযায়ী কলেজগুলোতে ভর্তির যোগ্যতা অর্জন করে। প্রতিটি কলেজ তাদের নির্ধারিত পয়েন্ট অনুযায়ী ভর্তি প্রক্রিয়া পরিচালনা করে এবং সেই পয়েন্টের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের ভর্তি নেওয়া হয়। চলুন, বিস্তারিতভাবে এই প্রক্রিয়া এবং পয়েন্ট নির্ধারণের পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করা যাক।
ভর্তির ক্ষেত্রে পয়েন্ট নির্ধারণ করা হয় শিক্ষার্থীদের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে। সাধারণত, এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার মোট জিপিএ (Grade Point Average) যোগ করে একটি পয়েন্ট নির্ধারণ করা হয়। এই পয়েন্টের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন কলেজে ভর্তির জন্য যোগ্যতা অর্জন করে। অনেক শীর্ষস্থানীয় কলেজে ভর্তির জন্য উচ্চ জিপিএ প্রয়োজন, তবে স্থানীয় বা অন্যান্য কলেজগুলোতে তুলনামূলক কম জিপিএ দিয়েও ভর্তি হওয়া সম্ভব।
বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় কলেজগুলোতে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থীদের উচ্চ জিপিএ প্রয়োজন হয়। বিশেষ করে ঢাকা কলেজ, নটরডেম কলেজ, এবং ভিকারুননিসা নূন স্কুল ও কলেজের মতো প্রতিষ্ঠিত কলেজগুলোতে সাধারণত ৪.৮০ থেকে ৫.০০ জিপিএ প্রয়োজন। এই কলেজগুলোতে ভর্তির জন্য প্রতিযোগিতা খুবই তীব্র, এবং অনেক সময় শিক্ষার্থীদেরকে ভর্তির জন্য অতিরিক্ত পরীক্ষা দিতে হয়।
এছাড়া, সরকারি কলেজগুলোতে ভর্তির জন্য কিছু সুনির্দিষ্ট নিয়ম এবং পয়েন্ট ভিত্তিক কোটা থাকে। এটি বিশেষ করে জেলার কলেজগুলোতে আরও সহজ করে তোলে।
দেশের অন্যান্য স্থানীয় কলেজগুলোতে তুলনামূলক কম পয়েন্ট দিয়ে ভর্তি হওয়া যায়। এই কলেজগুলোতে সাধারণত ৩.৫০ থেকে ৪.৫০ এর মধ্যে জিপিএ প্রয়োজন হয়। কিছু কলেজে নির্দিষ্ট বিষয়ে ভর্তি হওয়ার জন্য নির্দিষ্ট পয়েন্টের চাহিদা থাকতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, বিজ্ঞান শাখায় ভর্তি হতে হলে কিছু কলেজে জিপিএ ৪.০০ এর বেশি থাকতে হবে, যেখানে মানবিক বা ব্যবসা শিক্ষায় কম পয়েন্টেও ভর্তি হওয়া যায়।
কোন কলেজে কত পয়েন্ট লাগবে এটি নির্ভর করে সেই কলেজের খ্যাতি, পড়াশোনার মান, এবং চাহিদার ওপর। যেমন ঢাকার বাইরের অনেক কলেজে কম পয়েন্টে ভর্তি হওয়া সম্ভব, তবে বড় শহরের কলেজগুলোতে পয়েন্টের চাহিদা বেশি থাকে।
১. আবেদন প্রক্রিয়া
ভর্তি প্রক্রিয়ার প্রথম ধাপ হলো আবেদন করা। শিক্ষার্থীরা সাধারণত অনলাইনের মাধ্যমে ভর্তি আবেদন করে থাকে। প্রতিটি কলেজের নিজস্ব আবেদন প্রক্রিয়া থাকে, এবং এই আবেদন প্রক্রিয়ায় শিক্ষার্থীদের এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল জমা দিতে হয়।
২. ভর্তি পরীক্ষা
কিছু শীর্ষস্থানীয় কলেজে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যদিও অধিকাংশ কলেজে পয়েন্টের ভিত্তিতে সরাসরি ভর্তি হয়ে থাকে, তবে কিছু প্রতিষ্ঠানে প্রতিযোগিতা বেশি হওয়ার কারণে ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বাছাই করা হয়।
৩. মেধা তালিকা প্রকাশ
আবেদন প্রক্রিয়া শেষে, প্রতিটি কলেজ তাদের নিজস্ব মেধা তালিকা প্রকাশ করে। মেধা তালিকার ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের ভর্তি নেওয়া হয়। যেসব শিক্ষার্থীরা মেধা তালিকায় স্থান পান, তাদের নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হয়।
কলেজে ভর্তি প্রক্রিয়া এবং পয়েন্ট নির্ধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। কোন কলেজে কত পয়েন্ট লাগবে তা নির্ভর করে সেই কলেজের খ্যাতি এবং প্রতিযোগিতার ওপর। শিক্ষার্থীদের উচিত নিজের জিপিএ অনুযায়ী সঠিক কলেজ বাছাই করা এবং ভর্তি প্রক্রিয়ার প্রতিটি ধাপ সতর্কতার সঙ্গে সম্পন্ন করা।