আল্লাহর পরিচয়

আল-কুরআন ও আল-হাদীসে আল্লাহ রাব্বুল ‘আলামীনের সত্তা, গুণাবলী, কুদরাত ও অধিকার সম্পর্কে অনেক কথা ছড়িয়ে আছে। সেই কথাগুলোর নিরিখে অতি সংক্ষেপে মহান আল্লাহর পরিচয় তুলে ধরার উদ্দেশ্যে আমার এই ক্ষুদ্র প্রয়াস।

আল্লাহর পরিচয়

আল্লাহ এক, অদ্বিতীয়।

আল্লাহর আব্বা নেই, আম্মা নেই।

আল-কুরআনের আলোকে ইসলামী আন্দোলনের সফলতা

পবিত্র কুরআন সর্বজয়ী সার্বজনিন সর্বশক্তিমান মহান আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে তাঁর বান্দাদের জন্য “চূড়ান্ত বার্তা”। মানবজাতির, মুক্তি, কল্যাণ, শান্তি ও সু-পথ প্রাপ্তির জন্য সর্বশেষ পথ নির্দেশিত চিরন্তন হেদায়াতের একমাত্র মহাগ্রন্থ। এর ভাষা ও বক্তব্য শাশ্বত ও চিরঞ্জীব। বিশ্ববাসীর কাছে আল-কুরআন এক জীবন্ত মুজেজা।

মানব সমাজের সাফল্য কিংবা ব্যর্থতা শুধুমাত্র আল-কুরআনে উল্লেখিত আদ্বদীন অর্থাৎ ইসলাম অনুসরণ অনুকরণ কিংবা প্রত্যাখানের মধ্যেই নিহিত। মহান আল্লাহ তায়ালা মানুষের জন্য পবিত্র আল-কুরআনকে সহজ ভাষায় নাযিল করেছেন।

মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন

মাহে রমজান, তাকওয়া ও ইসলামী আন্দোলন

রমজান মাস কুরআন নাজিলের মাস। রমজান মাস কুরআন বিজয়েরও মাস। ২য় হিজরীর ১৭ই রমজান বদর যুদ্ধ সংগঠিত হয়। সেই যুদ্ধে রসূলুল্লাহ সা. এর নেতৃত্বে ৩১৩ জন মর্দে মুজাহিদ সাহাবায়ে কেরাম রেদওয়ানুল্লাহি তায়ালা আজমাইন এক হাজারের অধিক কাফির বাহিনীকে পরাজিত করে দ্বীনের ঝান্ডাকে বুলন্দ করেন।

তাই এই পবিত্র রমজান মাসে কুরআনকে বিজয়ী করার স্বপড়ব নিয়ে ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের ব্যাপকভাবে জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহর অন্তর্ভূক্ত কাজ নিষ্ঠার সাথে পরিচালনা করতে হবে।

মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন

সফল জীবনের পরিচয়

আল্লাহ মানুষকে সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহ মানব-সত্তায় বহুবিধ চাহিদা জুড়ে দিয়েছেন। আবার, এই আল্লাহই মানুষের চাহিদা পূরণের জন্য যা যা প্রয়োজন সবই সৃষ্টি করেছেন। তদুপরি আল্লাহ মানুষকে তার চাহিদা পূরণে সম্পদ আহরণ, সম্পদ রূপান্তরিতকরণ এবং সম্পদ ভোগ-ব্যবহারের জন্য জ্ঞান-বুদ্ধি ও কর্ম-ক্ষমতা দান করেছেন। এই জ্ঞান-বুদ্ধি ও কর্ম-ক্ষমতা প্রয়োগ করেই মানুষ আল্লাহর অসংখ্য সৃষ্টির ওপর কর্তৃত্ব করে থাকে। মানুষের কোন কোন চাহিদা আপনা-আপনিই পূরণ হয়। কোন কোন চাহিদা মানুষ একক প্রচেষ্টায় পূরণ করতে পারে। কোন কোন চাহিদা পূরণের জন্য মানুষকে অপরাপর মানুষের সহযোগিতা নিতে হয়। প্রকৃতপক্ষে মানুষের নানাবিধ চাহিদা পূরণের জন্যই পরিবার, বিভিন্ন সামাজিক সংস্থা, আর্থিক সংস্থা এবং রাষ্ট্র-সংগঠন গড়ে ওঠে।

ইসলামী আন্দোলন; মৌলিক ধারণা, সঠিক কর্মপন্থা ও ভ্রান্তির অপনোদন

ইসলামী আন্দোলন সম্পর্কে পরিপূর্ণ বুঝ ও ধারণা না থাকার কারণে আস্থা ও উৎসাহ-উদ্দীপনার সাথে সঠিক পন্থায় এ আন্দোলন করা এবং এই পথে টিকে থাকা অনেকের পক্ষে সম্ভব হয় না। এই কাজের প্রতি প্রেরণা ও একাগ্রতা পেতে চাইলে ইসলামী আন্দোলনের সঠিক ধারণা, কর্মপন্থা ও সফলতার প্রশ্নে ভুল বুঝাবুঝি দূর হওয়া দরকার। এ লেখায় কুরআন হাদীসের আলোকে সে চেষ্টা করা হয়েছে। আমাদের উচিত বেশি বেশি কুরআন হাদীস অধ্যায়নের মাধ্যমে ইসলামী আন্দোলনের পথে এগিয়ে যাওয়া।

তায়েফের পথে আলোর পথিক

ভাবছেন আর ভাবছেন নবী মুহাম্মদ (স)। কী করবেন এখন?

মক্কার শত্রুদের আক্রমণ দিনে দিনে বাড়ছে। উত্তপ্ত আবহাওয়ার মক্কা নগরী বিষাক্ত। অশান্ত লু হাওয়া। আপাতত আর মক্কায় থাকা চলবে না। এখঅনে এখন ইসলাম প্রচার করা সম্ভব নয়।

তাহলে? কিছুক্ষণ ভেবে নিলেন নবী (স)। তারপর।– তারপর সুদূরের পথ তায়েফ। বহু- বহু- দূরের পথ। নবীজি (স) মক্কা থেকে সাময়িক বিদায় নিয়ে তায়েফের পথে রওয়ানা হলেন।

কালো পাহাড়ের আলো

হযরত বিলাল।

হাবশী ক্রীতদাস। গায়ের রং কুচকুচে কালো।

কিন্তু মানুষের বাইরের চেহারাটাই আসল চেহারা নয়। ভেতরটাই আসল। ভেতর অর্থাৎ হৃদয়টা যার ধবধরে পরিষ্কার সেই কেবল সুন্দর মানুষ।বিলাল কালো হলে কি হবে!

তাঁর হৃদয়টি ছিল চাঁদের মতো পরিষ্কার। জোছনার মতো সুন্দর। সূর্যের মতো উজ্জ্বল। আর তাঁর বুকে ছিল বজ্রের সাহস।

খাপ খোলা তলোয়ার

একবারেই অন্ধকার যুগ। পাপে আর পাপে ছেয়ে গেছে আরবের সমাজ।

মানুষের মধ্যে হানাহানি, যুদ্ধ, রক্তারক্তি লেগেই আছে।

মানুষের হেদায়েতের জন্যে আল্লাহ পাক নবীকে (স) পাঠিয়েছেন। তিনি মানুষকে আলোর পথে ডাকছেন। ডাকছেন মুক্তির পথে।

নবীর (স) ডাকে যারা সাড়া দিলেন, তাঁরা আলোর সন্ধান পেলেন। নবী (স) সাথে তাঁরাও ইসলাম প্রচার করেন।

কিন্তু গোপনে গোপনে। চুপে চুপে।

কামারশালার সাহসী পুরুষ

উম্মু আনমার দাস কেনা-বেচার ব্যবসা করে।

তার নিজের জন্যেও একটি দাসের প্রয়োজন। তাগড়া হৃষ্টপুষ্ট একটি দাস চাই তার জন্য।

সে নিজে বাজারে গেল। শত দাসের ভেতর একটি দাস তার খুব পছন্দ হলো। দাসটি যেমন জোয়ান তেমনি তাগড়া। উম্মু আনমার দাসটি কিনে নিয়ে এলো। দাসটির নাম- খাব্বাব। খাব্বাবকে তরবারি তৈরির কলা কৌশল শেখানোর জন্যে উম্মে আনমার তাকে মক্কার এক বিখ্যাত কর্মকারের কাছে পাঠিয়ে দিল।

খুব অল্প দিনের মধ্যেই খাব্বাব ভালো এবং উন্নতমানের তরবার বানানো শিখে গেলেন। দাস হলেও তিনি ছিলেন ছোটকাল থেকেই দারুণ মেধাবী। সেই সাথে ছিল তার সততা, নিষ্ঠা এবং সাহস।

এ সময়ে নবী (সা) মক্কায় গোপনে ইসলাম প্রচার করতেন। ইসলাম প্রচারের খবর পেয়ে যুবক খাব্বাব অল্পদিনের মধ্যেই চুপি চুপি নবীর (সা) কাছে গিয়ে ইসলাম গ্রহণ করলেন।

ইসলাম গ্রহণের পর থেকেই শুরু হলো খাব্বাবের জীবনের আর এক অধ্যায়।

আল্লাহর তরবারি

চারদিকে ইসলামের প্রচার কাজ চলছে। মক্কা এবং মদীনার লোকেরা জেনে গেছে পবিত্র ইসলাম এবং নবীর (সা) নাম।

দলে দলে মানুষ ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে পরম প্রশান্তির সাথে দ্বীনের পথে কাজ করছেন। কাজ করছেন তাঁরা নবীর (সা) কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে। একই সাথে।

খালিদ ইবনে ওয়ালিদ তখনো ইসলাম কবুল করেননি। তিনি ভাবলেন। ভাবলেন নির্জনে বসে।

গভীর রাত্রিতে। অনেক চিন্তা ভাবনা করে দেখলেন।

ভাবতে ভাবতে তিনি অস্থির হয়ে ওঠেন। পাপ এবং অন্যায়ের জন্যে তিনি ব্যথিত হলেন। ভাবলেন, এভাবে আর কতোদিন? কতোদিন আর এভাবে অন্যায় ও অসত্যের পথে চলবো?

খালিদের ভেতর সত্য বিবেক সহসা জেগে উঠলো। তিনি পাপের পথ থেকে, অন্ধকারের পথ থেকে ফিরে এলন।

নিঃসঙ্গ বেদুইন

গিফার গোত্রের এক ডানপিটে যুবক অসীম সাহসী। দুর্বার তার চালচলন। গোত্রের প্রায় সবাই খুন রাহাজানি আর ডাকাতি করে। নানা পাপাচারে তারা লিপ্ত।

সেটা ছিল জাহেলি যুগ।

গোত্রের অন্যদের সাথে যুবকও রাহাজানি আর ডাকাতিতে জড়িয়ে পড়লেন।

তার ছিল যেমন সাহস, তেমনি ছিল বুদ্ধির বহর। ফলে অল্প দিনের মধ্যেই তিনি বিখ্যাত ডাকাত হিসেবে পরিচিত হয়ে যান।

তার ভয়ে চারিদিক কম্পমান। সবার মুখে মুখে ফেরে তার নাম।

কি ভয়ঙ্কর দস্যি যুবক!

আল্লাহ যাকে কবুল করেন

মুসলমানদের কিবলা তখনও বায়তুম মাকদাস। কাবাঘর তখন কিবলা হয়নি মুসলমানদের জন্য।

সবাই বায়তুল মাকদাসের দিকে কিবলা করে নামায আদায় করেন।

দয়ার নবী মুহাম্মদ (সা)- ও।

কিন্তু একজন, একজন ব্যাক্তি কেবল বেঁকে বসলেন। না, সবাই বায়তুল মাকদাস কে কিবলা করলেও তিনি করবেন না।

নামায আদায় করবেন না সেদিকে ফিরে।

তাঁর কিবলা তিনি ঠিক করে নিলেন নিজেই, কা'বাঘর।

আশ্চর্যের ব্যাপার!

সাথীরে অবাক।

আলোর খোঁজে বহুদূর

গ্রামটির নাম 'জায়ান' ।

পারস্যের ইসফাহান অঞ্চলের একজন ধনাঢ্য পিতার ঘরে ধীরে ধীরে বেড়ে উঠে একটি শিশু ।

প্রকৃতির আলো-হাওয়ায় বাড়তে থাকে শিশুটি। বাড়তে বাড়তে হয়ে যায় নওজোয়ান।

রাজপুত্রের মত সুন্দর ফুটফুটে নওজোয়ান কে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসে তার পিতা ।

তিনি গ্রামের সর্দার । একমাত্র পুত্র তার নয়নের মণি ।কলিজার টুকরা । পিতা চান না পুত্রের অমঙ্গল । চান না কোন রকম বিপদ তাঁর ছেলেকে স্পর্শ করুক । এজন্য তিনি ছেলেক ঘরের ভেতর আবদ্ধ করে রাখেন ।

আলোর আবাবিল

মসজিদে জাবিয়া ।

একান্তে বসে কথা বলছেন আলোর পাখিরা ।

কথা বলছেন ইবন গানাম, আবু দারদা এবং উবাদা ইবন সামিত ।

তাঁরা কথা বলছেন 'আল্লাহর দীন' নিয়ে । ইসলাম নিয়ে । কথা বলছেন প্রাণপ্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সা)-কে নিয়ে । আরও কত প্রসঙ্গে !

তাঁরা কথা বলছেন আর একে অপরের দিকে মহব্বতের দৃষ্টিতে তাকাচ্ছেন ।