গ্র্যাজুয়েট অফিস থেকে গতকাল একটা মেইল পেলাম, গ্র্যাজুয়েট অ্যাডমিশনের জন্য অনলাইন অ্যাপ্লিকেশন ওপেন করা হয়েছে।যারা চান মাস্টার্স কিংবা পিএইচডির জন্য অ্যাপ্লাই করতে পারেন।অ্যাপলিকেশান ডেডলাইন বছরে ২ বার, মানে বছরে দুবার আবেদন আহবান করা হয়, একবার জানুয়ারির দিকে আরেকবার আগস্টের আশাপাশে। অনার্স/বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং লেভেলে বাইরের দেশ থেকে আবেদন করার সুযোগ নেই।যাদের অলরেডি সৌদি আরবের রেসিডেন্ট পারমিট/ইকামা আছে, শুধুমাত্র তারাই অনার্স/বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং লেভেলে আবেদন করার সুযোগ পাবেন। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্যও একই কথা, শুধুমাত্র ইসলামিক বা ভাষা সম্পর্কিত বিষয়ে অনার্স লেভেলে বাইরের দেশগুলো থেকে আবেদন আহবান করা হয়।
যাই হোক কেএফইউপিএমে ফেরত আসি। এখানে ইসলামী বিষয়ে পড়ার সুযোগ নেই, শুধু প্রকৌশল বিদ্যার জন্য এই ইউনিভার্সিটি। একটা ওভার ভিউ এখানে পাবেনঃ দেখে নিন এটা। এখন কথা হল, আসতে চাইলেই তো আর হয়না, জানতে হবে অনেক কিছু কারণ সব কিছু সবার জন্য না আর সবার জন্য সব কিছু না। তাহলে জেনে রাখুন কিছু ফ্যাক্ট।
আসতে চান? তাহলে শুনেনঃ
১।কিং ফাহাদ প্রথমত পুরোপুরি রিসার্চ ওরিয়েন্টেড ইঞ্জিনিয়ারিং, সৌদির অন্যান্য ইউনিভার্সিটির মত ইসলাম বিষয়ে পড়াশোনার জন্য এই ইউনিভার্সিটি না।অ্যাডমিশন পেতে আরবী জানা লাগবেনা, কিন্তু দুইটা টেস্ট স্কোর লাগবে; জিআরই আর সাথে টোফেল বা আইইএলটিএস।এই দুটো টেস্ট স্কোর ছাড়াই আবেদন করা যায় তবে একটি নির্দিষ্ট সময়ের ভেতর টেস্টগুলো শেষ করে টেস্ট স্কোর ইউনিভার্সিটিতে পাঠিয়ে দিতে হবে। সপ্তম সেমিস্টার পর্যন্ত রেজাল্টের ট্রান্সক্রিপ্ট দিয়েও আবেদন করা যাবে। তাতে অনেক সময় বেঁচে যাবে। তবে সবচেয়ে চেয়ে বড় কথা হল, অ্যাপ্লাই করে অ্যাডমিশন পাবার পর ভিসা পেয়ে এখানে আসতে ন্যুনতম ১ বছর থেকে ২ বছর লেগে যায়, আমি অ্যাপ্লাই করেছিলাম ২০১৪'র আগস্টে আর আসলাম এই ২০১৬'র জানুয়ারিতে মানে পাক্কা দেড় বছর।
২। এখানে এখন আর রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্ট (মাস্টার্সে) কিংবা লেকচারার বি (পিএইচডিতে) ভিসায় তেমন কেউ আসতে পারেনা, আসলে ফুল টাইম স্টুডেন্ট ভিসায় আসতে হয়। অর্থাৎ পড়াশোনা শেষ করে দেশে ফেরত যেতে হবে, এরপরে চাকরি করার সুযোগ নাই বললেও চলে। ওয়ার্কিং ভিসা এখন বাংলাদেশীদের জন্য ইস্যু করার ব্যাপারটা আসলে খুব সহজ না।আর ভিসা থাকলে আবার চাকরির অভাব নাই, কিন্তু সেটারই আকাল।
বিঃদ্রঃ এই নোটটা যখন লিখা হয়েছে তখন এরকম অবস্থাই ছিল, সেই দুর্গতি ঘুছল বলে, এবার ইলিক্ট্রিক্যালে দুইজন ভাই পিএইচডি(লেকচারার বি) তে জয়েন করেছে।আরেক ভাই মাস্টার্স কমপ্লিট করে সৌদিরই একটা ইউনিভার্সিটিতে লেকচারার হিসেবে ভিসা পেয়ে গেছেন বলে জানি। তাই হতাশ হওয়া বন্ধ। সম্ভবত শেখ হাসিনা ম্যাডামের রিসেন্ট সঊদী আরব সফরের পরই অবস্থা কিছুটা উন্নতির দিকে (সেপ্টেম্বর ২১, ২০১৬)।
৩। অনেক কোর্সের সাথেই টার্ম প্রজেক্ট থাকে এবং টার্ম প্রজেক্ট, কুইজ, ফাইনাল কম্প্রিহেন্সিভ এক্সাম কোনটা ছেড়ে কোনটা করে জমা দিবেন সেটা নিয়ে জীবন নষ্ট-মাথা নষ্ট অবস্থা।মোট আটটা কোর্সে ৩ ক্রেডিট করে ২৪ ক্রেডিট কোর্স ওয়ার্ক আর ৬ ক্রেডিট থিসিস শেষ করতে হবে।আসলে বাংলাদেশের মত ফাঁকিবাজি করে পড়াশোনা বিশ্বের আর কোথাও মনে হয় হয়না, যেসব পোলাপান আমেরিকায় গেসে ওদেরও তো হোমওয়ার্ক, এসাইন্মেন্ট, প্রোগ্রামিং নিয়ে যথেষ্ট নাকানি চুবানি খেতে হয় যদিও কোর্স ওয়ার্কটা ইউরোপের তুলনায় সহজ।ইউরোপে গেলে তো ফেল করে করে শিখতে হয়, একই কোর্স কয়েকবার নিয়ে পাস করতে হয়।
৪।প্রত্যেক সেমিস্টারে সিজিপিএ ন্যুনতম ৩,০০ থাকতে হবে মানে 'বি' ! এখানে 'বি' মানে আমাদের দেশের 'বি' না। কোন কোর্সে আপনি ১০০ তে ৮০ পেয়েও বি পেতে পারেন যদি ক্লাসের অন্যদের রেজাল্ট এর চেয়েও অনেক ভালো হয়। প্রবাবিলিটি, নরমাল ডীস্ট্রিবিইউশান কার্ভ হাবিজাবি দিয়ে প্রফেসর সেটা ক্যাল্কুলেট করবে। আর ফেল করা যাবেনা, ফেল করলে স্কলারশিপটা ক্যান্সেল করে , একটা একজিট ভিসা দিয়ে ডিগ্রি ছাড়া দেশে ফেরত পাঠায় দিবে।
৪। থিসিস সুপারভাইজার ভালো না হইলে মেধা-জীবন দুইটাই নষ্ট, সেটা ইউরোপ-আমেরিকায় হোক আর এখানে হোক সবখানেই সত্য কথা।
৫। মাস্টার্স শেষ করতে ৪ সেমিস্টার লাগার কথা থাকলেও কিছু ব্যতিক্রম বাদে অনেকেরই ৫ সেমিস্টার লেগে যায়, অনেক ক্ষেত্রে ৬! বাট এটা আপনার ডিপার্টমেন্ট আর সুপারভাইজারের উপর নির্ভরশীল! আর পিএইচডির ক্ষেত্রে ঠিক নাই কবে আপনাকে ছাড়ে! আর এটা তো সবজায়গায়ই এরকমই।
৬। নিজের গাড়ি না থাকলে ঘুরাঘুরির চিন্তা বাদ। এখানে সবার গাড়ি আছে তাই পাবলিক ট্রান্সপোর্ট বলতে তেমন কিচ্ছু নাই।তবে অ্যালামনাই আর বড় ভাইদের অনেকরই গাড়ি আছে, ইচ্ছেমত জ্বালাতন করা যায়।
৭। শীতের দিনে গরম পানি কিন্তু গরমের সময়ে চরম গরম পানি ! সাথে ১০০% নিরামষ হল লাইফ, সাব-কন্টিনেন্টের মানুষের মত হই-হুল্লোড় চিল্লা-ফাল্লা, মৌজ মাস্তি আসলে মনে হয় অন্য কেউ করেনা তাই বাকিদের কাছে এটা মোটামুটি স্বাভাবিক।
৮। কোন কারণে কোরবানি ঈদের সময়েও ক্যাম্পাসে থাকতে হলে মিনিমাম ১৫ দিন মানবেতর জীবন কাটাতে হবে, রেস্টুরেন্ট, ক্যাফেটেরিয়া, ডিপারটমেন্টাল স্টোর, বাস সব বন্ধ। পানি, খানাদানা পেতে কিন্তু বাইরে যেতে হবে আর গাড়ি না থাকলে বাতাস খেয়ে ১৫ দিন কাটানো ছাড়া গতি নাই।কিন্তু অ্যালামনাই আর বাংলাদেশি স্যাররা কোরবানির ঈদের গোশত পাঠায় দিলে জম্পেশ খানাদানা নিশ্চিত ইনশাআল্লাহ্, শুধু রাইস কুকারে একটু রান্নাবান্না সেরে নিতে হবে।
৯। ইউরোপ-আমেরিকায় যারা একবার একাডেমিক লাইফের স্বাদ পেয়েছেন তারা জানেন যে ওরা কি পরিমাণ প্রফেশানালি আর ত্বরিত গতিতে কাজ করে! এখানে কাজ-কর্ম আগায় অনেকটা শম্বুক গতিতে, বাংলাদেশের মত ঘুষ লাগবেনা কিন্তু সিস্টেম লস অনেক বেশি, একই কাজের জন্য ৫-৬ বার ঘুরাঘুরি করতে হবে। ‘ক’ ব্যক্তি ‘খ’র কাছে পাঠাবে, ‘খ’ আবার ‘ক’র কাছে পাঠাবে এভাবে কয়েকবার হবার পর ‘গ’র কাছে যাবেন! তারপর ‘গ’ আবার ক-খ’র কাছে পাঠাবে! তবে এসব কাজকর্ম সেমিস্টারের প্রথমে আর শেষে একটু আট্টু থাকে, তাই চিন্তার তেমন কোনই কারণ নাই।
১০। আমেরিকার মত এখানে কোন প্রফেসরকে মেইল করতে হবেনা, অ্যাডমিশন মানেই এখানে আসতে পারলে স্কলারশিপ পুরোপুরি কনফার্ম। কিন্তু প্রফেসর না, আপনার অ্যাডমিশন পুরোপুরি ইউনিভার্সিটির হাতে; আপনার স্কলারশিপ গ্র্যান্ট পুরোপুরি মিনিস্ট্রি অব হায়ার এডুকেশনের হাতে আর ভিসা প্রসিডিউর মিনিস্ট্রি অব ইন্টেরিয়রের হাতে! যে যার যার মত ১-২ বছর স্বাধীনভাবে কাজ করবে আর আপনার কিচ্ছু বলার নাই! এটাই সবচেয়ে বড় পরীক্ষা, দোস্তরা আম্রিকা-য়ুরুপে যাবে দাঁত কেলায়া ছবি আপ্লোড দিবে বাসায় এসব বলে আবার খোঁটা দিবে কিন্তু কিচ্ছু করার থাকবেনা ধৈর্য ধরা ছাড়া।
১। হজ্জ আর উমরাহ করার সুবিধা। আমি এখানে এসেই বড় ভাইদের সাথে উমরাহ করতে চলে গেসি। মক্কা-মদিনায় সপ্তাহখানেক কাটিয়ে ভার্সিটিতে ফেরত আসছি।সামনের সেমিস্টারে ফেল না করলে মানে ভার্সিটিতে থাকতে পারলে হজ্জ এর জন্য আবেদন করা যাবে ইনশাআল্লাহ।
এখানকার পোলাপানের ঘুরাঘুরির তেমন কোন জায়গা-সময় কিচ্ছু নাই, এরা ফাঁকফোঁকর আর ছুটি পাইলেই উমরাহ করতে চলে যায়।আর এখানে পড়তে আসছে কিন্তু হজ্জ না করে দেশে ফেরত গেসে এরকম কোন হতভাগার কথা শুনতে পাই নাই এখন পর্যন্ত।
২। পুরোপুরি ছেলেদের ক্যাম্পাস, কো-এডুকেশন মুক্ত ক্যাম্পাস।
৩। থাকার ব্যবস্থা ফ্রি। স্টুডেন্ট হল আছে। তোশক, কম্বল, বালিশ, বালিশ-বিছানার চাদর , মাল্টিপ্লাগ, ইলেক্ট্রিক কেটলি সব ওরা দিবে। রুমে টেবিল আলমারি থেকে শুরু করে এয়ার কন্ডিশনার- হিটার সবই আছে। হাই-স্পিড ইন্টারনেট কানেকশান তো আছেই। আর রুমের ভেতর টেলিফোন কানেকশানও আছে, এইটাও পুরা ফ্রি! কোন বিল দেয়ার ঝামেলা নাই।
৪।সব ধরনের খেলাধুলা করতে পারবেন; ক্রিকেট, ফুটবল, ব্যাডমিন্টন, স্কোয়াশ, লন টেনিস, টেবিল টেনিস যা যা আছে সব খেলতে পারবেন, ইনডোর-আউটডোর দুই ধরনের স্টেডিয়ামই আছে। জিম আছে, কোন ইকুইপমেন্টের কোন অভাব নাই। আর ফ্রিতে সুইমিংপুলে সাঁতার কাটতে পারবেন নিয়মিত।
৫। সব হাই প্রফাইল জার্নাল-সফটওয়্যার অ্যাক্সেস করতে পারবেন।
৬। খাওয়া খরচ নিজের, সাবসিডাইজড ! তবে ফুলটাইম স্টুডেন্টদের ৮৯০ রিয়াল হাত খরচা দেয় ওইটা যথেষ্ট।
৭। প্রত্যেকটা কোর্সের অরিজিনাল টেক্সট-বুক দেয়া হবে সেমিস্টারের শুরুতে, আর আপনার দেশ থেকে আসা-যাওয়ার প্লেন ভাড়া ওরা দিবে, আর এম্নিতে প্রতি বছর দেশে আসা যাওয়া করার জন্য একটা রাউন্ড এয়ার টিকেট পাবেন।
৮। এখানে সবাই মোটামুটি সলাত পড়ে। চাইলে তাজউইদও শিখতে পারেন। কুরআন মুখস্থ করতে পারেন, মসজিদ আছে অনেকগুলো, সবগুলোতেই তাজইউদ হিফয বিভিন্ন প্রোগ্রাম চলতে থাকে।প্রায় সব সময়ই সলতের সময়কে কেন্দ্র করে ভার্সিটির ক্লাস, ব্রেক, শিডিউল ঠিক করা হয়। জামাতে সলাত বাদ যাওয়াটা খুব টাফ আলহামদুলিল্লাহ!অবশ্য কেউ জোর করে বাদ হয়ে যেতে চাইলে কারো কিছু করার নাই।
৯। গাড়ী নাই বলে ভয় পাবেন না ভাই, এখানে কোন ট্যাক্স দেয়ার ঝামেলা নাই তাই ইলেক্ট্রনিক্স গাড়ী এইসবের দাম অনেক সস্তা। সেই দিন একভাইয়ের সেকেন্ড হ্যান্ড একটা একটা লেক্সাসে চড়লাম দাম মাত্র ৩০০০০ রিয়াল! কোটি টাকার গাড়ি মাত্র ৬ লাখ টাকা। আর অন্যান্য নরমাল গাড়ীর দাম আরও অনেক কম।
১০। হেলথ ইন্স্যুরেন্স আর হাবিজাবি সিক্রেট কস্ট দিতে দিতে ইউরোপ আম্রিকার মত ফতুর হয়ে যাওয়া লাগবেনা, হসপিটাল আছে মার্কা-মারা , কোন মেশিনের অভাব নাই - সব পরীক্ষা এখানেই করাতে পারবেন। যদ্দুর জানি ডেন্টিস্টের কাছে গিয়ে স্কেলিংও করাতে পারবেন তবে রুট ক্যানাল লাগলে ওইটা বাইরে থেকে করাতে হবে।
১১। মাত’আম মানে ক্যাফেটেরিয়ায় খাওয়ার কোন অভাব নাই। মুরগি, গরু , কাবাব, রুটি সব কিছু ৫-৬ রকমের; জুস, দুধ, ফিন্নি, লাবাং, কেক আপেল কলা কমলা যত ডেজারট দরকার সব আছে বাইচ্ছা নিয়া নিবেন- খরচ চার রিয়াল। দরকার পড়লে আরো নিবেন সাথে এক্সট্রা বিলটাও দিয়ে আসবেন!
১২। আরেকটা বিশাল কথা বলতে ভুলে গেসি, পয়সা পাত্তি বলে কথা! স্কলারশিপের ৮৯০ রিয়াল তো মাসে মাসে পাবেনই তাছাড়াও ক্যাম্পাসে প্রোজেক্ট আর পার্ট টাইম কাজের সুযোগ আছে ভালোই, সেটার একান্তই আপনার নিজস্ব উপার্জন, যেমন ধরুন আন্ডারগ্র্যাডের পোলাপানের গ্রেডিং করে এক হাজার রিয়াল করে পাবেন মাসে, এটা অবশ্য ঘন্টা হিসেব করে। যত ঘন্টা তত বেশি পাত্তি, তবে একটা ম্যাক্সিমাম এলাউড লিমিট আছে।
১৩। ফুলটাইম মাস্টার্স স্টুডেন্টদের সুবিধা কেমন দেখতে হলে ক্লিক করুন এখানে।
অনেক কিছুই এখনো ওইভাবে জানা হয়ে উঠেনাই, তবে রিসার্চ ফ্যাসিলিটি-ইকুইপমেন্টের কোন অভাব মনে হয় না আছে ! আর গ্র্যাজুয়েটদের রিসার্চ গ্র্যান্টও অফার করা হয় যদি ভালো পটেনশিয়াল থাকে।আপনার পটেনশিয়াল আর কাজ করার ইচ্ছা থাকলে এখানে সুযোগ-সুবিধার কোন অভাব নাই।রিসার্চের মান ভালোই যদ্দুর জানি, এ বছর ওরা ৯০০'র বেশি ইন্টারন্যাশ্নাল জার্নাল-পেপার পাবলিশ করেছে, আর সারাবিশ্বের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ২০১৪ সালে পেটেন্টের সংখ্যা বিবেচনায় হয়েছে ২২তম আর ২০১৫ তে হল ১৩ তম তবে স্টুডেন্টদের উপর দিয়ে এই জন্য যা যায় সে জন্য তারা এইসব রিসার্চ কিংবা পেপারের কথা শুনলেই একটু তেঁতে উঠে বলা যায়।স্টুডেন্ট প্রজেক্টে কাজ করে কিন্তু প্রফেসর তাদেরকে তেমন কোন স্যালারি দেননি এরকম অভিযোগও আছে আবার ঠিকমত পেইড করছেন এরকমও অনেক আছে। অন্যান্য দেশেও এরকম যে হয়না না তা না, এই জায়গাও এর ব্যতিক্রম কিছু নাহ। এজন্য আপনার কোর্স এবং থিসিস সুপারভাইজার সিলেকশানটা খুব জরুরি।
নিজের প্রোজেক্ট শেষ করতে সুপারভাইজারের ফাও খাটিয়ে নিতে চাওয়া কিংবা থিসিস প্রলম্বিত করার ব্যাপারটা আসলেই খুব পীড়াদায়ক, দেখা গেল আপনার থিসিস শেষ কিন্তু পেপার পাবলিশ না করলে আপনাকে ক্লিয়ারেন্স দিবেনা কিংবা আপনি পেপারও পাবলিশ করেছেন ভালো জার্নালে কিন্তু ভেতরে ভেতরে সে চায় তার প্রজেক্ট শেষ হওয়া পর্যন্ত আপনাকে রেখে দিতে, এজন্য ইচ্ছা করে নতুন নতুন কাজ ধরিয়ে দিবে! সময় চলে যাবে, অতচ ডিগ্রিটা যাবে আটকে।সব কোর্স শেষ করেছেন কিন্তু এরকম প্যাঁচে পড়ে ডিগ্রি না নিয়ে দেশে ফেরত চলে গেছেন এরকম উদাহরণও আছে। এটা আমার ইতিমধ্যে দেখা খারাপ অভিজ্ঞতার মধ্যে একটা। জানিয়ে দিলাম, যাতে পরে আগে কেন কিছু বলি নাই এই বলে আমাদের দোষ দিতে না পারেন। কি আর করা , জগতটা তো আর ফ্যান্টাসি না; ভালো খারাপ সবই আছে।সব কিছু খাপে খাপে মিলে গেলে আর ইনসাফ কড়ায়-গন্ডায় আদায় হলে তো এই দুনিয়া আর দুনিয়া থাকতোনা , জান্নাত হয়ে যেত।তবে এইখানে যা বললাম সেটা হচ্ছে সম্ভাব্য সবচেয়ে খারাপ অবস্থা, গড়পড়তায় এরকম কিছু তেমন হবেনা আশা করাই যায়।আমার মত ফ্যান্টাসিতে বসবাস করে পরে যাতে প্যাঁচ না দেখতে হয় সেজন্যই এসব বলা।
এখন ... সিদ্ধান্ত আপনার !
কি কি প্রোগ্রাম আছে, কিভাবে অ্যাপ্লাই করবেন সব প্রথম কমেন্টের লিঙ্কে পাবেন, আর ওদের ওয়েবসাইটটা ভালো মত পড়বেন, না পড়ে খুচরা প্রশ্ন করলে উপর দিয়ে কিছু বলব না, কিন্তু ভিতর ভিতর বিরক্ত হব, কি আর করা মুসলিম তিতা হইলেও সত্য কথা বলতে পরওয়া করেনা। আর জানার থাকলে ইনবক্সে মেসেজ না দিয়ে এই নোটের কমেন্টে বক্সেই সবগুলো প্রশ্ন জমা করে একবারে করবেন যাতে বাকি সবাইও জানতে পারে।
ব্যক্তিগতভাবে কিং ফাহদ ছাড়া সউদি আরবের বাকি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পর্কে আমার তেমন পরিষ্কার ধারণা নেই। কিন্তু অনেকেই জানতে চান বলে নিচের লিঙ্কগুলো দিলাম, এখান থেকে নিজেরা খেটে খুঁজে যা জানার দরকার জেনে নেবেন। আর একটা কথা এবং ব্যক্তিগত মতামত , ইসলাম বিষয়ে পড়ার জন্য শুধুমাত্র মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়কে ফোকাস করাটা ঠিক হবেনা কারণ ইমাম মুহাম্মদ ইবনে সউদ, উম্মুল কুরা, কিং আব্দুল আযিয কিংবা কিং সউদ এসব বিশ্ববিদ্যালয় কেউ কারো চেয়ে কোন অংশে পিছিয়ে নয়। আপনি ইসলাম সম্পর্কে জানতে-শিখতে আগ্রহী হলে পুরো সউদি আরবের আনাচে কানাচে এখন পর্যন্ত যথেষ্ট সুযোগ-সুবিধা আছে। আর সবার যে আলিমই হতে হবে ব্যাপারটা এমন না, আপনার পারিবারিক অবস্থা, শিক্ষা জীবনে ইতিমধ্যে ব্যয় হয়ে যাওয়া সময়, বিশ্ববিদ্যালয়ের আবেদনের পর অ্যাডমিশন পেলেও ভিসা পর্যন্ত অপেক্ষার লম্বা কয়েক বছর সময়, তার ওপর এখানে আসার পর সীমিত স্টাইপেন্ডে নিজের চিন্তা, বউ-বাচ্চা ফ্যামিলির চিন্তা, বিয়ে না করলে সেটার খরচের চিন্তা সব কিছু মিলিয়ে ঠিক করুন এখানে আসা ঠিক হবে কিনা। হুট করে এখনকার জীবন থেকে পালাতে কোন লক্ষ্য স্থির করলে বাস্তবতার ঠেলায় কিছুদিন পর সেটা মিলিয়ে যেতে সময় লাগবেনা। তাতে না হবে দ্বীন, না দুনিয়া।
দরকারী লিঙ্কসমূহঃ
[১] সৌদি আরবের সকল বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য নিয়ে বাংলাদেশী ভাইদের জন্য ওয়েবসাইটঃ স্টাডি ইন সউদি আরাবিয়া
[২] মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি সম্পর্কিত ওয়েবসাইটঃ Help for Bangladeshi students in Islamic University Madinah
কিছু ফেসবুক গ্রুপ ও পেজঃ
[৩] মদিনা বিশ্ববিদ্যলয় বাংলাদেশী স্টুডেন্ট ফোরামঃ Islamic university in madinah bangladeshi students forum See also,
How to Apply for the Islamic University Of Madinah
যেভাবে আবেদন করবেন মদিনা ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ে
[৪] সৌদি আরবে উচ্চ শিক্ষা সম্পর্কিত ফেসবুক গ্রুপঃ
সৌদি আরবে উচ্চ শিক্ষা (Higher Education in KSA)
[৫] কিং ফাহাদ ইউনিভার্সিটি অব পেট্রোলিয়াম এন্ড মিনারেলসে পড়াশোনা(শুধুমাত্র ইঞ্জিনিয়ারিং/ সায়েন্সে মাস্টার্স ও পিএইচডি/এমবিএঃ) ফেসবুক লিঙ্ক অথবা, ওয়েব লিঙ্ক
[৬] আরবী ভাষার উপর ডিপ্লোমা/স্কলারশিপঃ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই অফার দেয়া হয়ে থাকে, সেসব বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে চোখ রাখতে হবে। আর আবেদনের ক্ষেত্রে বয়সের সীমাবদ্ধতা আছে, অনেক ক্ষেত্রে সেটা ১৭-২৫ বছর হতে পারে। এ স্কলারশিপের খবর পাবার জন্য ভালো হয় [৪] নং এ দেয়া গ্রুপটাতে জয়েন করে সেখানে চোখ রাখা। নিচে কিং সউদ ও কিং আব্দুল আযিযের ভাষা বৃত্তির লিঙ্ক দেয়া হল।
কিং আবদুল আযিযের আরবী ভাষা শিক্ষার স্কলারশিপ
কিং সউদের অ্যারাবিক ল্যাংগুয়েজ ইন্সটিটিউটের স্কলারশিপ
Bibliography তে ম্যানুয়ালি রেফারেন্স অ্যাড করার মত ঝামেলা দ্বিতীয়টা আর নাই। কোনখানে পেজ নাম্বার, কোথায় সাল, কার আগে কোনটা বহুত প্যাঁচ ! আবার কিছু ইনফরমেশন ওয়েবসাইট থেকে Cite করা হয়, তখন সেটা কিভাবে অ্যাড করতে হয় সেটাও আমরা অনেকে জানিনা। তারুপর যদি নতুন করে কোন রেফারেন্স অ্যাড করা হয় তখন পুরো ডকুমেন্টের রেফারেন্স ম্যানুয়ালি চেঞ্জ করার কথা চিন্তা করলে ত পুরোই মাথা নষ্ট অবস্থা!
কি হবে যদি এই পুরো কাজটাই একটা সফটওয়্যারে করে ফেলা যায়? এবং পুরা ফ্রি তে? যাকে ডকুমেন্টটা চিনিয়ে দিলেই সে নাম-সাল-পেজসহ অটোমেটিক রেফারেন্স অ্যাড করে ফেলবে। আবার নতুন করে কিছু অ্যাড করলে নিজেই নাম্বারিং ঠিক করে ফেলবে।এই সফটওয়্যারের নাম হইলো Mendeley ! আমরা যদি এটা দিয়ে আমাদের ওয়ার্ড ফাইলে কোন জার্নাল/ওয়েব পেইজ Cite করতে চাই তাহলে নিচের কাজগুলা করা লাগবে।
.
প্রথম ধাপ ইন্সটলেশনঃ
মেন্ডেলে ডেস্কটপ ইন্সটল করতে হবে, প্লাস ওয়েব ব্রাউজারে যেমন ক্রোমে এবং ওয়ার্ড ফাইলে মেন্ডেলে অ্যাডনটা অ্যাড করে নিতে হবে। ৩ টা টোটাল ইন্সটলেশন সম্ভবত !
দ্বিতীয় ধাপ মেন্ডেলের ঘিলুতে ফাইল/পেইজটা লোড করাঃ
মেন্ডেলে কে ত বুঝাতে হবে যে এই ফাইলটা অ্যাড করতে হবে, তবেই না সে Cite করতে পারবে। এই ইনপুটটা মেন্ডেলের ঘিলুতে ২ ভাবে দেয়া যায়।
এক, ওয়েব পেজ থেকে সরাসরি ইম্পোর্ট করে, কোন একটা জার্নালের ভেতর ঢুকলেই সেখানে গুগল ক্রোমের উপরে ডানদিকে অ্যাডনে ক্লিক করলে ডকুমেন্টটা মেন্ডেলে পেয়ে যাবে।
দুই, যেহেতু ওপেন অ্যাক্সেস জার্নাল ছাড়া এলসভিয়ার বা স্প্রিঞ্জার এর অনেক জার্নাল এর অ্যাক্সেস আমাদের নাও থাকতে পারে আমরা বেশির ভাগ সময়ই পাইরেসি করে নামানো জার্নাল পিডিএফটা মেন্ডেলে ডেস্কটপে অ্যাড করে দিতে পারি। মেন্ডেলের মধ্যে ফাইল ফোল্ডার সব অ্যাড করা যায়। ফাইলের নাম বের করা লাগবেনা, সেটা মেন্ডেলে অটোমেটিক বের করে নেবে।
কোন ওয়েব পেইজ ইউজ করলে সেই ওয়েবপেইজ খুলে ক্রোমের মেন্ডেলে আইকনে ক্লিক করে সেটা ইউজ করতে হবে।
শেষ ধাপ হল ওয়ার্ডে সাইট করাঃ
ওয়ার্ডে মেন্ডেলের অ্যাডন ইন্সটল করতে হবে কিন্তু, তারপর ওয়ার্ডের রেফারেন্স ট্যাবে ক্লিক করলেই সেখানে Open Mendeley Desktop বা Insert Citation এরকম অপশন আসবে। এরপর সেখানে থেকে মেন্ডেলেতে "Cite" ক্লিক করে দেখিয়ে দিলেই হবে যে তোমার ঘিলুতে থাকা এই ফাইলটা অ্যাড করে ফেলো ! বাকি কাজ সব মেন্ডেল করে নিবে, ওয়েব লিঙ্ক হলে কবে অ্যাক্সেস করেছে সেটাও সে নিজে নিজে করে নিবে।
আর সব কাজ করার পর রেফারেন্স ট্যাবের Insert Bibliography তে ক্লিক করার পরই সবগুলো রেফারেন্স ভিজিবল হবে, এর আগে না!
Disclaimer: আইডিয়া শেয়ার করা পর্যন্তই আমার দায়িত্ব ! খেটেখুটে জিনিসটা অ্যাক্টিভেট করাটা ব্যক্তির নিজের দায়িত্ব, সব কিছু বলে দেয়াটা হেল্প করা না, মানুষকে খোঁড়া করে দেয়া আসলে। সো, হেল্প ইউরসেলফ আফটার দিস !! আর হ্যাঁ, শুরুর জন্য এই ভিডিওটা দেখা যেতে পারেঃ Mendeley
পরিশেষে, "আল্লাহর কাছে এমন উপকারী জ্ঞান চাই যেটা আমার কাজে লাগে, যে জ্ঞান কাজে লাগবেনা সেই জিনিসে সময় নষ্ট হওয়া থেকে রক্ষা চাই" - এই দুয়া করে নিজের পোষ্টের ইতি টানছি। ধন্যবাদ এইসব বেরস জিনিসপাতি কষ্ট করে পড়ার জন্য।
Written before 2019 in a Kuet Mechanical Forum
একটা কাহিনী দিয়ে শুরু করি, ফোর্থ ইয়ারের শুরুতে ব্যাপক উৎসাহে থিসিসের টপিক খুজতেসি। আসলে আমরা যেটা করি সেটা সিনিয়র ডিজাইন প্রজেক্ট বলা যায়, থিসিস না! ছোটখাট প্রজেক্টকে ত পাত্তাই দিলাম না। খুঁজে বের করলাম - গরম ফুয়েল প্লেনের ডানার ভেতর দিয়ে মুভ করায়ে ডানার বরফ গলায় ফেলব। প্লেনের ডানায় বরফ জমলে সেটার অ্যারোফয়েল শেপ নষ্ট হয়ে আর উড়তে পারেনা, এ পর্যন্ত বহু দুর্ঘটনা হইসে এজন্য ! Deicing করতে হয় গরম ফুয়েল সার্কুলেশন করে, ভাবলাম পাইসি, এটাই করুম। কিন্তু পরে দেখি প্রফেসর ডঃ আরিফ স্যার (সিনিয়র) বললেন, ব্যাচেলরে এত কঠিন জিনিস না নেয়াই ভালো। এরপরে খুঁজে বের করলাম টারবাইনের ব্লেড (Rotating) আর ভেন (যেটা ব্লেডের মত কিন্তু static, বাতাসের ফ্লো প্যাটার্ণকে কন্ট্রোল করে), দুইটার ফ্লুয়িড আর হিট ট্রান্সফার ক্যারেক্টার নিয়ে থিসিস করবো । এটাও ব্যাপক বড়, আরিফ স্যার আবার বললেন বড় হয়ে যাবে, কিন্তু কে শুনে কার কথা।
আমাদের স্বপ্নীল ক্লাস সিক্সে A brief history of time পড়ে নাকি সব বুঝে ফেলসিল, ইন্টারের পরে পড়ে নাকি দেখে কিছু বুঝতেসেনা। মুর্খ থাকার সময় যা হয় আরকি ! BTW, স্বপ্নীল কিন্তু আমাদের ব্যাচের সেরা জিনিয়াস! যাই হোক একটু ঘেঁটে দেখার পর দেখা গেল, টারবাইন ব্লেড ত একটা রোটাটিং এলেমেন্ট, এটার সিমুলেশন করতে ত বারোটা বেজে যাবে ! পরে থিসিস টাইটেল ফাইনালাইজ করার দিন সকালে আরিফ স্যারকে কল করে বললাম, থাক স্যার শুধু ভেন নিয়েই কাজ করি ! স্যার ওই পার্টটা বাদ দিয়ে বাকিটায় সাইন করে ফাইনাল করে দিসিলো ! আল্লাহ স্যারকে রহম করুক, থিসিস শেষ হয়ার আগ পর্যন্ত স্যারকে এভাবে প্যারা দিসি !
আসলে বুঝাইতে চাইলাম, আমাদের যে থিসিসে বিশাল হাতিঘোড়া মেরে ফেলতে হবে ব্যাপারটা এমন না, প্লাস একটা রোবট বা আর্টিফিশিয়ালি ইন্টেলিজেন্ট গাড়ি ঘটঘট করে দৌড়াইতেসে এগুলাই একমাত্র রিসার্চ না। খুব সিম্পল জিনিস নিয়েও ভালো কাজ করা যায়। সবার সব জায়গায় ইন্টারেস্টও থাকবেনা, আমার যেমন রোবটিক্সে নাই :P
(ইন্ট্রো শেষ হইলো মনে হয় এতক্ষণে, ঠিক সিউর নাহ !)
যাই হোক, এক্সপেরিমেন্টাল থিসিসের প্যারা থেকে বাঁচার জন্য আমাদের ০৮ ব্যাচে অনেকেই সিমুলেশন বেসড থিসিস চুজ করেছিল যাতে 'Those who must not be named' প্রফেসরদের এড়িয়ে যাওয়া যায়। আমাদের সময়ে আমরা Autodesk Simulation CFD'র স্টুডেন্ট লাইসেন্স দিয়ে আরামসেই সেই চক্রান্ত সফল করেছিলাম। যদিও সিএফডির অনেক কিছুই তেমন বুঝতাম না, রংবেরঙের প্রোফাইল আসলেই বিরাট ব্যাপার তখন।
ফয়সাল রিয়াদ ভাই অনেক আগেই পোস্টটা দিতে বলেছিল কিন্তু নিজের থিসিসের ঝামেলা শেষ হয়ার আগে কিছু লিখতে ইচ্ছা করছিল না। যাই হোক আজকে যেজন্য এই পোস্টটা দিচ্ছি সেটা হল, তোমাদের EES (Engineering Equation Solver) নামের একটা সফটওয়্যার নিয়ে জানানোর জন্য যেটা ইউজ করতে খুবই হাল্কা লেভেলের প্রোগ্রামিং জানলেই হবে কিন্তু হাই ইম্প্যাক্টের কাজ করা যাবে আরামসে। হাল্কা লেভেল মানে ফর লুপ মারার কন্সেপ্ট ক্লিয়ার থাকলেই এনাফ।
তোমরা আরামসে এই সফটওয়্যার দিয়ে যেকোন মেকানিক্যাল সিস্টেম ডেভেলপ করে ফেলতে পারবা ! জাস্ট ঠিকঠাক মত ইকুয়েশনগুলা বসাতে হবে। ম্যাটেরিয়াল বা ফ্লুইডের সব থার্মোডাইনামিক প্রপার্টি বিল্ট ইন ভেতরে পাবা। থিসিসে এই সফটওয়্যারটা ইউজ করতে পারো আসলেই। আমাদের ভার্সিটির মেকানিক্যাল ডিপার্ট্মেন্টে এই সফটওয়ার ব্যাপক ইউজ হয়, টার্ম প্রজেক্ট, থিসিস থেকে শুরু করে জার্নালে - সবজায়গায় ব্যাপক ইউজ হয় এটার।
ANSYS Fluent এর মত মাইক্রো লেভেলে মানে একটা ভারটিকেল পাইপের সিঙ্গেল বা মাল্টিফেজ ফ্লো কেমন হচ্ছে সেরকম কাজ করা হয়ত এখানে খুব জটিল হয়ে যাবে কিন্তু একটা মেকানিক্যাল সিস্টেম যেখানে পাম্প আছে, টারবাইন আছে সেটার এনার্জি ক্যাল্কুলেশন এখানে করা যাবে খুব ইজিলি। রিসেন্ট Cengel এর থার্মডিনামিক্স বইয়েও EES based প্রব্লেম দেয়া আছে প্রচুর। আবার ধরো, কোন একটা রেফ্রিজারেন্টের P-h, T-s কার্ভ জেনারেট করতে চাও, সেটা এখানে ফ্লুয়িডের নাম আর কিছু ইনপুট দিলেই বের হয়ে যাবে।
আমাদের KFUPM এর সাথে MIT র একটা জয়েন্ট কোলাবরেশন (Center for clean water & energy) ছিল, ডিস্যালাইনেশন প্রজেক্ট নিয়ে। মানে গালফে তো পানি তেমন নাই,সমুদ্রের পানি লবণ মুক্ত করে সেটাকে ইউজেবল বানাতে হয়। ওদের পানির মেইন সোর্সই হইলো এটা। যাই হোক এই প্রজেক্টের অনেকগুলো পাব্লিশড পেপারেই দেখলাম কাজগুলো EES এ করা। তার মানে সিম্পল একটা প্ল্যাটফর্মে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিঙের উপর ব্যাপক প্রাক্টিকাল ইমপ্লিমেন্টেশন আছে EES এর।
সো আমার মনে হয় তোমরা আরামসে এই সফটওয়ারটা ইউজ করতে পারো। সোলার PV কিংবা প্যারাবলিক ট্রাফের সিমুলশন ডিজাইন ও এটা দিয়ে করতে পারবা, কিংবা অ্যাবসর্পশান রেফ্রিজারেশন ! কোড লিখার পর ইন্টার অ্যাক্টিভ স্ক্রিন বানাতে পারবা যেখান থেকে ইনপুট ভ্যারিয়েবল চেঞ্জ করা যাবে, কোডের ভেতরে কিছু চেঞ্জ করা লাগবেনা। ওয়েদার ডাটা লাগলে NREL( National Renewable Energy Laboratory) এর ওয়েবসাইটেই সেটা পাবা, প্লাস Homer, SAM এর মত অনেক প্র্যাক্টিকালি ইউজফুল সফটওয়্যারও ফ্রি/ট্রায়াল পাওয়া যায় সেখানে। পারলে ঢু মাইরো!
ডিস্ক্লেইমারঃ ক্র্যাক কপি নিজ দায়িত্ব খুঁজে নাও। সকল জার্নাল/বইয়ের জন্য gen.lib.rus.ec তো আছেই। EES (http://www.fchart.com/ees/) ডেভেলপ করসেন ইউনিভার্সিটি অফ উইস্কন্সিন ম্যাডিসনের স্যানফোর্ড এন্ড ক্লেইন, ব্যাটাদের থার্মোডাইনামিক্স থেকে শুরু করে হিট ট্রান্সফার, রেফ্রিজারেশন সিস্টেমের সব বই আছে, সাথে EES ডিজাইন মডিউল সহ। থিউরিটিক্যাল ক্যাচাল কম একদম কিন্তু পর্যাপ্ত, যার দরকার কামে লাগাও !
.
Tareq.
0805030
(কিছু আদিকালের চোথায় এই সিল দেখতে পাওয়া যাওয়ার কথা !)