আমার ও ছাদের কিস্সা
শঙ্খদীপ চক্রবর্তী
■■■■
আমার ও ছাদের কিস্সা
শঙ্খদীপ চক্রবর্তী
■■■■
পুবের আকাশ আজ আর প্রান্তরহীন নয়। নগরায়নের গেরোর কল তাকে রেহাই দেয়নি। গগনচুম্বী সুপারি গাছটার ইতি হয়েছে বহুকাল। ব্যাটায় দুই বাড়ির মাঝে দেওয়াল ভাঙতে চেয়েছিল। যারাই চেয়েছে কোনো এক বিভেদ মুছতে ইতিহাস তাঁদের কঠোর শাস্তি দিয়েছে। আকাশটা আজ বড় ফাঁকা ফাঁকা লাগে। সবুজ রঙের অভাবে ও একচ্ছত্র প্রভাবে চোখ আজ বড়ই ক্লান্ত, তাই বুঝি অধিকাংশ মানুষ আজ চোখ বুজে না দেখার ভান করে। কিন্তু চোখ বুজলে কি অন্ধকার ছাড়া আর কিছু দেখা যায়।
পুকুরের দক্ষিণ-পূর্ব কোণ আজ আর দেখা যায় না। পানাকচুরি আর পানকৌড়িটা কেমন আছে কে জানে?
চারিদিকে উঁচু উঁচু উন্নয়ন আর অ্যাজবেস্টাস।
চিলেকোঠার উপরটা আজও সূর্যের তাপের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করেনি। না করেছে উত্তুরে হাওয়া বা দখিনের ছোঁয়া। বিকেলের গগনে চোখ মেললে বাসা ফিরতি বিহগের দল, বাতাসে কান পাতলে শোনা যায় দূরের কামারহাটির কোনো মসজিদের বিকেলের আজান।
তবুও আজ বিকেলের পুকুরপাড় বড্ড ফাঁকা, কোলাহলহীন। সেদিনের 'পুচকে'দের দল আজ আকাশের তারা গুনছে আর আবহমান সময়ের দামের কড়ায় গন্ডায় মাশুল দেওয়ার চেষ্টা করছে।
শঙ্খদীপ চক্রবর্তী যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে পাঠরত। বামপন্থী রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। রাষ্ট্র, রাজনীতি, সমাজ, অর্থনীতির ওপর বিশেষ টান থাকলেও মাঝে মাঝে মন চায় প্রকৃতির কোলে কান পাততে, চোখ মেলতে, ঘুরে বেড়াতে ও মাঝে মাঝে একটু জিরিয়ে নিতে।