ছন্দে ছন্দে মনের আনন্দে...
বাবা
ছোট্টবেলায় থুত্থুড়ে পায়
হোঁচট খেতাম হাঁটতে;
দেখতে পেতাম তখন তুমি
আমার ব্যথায় কাঁদতে।
কাঠের ঘোড়া লোহার গাড়ি
কত্তো কী যে আনতে,
সুপারি পাতার খোলে বসায়
খেল পাড়িয়ে টানতে।
যখন যেটা চাইছি খেতে
বাজার থেকে আনতে,
জটিল-কঠিন বায়না যত
সবগুলো তার মানতে।
খাবার খেতে বিমুখ হলে
তখন ভীষণ রাগতে;
মান ভাঙানোর ছড়া কেটে
আমায় কাছে ডাকতে।
মাটির ভয়ে পিঠের পরে
আমায় তুলে রাখতে,
ঘুমের ঘোরে কাঁদবো বলে
রাত-বিরাতে জাগতে।
বাবা তোমায় ভালোবাসি
পারছি না তা বলতে,
তুমি আমার জীবন বাতির
জ্বলতে থাকা সলতে।
বাটারফ্লাই পার্ক
আমার বাড়ি চট্টগ্রাম
পতেঙ্গা তার থানা
দেশের সেরা একটি গ্রাম
সবার চেনাজানা।
বিনোদনের সকল কিছু
আমার গ্রামে আছে
জানতে হলে প্রশ্ন দিও
কর্ণফুলীর কাছে।
সেসব থেকে একটি পার্ক
বাটারফ্লাই নামে
দেখতে হলে টিকিট লাগে
একশো টাকা দামে।
প্রজাপতি চাষের নিয়ম
জানতে যদি চাও
বিলম্বকাল না বাড়িয়ে
জলদি চলে যাও।
আলতা মিয়ার রাগ
কথায় কথায় রাগ করে সে
কথায় কথায় রাগ করে
করতে গিয়ে গুণের হিসাব
আলতা মিয়া ভাগ করে।
মাইনে ছাড়া চাকরি তাহার
মাইনে ছাড়া চাকরি
মাসের শেষে চিবান কষে
তুষের কালো লাকড়ি।
দিন-দুপুরে জ্বালায় মশা
দিন-দুপুরে জ্বালায়
জ্বালার চোটে অগ্নি লাগায়
শনের ঘরের চালায়।
সমাজ নীতি ভাবায় তাকে
সমাজ নীতি ভাবায়
নিজের মতো চলতে গেলে
কাকরা কেনো থাবায়!
কথায় কথায় রাগ করে তাই
কথায় কথায় রাগ করে
রাগের চোটে চুলটা ছিঁড়ে
মাথার তালু টাক করে।
আলুথালু
আলতা মিয়া যেমন ভালো
তেমন ছিলো চালু
লিখতে গেলে আলোর কথা
লিখে দিতেন আলু।
আলতা মিয়ার ছোট্ট ছেলে
নামটা ছিলো লালু
বলতো মুখে ‘ভালো আছি’
লিখতে লেখে বালু।
মনটা তাদের খোলা ছিলো
চামড়া ছিলো কালো
কালো রঙের বানান তারা-
লিখলে হতো খালু।
অমন বানান লিখেলিখে
চলতো লালু চালু
পড়তে গিয়ে নিসার আলী-
হতেন আলুথালু।
বিশ্বকাপ ফাইনাল
বাইশতম বিশ্বকাপের
আসর বসে কাতারে
বিশ্বজুড়ে ক্রীড়ামোদির
ঘুরিয়ে দিলো মাথারে।
আয়োজনে চোখ ধাঁধানো
ছড়িয়ে ছিলো প্রযুক্তি
দেয়নি কো ছাড় ন্যূনতম
শরীয়া বিরোধ নিযুক্তি।
আর্জেন্টিনা ফ্রান্স মিলে
খেলতে নামে ফাইনালে
খেলা দেখে চৌধুরী পাড়ায়
টেবিল ভাঙে জয়নালে।
গোল দিয়েছে আর্জেন্টিনা
শোধ করেছে ফ্রান্সে
খেলা জমে ক্ষীর হয়েছে
আল লুসাইল গ্রাউন্ডে।
নব্বই মিনিট খেলা শেষে
দুইয়ে দুইয়ে সমতা
বাড়তি টাইমে একে একে
তাও সমান ক্ষমতা।
অবশেষে টাইব্রেকারে
চারে-দুইয়ে মিমাংসা
আর্জেন্টিনা মিটিয়ে নিলো
তিন যুগের জিঘাংসা।
বিশ্ব সেরা আর্জেন্টিনা
মেসির হাতে বিশ্বকাপ
ঘটনাবহুল এই আসর
সবার মনে সুপ্ত থাক।
আত্মীয়তা হরণ
বর্ণমালার ন’গুলো সব
বাধলো গিয়ে জোট;
গভীর রাতে মিটিং করে
সামনে নিয়ে বুট।
মিটিং থেকে করলো তারা
চারশো ধারা পাশ;
কেমন করে বাংলা বানান
করবে তারা নাশ।
ন যাবে তাই ণয়ের বাড়ি
নিয়ম-নীতি ছাড়ি;
যদিও মানুষ অর্থ নিয়ে
করবে কাড়াকাড়ি।
প্রথম দিনেই সুমন দাদা
দিতে গেলো মন;
কনে ছিলো খানিক মোটা
লিখে দিলো মণ!
কনের বাড়ি তুমুল গরম
কী আর হবে বরণ;
ণ তে হলো সুমন দাদার
আত্মীয়তা হরণ!
দোলা
আকাশ দোলে বাতাস দোলে
জায়গা-জমি-ভিটেও দোলে,
তাদের সাথে আরো দোলে-
ছাগল ছানা দুই পা তোলে।
চন্দ্র দোলে সূর্য দোলে
উল্কা-ধনু-তারাও দোলে,
তাদের সাথে আরো দোলে-
দোয়েল পাখি পুচ্ছ তোলে।
সাগর দোলে পুকুর দোলে
টেংরা-মাগুর-পুঁটিও দোলে,
তাদের সাথে আরো দোলে-
সারস পাখি এক পা তোলে।
হাফসা দোলে বুশরা দোলে
সঙ্গী-সাথী সকল দোলে,
তাদের সাথে আরো দোলে-
ছোট্ট মুনি দুই হাত তোলে।
দালান দোলে উঠোন দোলে
গাছের পাতা ডালও দোলে,
তাদের সাথে আরো দোলে-
কাঠবিড়ালী লেজটি তোলে।
কাগজ দোলে কলম দোলে
হাতের লেখা- বর্ণ দোলে
সকল দোলার কারণ হলো
আজকে মাহি দোলনা দোলে।
কাড়াকাড়ি
ছোটন সোনা মাহিয়া মণি
লিখতে গেলো ছড়া
লেখার খাতা না পেয়ে তার
মেজাজ হলো কড়া।
কিছু লেখে মেঝের উপর
কিছু লেখে জামায়
কিছু লেখা লিখবে কোথায়
বসে মাথা ঘামায়।
বললো বাপি দাওনা এনে
কলম-খাতা কিনি
কোন দোকানে পাবো ওসব
আমি কি আর চিনি?
বাপি তাহার অলস ভারি
আনছে না তা কিনে
তাই বলে তার সন্ধ্যাগুলো
কাটবে লেখা বিনে?
এসব নিয়ে বাপ-মেয়েতে
চলছে আড়াআড়ি
তাইতো মাহি বাপির কলম
করছে কাড়াকাড়ি!