... সিদ্ধ হবে লেখক যদি খারাপের(Evil) সকল পর্যায়গুলোকে উপলব্ধি করে

জর্জ বাতাই


'সাহিত্য কী বস্তু?' লেখাটায় জঁ পল সার্ত্রে বলতে চাচ্ছেন যে লেখক/পাঠক অভিজ্ঞতা হচ্ছে 'ব্যক্তিগত স্বাধীনতা'র যোগাযোগ। "পাঠ হচ্ছে লেখক আর পাঠকের মধ্যকার ঔদার্যের সন্ধি। প্রত্যেকে একে অপরে আস্থা রাখে, প্রত্যেকে একে অপরকে গোনায় ধরে, নিজের জন্যে যতটুকু চায় ততটুকুই অপরের জন্যেও চায়। এই কনফিডেন্সের জন্যেই এটা নিজে থেকেই মহৎ। কোনো কিছুই লেখককে বিশ্বাস করতে বাধ্য করে না যে পাঠক তার স্বাধীনতাকে খাটাবে, কোনো কিছুই পাঠককে বিশ্বাস করতে বাধ্য করে না যে লেখক তাকে ব্যবহার করতেছে।" টেক্সট এখানে কেবল ট্রান্সলেশন বা বিনিময়ের ধরন হিসেবে কাজ করে। এইখানে সাহিত্য নির্দোষ/নিষ্পাপ (innocent) হয়ে পড়ে। 'ঔদার্য' ও 'আস্থা'র ভিত্তিতে পাঠক ও লেখকের মধ্যে স্বাধীনতার বিনিময় চলে। দুই পক্ষের মধ্যকার এই 'আস্থা' নৈতিক দ্যোতনাকে প্রতিপাদন করে।


নৈতিক কর্মকাণ্ড হিসেবে সাহিত্যকে পড়বার সার্ত্রীয় ভাবনাকে জর্জ বাতাই সমালোচনা করেছেন তাঁর Literature and Evil (১৯৫৭) বইতে। বাতাইয়ের কাছে পাঠক ও লেখকের মধ্যে যোগাযোগ গড়ে উঠে সাহিত্যটার কাজের মধ্যদিয়ে। এই দিক বিবেচনায় সঠিক ট্রান্সলেশন বা যোগাযোগ (যাকে সার্ত্রে সৃজনশীল প্রক্রিয়ার সারবস্তু ঠাওরেছেন) চরম পর্যায়ের নৈতিকতা দাবি করে। এই নৈতিকতা, যাকে বাতাই পরবর্তীকালে 'অত্যধিক-নৈতিকতা' (hyper-morality) হিসেবে বিবৃত করবেন তা সিদ্ধ হবে লেখক যদি খারাপের(Evil) সকল পর্যায়গুলোকে উপলব্ধি করে। নৈতিকতা এই অর্থে 'অত্যধিক-নৈতিকতা' হয়ে পড়ে কেননা স্বতন্ত্র ব্যক্তি যৌক্তিক ও মরমী কিম্বা অজানা এই দুই জগতের মধ্যে নেগোশিয়েট করতে পারে। এইখানে পাঠক ও লেখকের মধ্যখানে যোগাযোগের ভিত্তি হয়ে পড়ে খারাপ (Evil)।


জর্জ বাতাইয়ের একমাত্র টিভি সাক্ষাৎকার(১৯৫৮) যেটি পাওয়া যায় সেখানে তিনি কথা বলেছেন তাঁর Literature And Evil বইটি নিয়ে। সাক্ষাৎকারের ইউটিউব লিঙ্কঃ https://www.youtube.com/watch?v=5XCnGuK8CVc


প্রথম প্রকাশঃ ৫ই মে, ২০১৯

সর্বশেষ সংশোধনঃ ৫ই মে, ২০১৯

লিঙ্কঃ https://www.facebook.com/bodhichittaju/posts/1824479467652616