ছবিঃ দিনাজপুরের বিরলে প্রত্নতাত্ত্বিক খননে উন্মোচিত স্থাপত্য ও প্রত্নপলল (আনু. সময়কাল খ্রি. ৮ম শতক - ১৭শ শতক)। এই প্রত্নস্থানে বৌদ্ধ স্থাপনাকে রূপান্তর ও আত্মীকরণ করে ব্রাক্ষ্মণ্য স্থাপনা (সপ্তরথ মন্দির) নির্মিত হয়েছিল। পরে একই পরিসর আনু. ১৫শ-১৭শ শতকে মানববসতি হিসেবে আত্মীকৃত ও ব্যবহৃত হয়েছিল। উক্ত খননের প্রাথমিক বৈজ্ঞানিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে (লিঙ্ক: https://www.academia.edu/39998047/Preliminary_observations_on_the_outcomes_of_two_archaeological_excavations_on_Teesta_Mega_Fan_TMF_Bangladesh)


‘বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্যকে’ জিজ্ঞাসাবাদ : ভারতের প্রাচীন লিখিত সূত্রের বিবিধ স্বর

ব্রজদুলাল চট্টোপাধ্যায়



[ অনুবাদকের টীকা: অধ্যাপক ব্রজদুলাল চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে প্রত্নতত্ত্ব-ইতিহাসের শিক্ষার্থী ও পাঠকদের পরিচয় করিয়ে দেয়ার প্রয়োজন নাই। আদি মধ্যযুগের নতুন তত্ত্বায়ন থেকে শুরু করে গ্রামীণ বসতির অভিলেখভিত্তিক ব্যাখ্যা, ঐতিহাসিক বিভিন্ন যুগে অপরত্বের সন্ধান থেকে শুরু করে প্রতিষ্ঠিত ইতিহাসের বয়ানকে প্রশ্নবিদ্ধ করার নানা প্রস্তাব, ঐতিহাসিক ভূগোল থেকে আরম্ভ করে নগরের প্রত্নতত্ত্ব – প্রাক ঔপনিবেশিক কালের দক্ষিণ এশীয় ইতিহাসতত্ত্বের নানা প্রসঙ্গে অধ্যাপক চট্টোপাধ্যায়ের অবদান আমাদের অনেককেই পথ দেখিয়ে চলেছে। Interrogating ‘Unity in Diversity: Voices from India’s Ancient Texts শিরোনামের এই প্রবন্ধটি উনার The Concept of Bharatvarsha and Other Essays (Permanent Black, 2017) বইটি থেকে নেয়া। প্রথমে এই প্রবন্ধটি ২০১৪ সালে ভারতীয় ইতিহাস কংগ্রেসের অধিবেশনে সভামূখ্যের ভাষণ হিসেবে পড়েছিলেন। পরে প্রবন্ধটি Social Scientist জার্নালে ২০১৫ সালে প্রকাশিত হয়। মূল প্রবন্ধটি পড়তে আগ্রহী পাঠকদের জন্য ওই প্রবন্ধটি আপলোড করলাম। তবে বইয়ে প্রকাশিত প্রবন্ধটির সঙ্গে এই প্রবন্ধের বৈসাদৃশ্যও মনে রাখতে হবে:

interrogating-unity_bdc


প্রবন্ধটি আমাদের সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে অসম্ভব গুরুত্ব বহন করে বলে আমার মনে হয়েছে। নানা উদাহরণে বর্তমান জাতি-রাষ্ট্র হিসেবে ভারতের উল্লেখ থাকলেও, ইতিহাসের বোঝাপড়ার পদ্ধতিগত দিক থেকে এবং নানা প্রাত্যহিক প্রসঙ্গে ইতিহাসের বিচিত্র উল্লেখের চলতি প্রবণতার প্রেক্ষিতে এই প্রবন্ধটি অত্যন্ত জরুরি। লিখিত নানা উৎসের নিরিখ করে কীভাবে বিভিন্ন স্বতঃসিদ্ধ ধারণা ও অনুশীলনকে প্রশ্ন করা যায় তা শেখা ও বোঝার জন্যও এই প্রবন্ধটি একটি প্রামাণ্য হতে পারে।


হালের উগ্র জাতীয়তাবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার প্রসারে যেখানে সমগ্র দক্ষিণ এশিয়াকে তটস্ত করে রেখেছে, তখন এমন প্রবন্ধ আমাদের বিদ্যায়তনিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক আত্মতুষ্টিকে আঘাত করার জন্য অত্যন্ত দরকারী। আশা করি পাঠকবৃন্দ গভীর আগ্রহের সঙ্গে অনুবাদটি পড়বেন। ইতিহাসের জাতীয়তাবাদী বয়ানগুলোকে যেমন প্রশ্ন করা যায় তেমনই লিবেরাল ও সেক্যুলার ইতিহাসের বয়ানকেও প্রশ্ন করা যায়। প্রশ্ন করার তৎপরতার প্রস্তুতি-অনুশীলন-চিন্তার জন্যও প্রবন্ধটি বিশেষভাবে শিক্ষণীয়।


বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, এই অনুবাদটি পুরোপুরি অবাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে কেবল শিক্ষার জন্য করা হয়েছে। এখানে প্রকাশিত সংস্করণটিকে প্রথম খসড়া হিসেবে বিবেচনা করলে বাধিত হবো। অনুবাদটি করার সময় মানস চৌধুরী ও তমাল মোহাইমেনের বিভিন্ন সাহায্যর জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। প্রুফ পাঠ করে সংশোধন করার জন্য জাহিন জামালকে অনেক ধন্যবাদ।


ইংরেজি রেফারেন্সে প্রতিবর্ণীকরণের জন্য ব্যবহৃত ডায়াক্রিটিক চিহ্নগুলো ব্যবহার করতে পারি নাই। তৃতীয় বন্ধনীতে কয়েকটি স্থানে সংযোজিত শব্দ অনুবাদকের। ফন্টের রূপান্তরসহ কিছু টেকনিকাল কারণে বেশ কিছু যুক্তাক্ষর ভেঙ্গে গেছে। ধীরে ধীরে সেগুলো সংশোধন করার চেষ্টা করবো। সকলকে ধন্যবাদ ও সকলের জন্য শুভকামনা। – স্বাধীন সেন (অনুবাদক) ]