চুয়াং জু ও প্রজাপতি
[বোধিচিত্তের আলাপগুলির সাথে যাদের সম্যক পরিচিতি আছে, বিশেষ করে মিশেল ফুকোর পাগলামীর ওপরে সলিমুল্লাহ খানের আলাপের সাথে, তারা চুয়াং জু ও প্রজাপতির গল্পের সাথে পরিচিত হওয়ার কথা। যতগুলি তাও রূপক আছে, এটি তার মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ। প্রাচ্য ও প্রতীচ্য দুই ঘরানার দর্শনেই এই গল্পের সুদূরপ্রসারী প্রভাব আছে। ]
একদা আমি চুয়াং জু স্বপ্নে দেখলাম যে আমি একটা প্রজাপতি। প্রজাপতির সকল অভিপ্রায় ও উদ্দেশ্য নিয়ে এখানে থেকে ওখানে উড়ে বেড়াচ্ছি। প্রজাপতি হিসেবে যে সুখানুভূতি আমার হচ্ছিল আমি কেবল তা সম্পর্কেই সচেতন ছিলাম। আমি যে চুয়াং জু সে বিষয়ে আমার কোন চেতনাই ছিলনা। দ্রুতই আমি জেগে উঠলাম। উঠে আমি ঠিক আগের মত হিসেবেই নিজেকে খুঁজে পাই। এখন আমি জানিনা আসলে আমি কি তখন মানুষ ছিলাম যে স্বপ্নে দেখছে যে সে একটা প্রজাপতি, নাকি এখন আমি একটা প্রজাপতি যে আসলে স্বপ্নে দেখছে সে একটা মানুষ। মানুষ ও প্রজাপতির মাঝে নিশ্চিতভাবেই ফারাক আছে। এই স্থানান্তরকে বলা হয় জাগতিক বস্তুর রূপান্তর। [লিন ইউতাংয়ের অনুবাদ থেকে অনূদিত]
চুয়াং জু ও প্রজাপতি
স্বপনে চুয়াং জু প্রজাপতি হইলো,
আর জাগরণে, প্রজাপতি হইলো চুয়াং জু।
কোনটা আসল - মানুষ না প্রজাপতি?
জগতে সীমাহীন বদলের সীমানার খোঁজ দিতে পারে কেউ?
যে জল বয়ে চলে যায় মস্ত সাগরের অতলে
ফিরে আসে ঠিক তখনি,
ফিরে আসে স্বচ্ছ স্রোতের অগভীরতায়।
যে লোক নগরের দরজার ওপারে বুনছে তরমুজ
সে ই ছিল পূব-পাহাড়ের যুবরাজ।
পদ-পদবী-ধন-দৌলত হারাবেই।
তুমি জানো এসব, তবুও খেটে মরো-
কিসের লাগি?
[ চীনা কবি লি পো’র কবিতার অনুবাদ ]
প্রথম প্রকাশঃ ২রা ডিসেম্বর, ২০১৯
সর্বশেষ সংশোধনঃ ২রা ডিসেম্বর, ২০১৯