Can the subaltern speak? প্রবন্ধের মিসরিডিং প্রসঙ্গে গায়ত্রী




.... আমার [রচনা] সম্বন্ধে যেসব কথাগুলি বললেন তাতে মন দিয়ে পড়েছেন কিনা আমি বলতে পারলাম না।...ওটা[Can the subaltern speak?] কি ছিল? ওটা পোস্ট কলোনিয়াল-ফলোনিয়াল কিচ্ছু ছিল না। ওটা It is a Critique of Hinduism। একদিকে ছিল ক্রিটিক অব ফ্রেঞ্চ থিয়োরী, আরেক দিকে ছিল Critique of Hinduism। ঠিক আছে! ওটার মধ্যে পোস্ট কলোনিয়াল, প্রি-কলোনিয়াল এবং এক্স্ট্রা কলোনিয়াল বলতে পারেন, ওটার মধ্যে পোস্ট-কলোনিয়াল কিচ্ছু ছিল না। এবং আরেকটা ছিল কি-কেন বলেছিলাম, এরা ভালো করে মন দিয়ে কেউ পড়েননি। ঐটা যে মহিলা সে আত্মহত্যা করল, তখন ঐটাতে কিছু লিখিনি। সে আমার দিদিমার বোন। সে আত্মহত্যা করল, চারদিন অপেক্ষা করল যাতে সে ঋতুঃস্বলা(রজঃস্বলা) হয়। যাতে লোকে না কয়, ভেবে দেখুন সতের বছরের মেয়ে, সে অনুশীলন সমিতির মেম্বার। সে মারতে পারল না যখন, সমিতির নিয়ম অনুযায়ী সে নিজেকে মারল। কিন্তু সে অপেক্ষা করল যাতে লোকে মনে না করে যে এটা হচ্ছে একটা অবৈধ প্রণয়। এবং সে তার বোনকে আমার দিদিমাকে চিঠি লিখে গেল যে ষাট বছর বাদে খুলে দেখো।

জেনে রাখো, সে মানে তার দেহ দিয়ে, সতের বছরের মেয়ে সে রেজিস্ট করল।


কিন্তু আমারই ঘরে আমার তারাদিদি... আমি ইংরেজিতে ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট হয়েছিলাম কলকাতা ইউনিভার্সিটিতে, আর আমার তারাদিদি ফিলোসফিতে ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট কলকাতা ইউনিভার্সিটির। কাজেই, এক এডুকেশন। সে আমাকে বলে, তুই একে নিয়ে কাজ করছিস কেন- একটা অবৈধ প্রণয়। যে মহিলা সে নিজে লিখে গেল যে দেখ, নিজে বুঝো -আমি... একটা মানুষের জন্য নিজেকে মারছি না, অন্য কারণে-এই লিখে গেলাম।... ১৯২৬ সালে, তখন কবে দেশ স্বাধীন হবে জানা নেই কিছু। লিখেছিল ষাট বছর বাদে পড়বে। আর এই ফ্যামিলির কথা। তখন আমি রেগে বলেছিলাম, দ্যা সাব-অল্টার্ন ক্যান নট স্পিক। এটার মধ্যে সাব-অল্টার্নের কোনো ভয়েস নেই। এটা সাব-অল্টার্ন ক্যান নট টক বলিনি। ইংরেজি কথায় স্পিচ একটা,[স্পিচ ও] টক এর মধ্যে তফাৎ আছে। যে স্পিচ সাব-অল্টার্নের স্পিচ, এক দেহ দিয়ে বলে গেলো! সেটা কমপ্লিট করা গেলো না। এডুকেটেড-বাড়ির মধ্যে(র), মহিলা, সে বলল অবৈধ প্রণয়! ... কমপ্লিট করা গেলো না।

কাজেই তখন রাগ করে লোকে যেমন বলে There is no justice, সেইভাবে বলেছিলাম।


পড়তে না জানলে মনে হয় যে আমি বলছি সাব-অল্টার্ন কথা বলতে পারে না।...গাধা নাকি, আমি কি গাধা! যদি আমি সত্যি সত্যি এটা মনেও করি, আমি কি এতো গাধা যে সেটা আমি লিখব! এটা পড়তে জানতে হয়। সুতরাং গল্পটাও দেখেননি, কিছুই করেননি। সাব-অল্টার্ন স্টাডিজের সঙ্গে আমার কোনো কানেকশন নেই। সাব-অল্টার্ন স্টাডিজে আমি যখন এটা প্রথম লিখেছিলাম, তখন সাব-অল্টার্ন স্টাডিজের কারো সঙ্গে আমার আলাপও হয়নি। রঞ্জিতদার(রণজিৎ গুহ) সঙ্গে আলাপ হওয়ার পরে মনে হলো, ওরে বাবারে! এরাতো অসম্ভব... [ভিডিওচিত্রের পরের অংশ কেটে বাদ দেয়া হয়েছে]।


Can the subaltern speak? সম্পর্কে কিছু যদি বলতে হয়, সেটা যে কি সেটা একটু চিন্তা করে দেখবেন। ওটা ঐ মহিলার গল্প। এবং খুব খারাপভাবে লেখা। বুঝা যায় না। কিন্তু কথা হচ্ছে, আমি আমার এডিটরদের পাঠিয়েছিলাম ওটা। এইবলে, দেখুন এটা একটু কাট-টাট করুন, আমি আর এটা নিয়ে কিছু করতে পারছি না। কেননা বাড়ির ঐ মহিলা সম্বন্ধে লেখাটায় একটা রাইটার্স ব্লক ছিল আমার। মা বলেছিল তুই নাম দিচ্ছিস! (আমি বলেছিলাম)- মা, দেখো কেউ ... পড়বেও না, নাম জানবেও না, কিচ্ছুতো করবে না। মা, চিন্তা করো না।


সুতরাং আমি কিন্তু লিখেছিলাম রাইটার্স ব্লকের সাথে। আপনারা এডিটরদেরকে(বলুন), একটু সাহায্য করুন আমাকে। কাটুন এটাকে, একটু সোজা করে দিন। তাঁরা কিছুই করল না! ঐভাবেই ছাপিয়ে দিলেন।...


Can the subaltern speak?,সম্বন্ধে পোস্ট-কলোনিয়াল নয়। সাব-অল্টার্নের গলা নেই, এটা ঠিক কি-না[অস্পষ্ট ও ঠিকঠাক শোনা সম্ভব হয়নি]!! তারপরে এত দিন করছিটা কি(!)?... কি করছি এখন? যারা সত্যি সত্যি সাব-অল্টার্ন অর্থাৎ যারা সিটিজেনশিপের কিছু কিছু পায় না কিন্তু ভোট দেয়, যাদের মাথাটা ঐরকম করে রেখে দেয়া হয় একদম। সেই সমস্ত লোকেদের সঙ্গে খাটছিতো ত্রিশ বছর ধরে। হ্যাঁ, ইনফ্রাস্ট্রাকচার যাতে তৈরি হয়।

যখন সাব-অল্টার্ন রেজিস্ট করে আমরা শুনতে পাই যাতে।


যেটা প্রথম আমি জেনেছিলাম ঐ আমার তারাদিদির বোকার মত কথায়।... মনে রাখবেন যে এই মহিলার [নিজেকে দেখিয়ে গায়ত্রী] কাজটা অন্যরকম হয়েছে।


সূত্রঃ আমরা হচ্ছি ক্রিমিনাল-- গায়ত্রী ।। রোহিঙ্গা বিষয়ে গায়ত্রী চক্রবর্তী স্পিভাকের লগে আড্ডা-আলাপ


পুনশ্চঃ


ফ্রেঞ্চ থিওরীঃ ৭০-৮০’র দশকে মিশেল ফুকো, জ্যাক দেরিদা, দেল্যুজ, লিওতার প্রমুখ ফরাসী তাত্ত্বিকদের লেখাজোঁখা আমেরিকায় পরিচিতি পেতে শুরু করে। ঐ সময় থেকে আমেরিকায় এদের কাজ-কর্মকে ফ্রেঞ্চ থিওরী বর্গের মধ্যে ফেলা হয়ে থাকে।


রাইটার্স ব্লকঃ লেখকদের মধ্যে এই ঘটনা প্রায়ই ঘটে থাকে। মূলত কোন কিছু নিয়ে লিখতে চেয়েও না পেরে ওঠাটাই রাইটার্স ব্লক।



প্রথম প্রকাশঃ ১৩ই জুলাই, ২০১৮

সর্বশেষ সংশোধনঃ ১৩ই জুলাই, ২০১৮

লিঙ্কঃ https://www.facebook.com/notes/2844202939015788/