মূল দর্শন হিসেবে এথিক্সকে বিবেচনাঃ এমানুয়েল লেভিনাস


দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে এমানুয়েল লেভিনাসের চিন্তা প্রভাববিস্তার করেছে জ্যাক দেরিদা থেকে জঁ-লুক ম্যারিয়ন অবধি ফরাসী দার্শনিকদের চিন্তায়। জঁ-ফ্রাসোয়া লিওতার, পল রিক্যোর, আলা রেনাউট, লুসি ইরিগ্যারি, ফ্রান্সিস জ্যাক ও মরিস ব্লাশোঁ— এমন ভিন্নধর্মী চিন্তকদের পাঠ-পঠন ও বিতর্কের বিষয় হয়েছে তাঁর কাজ। এই বিশাল প্রভাবের কারণ খুঁজলে নিশ্চিতভাবেই বলা যায় এমন একটি কারণ হচ্ছে এথিক্স(Ethics) সম্বন্ধে লেভিনাসের অভূতপূর্ব ভাবনা। তাঁর কাজ বলেছে এক আকারগত(formal) এথিক্সের(এমন শর্তাবস্থা যেইটা কি-না এথিক্স সম্বন্ধীয় যেকোন কথাবার্তারেই অর্থপূর্ণ করে) কথা। এইটা কিন্তুক কোনো নৈতিক দায়িত্ব কিম্বা চরিত্রের সন্ধান করা নয়।


এথিক্স ও ভাষার মধ্যকার সুস্পষ্ট, প্রত্যক্ষ ও ফান্ডামেন্টাল যোগসূত্রই Totality and Infinity (1961) গ্রন্থের প্রতিপাদ্য। ‘এথিক্স’ বলতে লেভিনাস আসলে কি বুঝাচ্ছেন? ‘’অপর মানুষের প্রতি সীমাহীন দায়বোধের সম্পর্ক হিসেবে উপলব্ধিই হচ্ছে এথিক্স’’। এটা ঘটে যখন একজন অপরের মুখোমুখি হয়। ‘অপর’ অসীমের ভাবের সাথে গাঁট বাধা। অপর(other) সত্তার বিন্যাসে একইসাথে ভিতরে ও বাইরে থাকে। যেকোনো মোকাবিলাতেই অপরের প্রয়োজনে নিজের দায়-দায়িত্ব সহজাত বৃত্তিরূপে হাজির থাকে। এই মৌলিক প্রবণতা অবশ্যই শব্দে প্রকাশিত হবে, অন্যের সাথে কথা বলা ও শোনার মাধ্যমে। লেভিনাস জোর দিচ্ছেন তাদের পৃথকত্বে যারা মুখোমুখি(face-to-face) সাক্ষাত করেছে। এই দুই কখনোই এক সত্তা বা সারসত্তায় পরিণত হবে না। এইখানে, আপন(seif) অপর ব্যক্তির প্রতি দায়বদ্ধ থাকবে বলতে যা বুঝাইতে চায় তা হল মুখের চেহারার (অবলোকন) মাধ্যমে ‘শোনা’ হচ্ছে আহবান/আকুতিকে, আপনের সাথে অপরের সংযোগে এটার দরকার পড়ে শব্দের। যতক্ষন পর্যন্ত না বলা হচ্ছে, আপন জানতে পারে না অপরের কি প্রয়োজন। এথিক্সকে অবশ্যই ভাষার মধ্যস্থতার ভিতর দিয়ে যাইতে হয়। ‘’অপরকে জানবার ও কাছে পৌছাবার দাবি বুঝা যাবে অপরের সাথে সম্পর্কের ভিতরে যেটা কি-না ঘটে ভাষার সম্পর্কে।‘’

____________


প্রথম প্রকাশঃ ২রা জুলাই, ২০১৯

সর্বশেষ সংশোধনঃ ২রা জুলাই, ২০১৯

লিঙ্কঃ https://www.facebook.com/bodhichittaju/posts/1915146468585915