পেশাগত জীবন কোনদিকে যাবে সে বিষয় নিয়ে অনেকেই দোটানায় পড়ে যান। বিশেষ করে এইচ.এস.সি পরীক্ষার পর এই বিষয়টি বিশেষভাবে লক্ষ্য করা যায়। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে অনেকেই জীবনের খেই হারিয়ে ফেলেন। জীবনের হাল না ছেড়ে দিয়ে পেশা হিসেবে বেছে নিতে পারেন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট
চিকিতৎসা সেবায় মূলত ডাক্তারকে প্রাধান্য দেওয়া হয়; কিন্তু একটি হাসপাতাল বা ক্লিনিক শুধু ডাক্তার দ্বারা পরিচালিত হতে পারে না। প্রত্যেকটি বিভাগে ডাক্তারদের সহকারী প্রয়োজন হয়। ডাক্তারদের সহকারী এসব বিশেষজ্ঞ কর্মীরাই মেডিকেল টেকনোলজিস্ট। ৩ থেকে ৪ বছর মেয়াদী হয় এই কোর্সটি। দেশের পাশাপাশি দেশের বাইরেও এই পেশায় ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।
রোগীর মল, মূত্র, কাশি, রক্ত সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা।
সংগৃহীত নমুনা সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা।
সংগৃহীত নমুনা পরীক্ষা নিরীক্ষা ও বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদন তৈরি করা।
রোগীর স্বাস্থ্য পরীক্ষার সকল তথ্য সংরক্ষণ করা।
বিশেষ প্রয়োজনে রোগ নির্ণয়ের বিভিন্ন পদ্ধতি নিয়ে গবেষণা করা।
নতুন ও জুনিয়র কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেয়া।
প্যাথলজিস্ট হতে চাইলে আপনি এ বিষয়ে ডিপ্লোমা বা বিএসসি ইন ল্যাবরেটরি কোর্স করতে পারেন। এসএসসি পাসের পরেই আপনি ডিপ্লোমা কোর্স করতে পারবেন। এক্ষেত্রে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসিতে ন্যূনতম জিপিএ ২.৫০ পেতে হবে। বিএসসি ইন ল্যাবরেটরি কোর্স করতে চাইলে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি ও এইচএসসিতে জীববিজ্ঞান সহ জিপিএ ৬.০০ পেতে হবে। তবে কোনো পরীক্ষায় জিপিএ ২.৫০ এর নিচে থাকা যাবে না।
ডিপ্লোমা কোর্স তিন থেকে চার বছর মেয়াদী হয়ে থাকে এবং বিএসসি ইন ল্যাবরেটরি মেয়াদ চার বছর হয়ে থাকে। ইন্সটিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি এর অধীনে বাংলাদেশে সরকারি পর্যায়ে মোট ৮ টি প্রতিষ্ঠান ডিপ্লোমা এবং বিএসসি কোর্সে পাঠদান করানো হয়। ডিপ্লোমা ডিগ্রিধারীরা চাইলে পরবর্তীতে আবার বিএসসি ইন ল্যাবরেটরি কোর্স করতে পারেন। সাধারণত ডিপ্লোমা ডিগ্রিধারীদের সহকারী প্যাথলজিস্টের পদে নিয়োগ দেওয়া হয়ে থাকে।
মেডিকেল টেকনোলজিতে পড়াশোনা করার জন্য বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষাবোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর বাইরেও বেসরকারি পর্যায়ে কিছু ইন্সটিটিউট আছে যারা ইন্সটিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি এর অধীনে পড়ে।
ইন্সটিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি, ঢাকা।
ইন্সটিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি, রাজশাহী।
ইন্সটিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি, বগুড়া।
ইন্সটিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি, রংপুর।
ইন্সটিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি, বরিশাল।
ইন্সটিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি, ঝিনাইদহ।
ইন্সটিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি, চট্টগ্রাম।
ইন্সটিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি, সিলেট।
সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে পড়তে চাইলে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে।
আহসানিয়া মিশন ইন্সটিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি।
আর্মড ফোর্স ইন্সটিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি।
ঢাকা ইন্সটিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি।
প্রাইম ইন্সটিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি, রংপুর।
ইসলামি ব্যাংক ইন্সটিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি।
ল্যাবরেটরি সম্পর্কিত যাবতীয় জ্ঞান থাকতে হবে।
রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসায় ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি ব্যবহারে পারদর্শী হতে হবে।
রোগীর সমস্যার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনতে হবে ও বোঝার চেষ্টা করতে হবে।
সঠিকভাবে রোগ শনাক্তকরণের দক্ষতা থাকতে হবে।
অত্যন্ত মনোযোগ সহকারে কাজ করার মন মানসিকতা থাকতে হবে।
ল্যাবরেটরিতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাজ করার মানসিকতা থাকতে হবে তার।
এছাড়াও প্যাথলজিস্টদের অবশ্যই তাদের কাজ সম্পর্কে পরিপূর্ণ জ্ঞান ও দক্ষতা থাকতে হবে। কারণ একজন প্যাথলজিস্টের কাজের উপর নির্ভর করে বহু মানুষের সুস্বাস্থ্য। এজন্য তাকে সকল ছোটখাটো বিষয়ে খেয়াল রাখতে হয়। কারণ, এখানে সামান্য ভুল হলে একজন রোগীর পুরো চিকিৎসাতেই ভুল থেকে যাবে। চিকিৎসকেরা তাদের পরীক্ষা নিরীক্ষা করা প্রতিবেদনের উপর ভিত্তি করেই রোগীদের পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
সরকারি এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে প্যাথলজিস্টদের চাকরি বেশ ভালো সুযোগ রয়েছে। একজন ফ্রেশ গ্রাজুয়েট কর্মজীবনের শুরুতে ১০,০০০ থেকে ১৫,০০০ হাজার টাকা আয় করতে পারবেন। পরবর্তীতে কাজের অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা বৃদ্ধির সাথে সাথে তা ৪০,০০০ থেকে ৮০,০০০ হাজার টাকা আয় করতে পারবেন।