পদার্থের সংজ্ঞা:
যা স্থান দখল করে, যার ভর আছে এবং যা ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য তাকে পদার্থ বলে। অন্য কথায়, আমাদের চারপাশে যা কিছু tangible (স্পর্শ করা যায়) সেটাই পদার্থ।
পদার্থের প্রকারভেদ:
পদার্থকে প্রধানত দুই ভাগে ভাগ করা যায়:
১. ভৌত অবস্থা: এই অবস্থার উপর ভিত্তি করে পদার্থকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়: কঠিন, তরল ও গ্যাসীয়।
২. রাসায়নিক গঠন: এই গঠনের উপর ভিত্তি করে পদার্থকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়: মৌলিক পদার্থ ও যৌগিক পদার্থ।
১. ভৌত অবস্থা:
কঠিন পদার্থ: এদের নির্দিষ্ট আকার ও আয়তন থাকে। এদের অণুগুলো খুব কাছাকাছি ও দৃঢ়ভাবে আবদ্ধ থাকে। যেমন: পাথর, কাঠ, লোহা।
তরল পদার্থ: এদের নির্দিষ্ট আয়তন থাকলেও আকার পাত্রের আকারের উপর নির্ভর করে। এদের অণুগুলো কঠিন পদার্থের তুলনায় কিছুটা দূরে দূরে থাকে এবং তাদের মধ্যে আকর্ষণ শক্তি তুলনামূলকভাবে কম থাকে। যেমন: পানি, তেল, দুধ।
গ্যাসীয় পদার্থ: এদের নির্দিষ্ট আকার বা আয়তন কিছুই থাকে না। এরা পাত্রের সম্পূর্ণ স্থান দখল করে। এদের অণুগুলো খুব দূরে দূরে থাকে এবং তাদের মধ্যে আকর্ষণ শক্তি প্রায় থাকেই না। যেমন: অক্সিজেন, নাইট্রোজেন, কার্বন ডাই অক্সাইড।
২. রাসায়নিক গঠন:
মৌলিক পদার্থ: এরা এক প্রকার পরমাণু দিয়ে গঠিত এবং এদেরকে ভাঙলে অন্য কোনো পদার্থ পাওয়া যায় না। যেমন: সোনা, রূপা, অক্সিজেন।
যৌগিক পদার্থ: এরা দুই বা ততোধিক ভিন্ন প্রকার পরমাণু দিয়ে গঠিত এবং এদেরকে ভাঙলে একাধিক পদার্থ পাওয়া যায়। যেমন: পানি (H₂O), লবণ (NaCl), চিনি (C₁₂H₂₂O₁₁)।
উদাহরণসহ ব্যাখ্যা:
কঠিন পদার্থ: একটি পাথর একটি কঠিন পদার্থ। এর নির্দিষ্ট আকার ও আয়তন আছে। আপনি যদি পাথরটিকে স্পর্শ করেন তবে এটি আপনার কাছে কঠিন মনে হবে। এর অণুগুলো খুব কাছাকাছি ও দৃঢ়ভাবে আবদ্ধ থাকে।
তরল পদার্থ: পানি একটি তরল পদার্থ। এর নির্দিষ্ট আয়তন আছে, তবে এর আকার নেই। আপনি যদি পানিকে কোনো পাত্রে রাখেন তবে এটি সেই পাত্রের আকার ধারণ করবে। এর অণুগুলো কঠিন পদার্থের তুলনায় কিছুটা দূরে দূরে থাকে।
গ্যাসীয় পদার্থ: অক্সিজেন একটি গ্যাসীয় পদার্থ। এর নির্দিষ্ট আকার বা আয়তন কিছুই থাকে না। এটি পাত্রের সম্পূর্ণ স্থান দখল করে। এর অণুগুলো খুব দূরে দূরে থাকে।
মৌলিক পদার্থ: সোনা একটি মৌলিক পদার্থ। এটি শুধু সোনা পরমাণু দিয়ে গঠিত। আপনি যদি সোনাকে ভাঙেন তবে শুধু সোনাই পাবেন, অন্য কিছু নয়।
যৌগিক পদার্থ: পানি একটি যৌগিক পদার্থ। এটি হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন পরমাণু দিয়ে গঠিত। আপনি যদি পানিকে ভাঙেন তবে হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন গ্যাস পাবেন।
অতিরিক্ত তথ্য:
পদার্থের আরও দুইটি অবস্থা আছে: প্লাজমা ও বোস-আইনস্টাইন কন্ডেনসেট। এগুলো সাধারণত চরম পরিস্থিতিতে দেখা যায়।
পদার্থের অবস্থা পরিবর্তন করা যায়। যেমন: তাপ দিলে কঠিন পদার্থ তরলে এবং তরল পদার্থ গ্যাসে পরিণত হতে পারে।
পদার্থ আমাদের চারপাশে সবকিছু তৈরি করে। আমাদের জীবন ধারণের জন্য পদার্থের গুরুত্ব অপরিহার্য।
মনে রাখার টিপস:
পদার্থের সংজ্ঞাটি ভালোভাবে মুখস্থ করুন।
পদার্থের প্রকারভেদগুলো উদাহরণসহ বুঝার চেষ্টা করুন।
কঠিন, তরল ও গ্যাসীয় পদার্থের বৈশিষ্ট্যগুলোর পার্থক্য মনে রাখুন।
মৌলিক ও যৌগিক পদার্থের উদাহরণগুলো মনে রাখুন।
এই নোটটি তোমাদের এসএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতিতে সহায়ক হবে বলে আশা করি।