হঠাত করেই মনে হল শুধু পড়াশোনা করে কি লাভ যদি একটু কাছ থেকে আরো কয়েকটা ইন্ডাস্ট্রি দেখতে নাই পারি। আগের টার্ম গুলোতে mass transfer পড়ার side effect কিনা জানিনা আমাদের ধারণা হল একটা Distillation Column দেখতে না পারলে আর কিসের কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার! এসব ক্ষেত্রে ভাবতে দেরি হলেও রওনা দিতে দেরি হয়না। সুতরাং ‘বন্ধু চল যাই বরাহ শিকারে’- স্টাইলে যাত্রা হল শুরু।
ঢাকা থেকে ট্রেন এর শিডিউলে ঘাপলা, অতঃপর বাস আরোহন এবং দৃশ্যদর্শন। দুদিকে বাংলার মাঠঘাট নদী বারবার কবি হতে ইচ্ছা করল।আর আমারই বা দোষ কি?? এই বাংলার নদী মাঠ ধানক্ষেত দেখেই তো কতজন কবি বৈরাগী হল তার কি ইয়ত্তা আছে? দুধারে সবুজের সমারোহে মাঝে মাঝে দুয়েকটা বিল ,নদী। হঠাত খালি হাতে মাছ ধরে বীররসে উচ্ছ্বসিত বালকের হাসি দৃষ্টী এড়ায় না। মাঠ পেরিয়ে বন এড়িয়ে খেজুর কিংবা শনের ঝোপ দেখে দেখে আমরা এগুতে থাকি গন্তব্যের দিকে।
আড়াই নং (২.৫)বাংলোঃ দর্শনা পৌছে আমাদের ঠাই হল আড়াই নং বাংলোতে। কোন কিছুর ক্রম কিভাবে ভগ্নাংশ হয় তা মাথায় না ঢুকলেও সুন্দর বন্দোবস্ত দেখে কেরু কোম্পানীর প্রতি মুগ্ধতা বাড়ল বৈ কমল না। তবে নাম নিয়ে বাহাদুরীর উদাহরণ এই এলাকায় এটাই একমাত্র নয় তা বুঝতে পারলাম এলাকাইয় হাটতে বের হয়ে। সেখানকার ঘাটের নাম মেমবাজারের ব্রিজ। বাজারেতো মেমকে কেনাবেচা যাবে না; নিশ্চয়ই মেমরা এখানে বাজারে করতে আসেন- বুঝে নিতে কষ্ট হয় না। কাছেই মাথাভাংগা নদী। নদীর মাথা কিভাবে গজায় আর তা ভাংগেই বা কিভাবে তার রহস্যভেদ বাদ দিয়ে নদী দেখতে লেগে গেলাম। কিন্তু ব্রিজের নাম যদি হয় গলায়দড়ি তাহলে সাবধানতার প্রয়োজন কিঞ্চিত বাড়ে কারণ সন্ধ্যায় হয়ে আসছিলো । আর কিছু না হোক ভূতপ্রেতরা নামের গূণেই স্থানটীকে স্বর্গভাবতে পারে!!
পরদিন চিনি কিংবা মদের ফ্যাক্টরি দেখলুম; তবে পাঠকদের সেই ইতিহাস শুনিয়ে বিব্রত করার ইচ্ছা নেই। যাই হোক ঘ্রাণে অর্ধভোজনে বাধ্য হলুম বটেঃ( evaporator , crystallizer এর ভীড়ে একটা কথাই মনে পড়ে ,স্থানীয় এক বালক ভেতরে নিরাপত্তার কড়াকড়ি প্রসংগে, ‘ হূম! গেট খুলে দিক আর সব মদারুরা গিয়ে ঢুকে যাক!! কি যে কন না?’ তার অনবদ্য উচ্চারণে অনেকক্ষণ হেসে আমরা রওনা দিলাম ঐতিহাসিক এক স্থানের দিকে ।
স্বাধীনতা আমার স্বাধিনতাঃ মেহেরপুরের মুজিবনগর বিশাল এক প্রাচীন বৃক্ষ যার নিচে শপথ নিয়েছিলো আমাদের প্রথম সরকার। একালের মত চাকচিক্য তাদের ছিলো না কিন্তু কাজের কাজটি তারা করে দিয়ে গিয়েছিলেন। স্বাধীনতার রক্তিম সূর্য আনতে যে গভীর বেদনা আর লাঞ্ছনার শিকার হতে হয়েছে জাতিকে তা বুঝতে কষ্ট হয়না সামনের লালমঞ্চ বা মাথারখুলির প্রতিকৃতি দেখে। সমগ্র বাংলাদেশটাই ছিলো রণক্ষেত্র তাও বোঝা গেলো বিশাল এক মানচিত্রে সেক্টর ভিত্তিক যুদ্ধের চিত্রায়ন দেখে মন ভরে ঊঠল বিষাদে ক্যামেরার কি সাধ্য সেই আবেগকে ধারণ করতে!
পরের দিন মাইক্রো যোগে ঘুরতে বেরুলাম । এবার পরিবেশ প্রকৃতি সামান্য ভিন্ন। নদী ধানক্ষেতের সাথে যোগ হয়েছে আখের খেত, হাসের ঝাঁক এবং আমাদের খুনসুটি চলছেই যথারীতি। একটা গল্প না বলে থাকতে পারছিই না। দর্শনার প্রধান আকর্ষণ যেহেতু চিনিকল তাই এক বন্ধু বায়না ধরলও আখ খেতের পাশে দাঁড়িয়ে গ্রুপ ছবি তোলা হোক। সাথে সাথেই আরেকজনের মন্তব্য ছুটে গেলো, ‘ রাস্তার দুধারে ছাগলের সংখ্যাওতো অনেক কিন্তু তাই বলে ছাগলের গলা জড়িয়ে ছবি তুলবি নাকি? ’ উল্লেখ্য ছাগলের সংখ্যা প্রচুর এবং তা নিয়ে কাহানীও ঘটে মাশাল্লাহ। হঠাৎ শুনলাম, ‘একটি ছাগল হারানো গিয়াছে...’ মাইকে এমনভাবে বলল যেন একজন এর বাচ্চা হারানো গেছে।
কবিগুরু রবি ঠাকুরের আস্তানায় গিয়ে হাজির হলাম। পুরানো আমলের বাড়ি সংস্কার করে ঠিকঠাক রাখার চেষ্টা আছে বোঝা গেলো। বাইরে বিশাল এক ব্যানারে তাকিয়ে আমার চক্ষু চরক গাছ। তাতে এদেশীয় একনেত্রী তার পিতা আর রবীন্দ্রনাথ এর ছবি (এটাই সাইজে সবচেয়ে ছোট) এক কাতারে। বাঙ্গালির লেজুড়বৃত্তির গোষ্ঠী উদ্ধার করে ছুটলাম বজরা দেখতে । সে বজরা পানিতে চলে না মডেল মাত্র। তাতে কি আমাদের উৎসাহ মরে, পাশেই পেয়ে গেলাম রবিঠাকুরের পুকুর । তাতে অদ্ভুত এক নৌযান তাকে নৌকা, স্পিডবোট না সাইকেল বলব বুঝে উঠতে পারলাম না। ঘোড়ায় চড়িয়া মর্দ হওয়ার প্রয়াস, বিখ্যাত কুলফি কিংবা কচি ডাব সবই চাখা হল। আফসোস কোন কৃষ্ণকলির দেখা পেলুম না কবিগুরু মত! এই জন্যেই আমাদের কবি হওয়া হয় না।গাড়িতে করে ঘুরে আরও জানতে পারলুম রবি ঠাকুর সব কথাই সঠিক বলেননি(যেমন: দেখবার যোগ্য লোকটি থাকলেও যোগ্য স্থানটি থাকে না) আমার মনে হল কখনো সখনো দেখবার যোগ্য স্থান থাকলেও একালে যোগ্য লোকের দেখা মেলে না। কি আর করা !
তারচেয়ে পদ্মার পাড়ে চল সময় কাটাই
পদ্মাতো বুড়িগঙ্গা নয় ভাই।
পদ্মার পাড়েঃ সর্বনাশা পদ্মা নদী অতি কাছ দেখে আমরা উৎফুল্ল এবং আনন্দিত, তবে ঝাপ দেয়ার ইচ্ছা নিবারণ করতেই হল। কাশবনের নিবিড় সমারোহে আখের খেতের ছায়ায় কুবের মাঝি হতে মন চায়। দীর্ঘশ্বাস আরও দীর্ঘ নাকরে লেগে গেলাম ফটো সেশনে। সত্যি পদ্মা চিরযৌবনা, উচ্ছল এবং জীবন্ত। এ নদীর কোন তুলনা নেই। কারণ জানতে না চেয়ে বরং ঘুরে আসুন।
কুষ্টিয়া এলে লালনের আখড়ায় না গেলে পাপ হবার সম্ভাবনা তবে তার আগে নিজের দেশের সীমান্ত দেখার বর্ণন দিব।
‘অনিকেত প্রান্তরে’ নামক আর্টসেলের ১৬ মিনিটের সুদীর্ঘ সংগীত চিরকাল যন্ত্রণাই দিয়েছে; কখনো মানে বুঝিনি,বোঝার চেষ্টাও করিনাই। ‘পেশাদার প্রতিহিংসা’ শব্দগুলোর মানেও স্পষ্ট, (পাশাপাশি দুটো আখখেত কিন্তু ওইপারেরটাতে দাঁড়ানোর সুযোগ মিলল না ) আমাদের সীমান্ত রক্ষীরা অতন্দ্র প্রহরীর মতন ,ঝড়-বৃষ্টিতে প্রিয়জন থেকে বহু বহু দূরে তাদের জননী জন্মভুমিকে পাহারা দিয়ে যান, সময়ের এপিটাফে আসলেই কি তাদের কথা লেখা থাকবে? ‘বৈকালিক বাতাসে’ সহযোগিতামুলক মনোভাবে মনেই হয় না কি টানটান উত্তেজনা ১৩১.০০ নং খুঁটির দুইপাশের মানব সম্প্রদায়ের মধ্যে। ‘নো-ম্যান্স ল্যান্ড’ বিষয়টা নিয়েও আলোকপ্রাপ্তি ঘটল এ সুযোগে!
কুষ্টিয়ার লালনের আখড়া ও তার আশেপাশে মনে হয় সারা বছরই উৎসবের পরিবেশ থাকে। যার চারিদিকে তাকালে মনে হয় ‘আনন্দের মেলা বসিছে’ , বৃথা ‘মনের মানুষ’ খোজার সাধনা। সুন্দর করে গোছানো , চারিদিকে বাগান, লালনের মিউজিয়াম-সবমিলিয়ে আখড়া শুনে যা ভেবেছিলাম তা নয়। লালনের ব্যবহৃত তৈজসপত্র ও তার সংগী সাথীদের ছবি-পরিচয়ে সাজানো মিউজিয়াম মোটের উপর মন্দ না।জীবনে প্রথমবারের মতন সত্যিকারের বাউলদের গান শুনলাম সামনাসামনি। দারুণ দারুণ সব গান ফেলে আমি ও আমার বন্ধুদের কেউ উঠতেই চাচ্ছিলো না। কিন্তু ‘সময় গেলে সাধন হবে না’; কখনো হয়ও না।আমাদেরও যেমন ঢাকায় ফেরার বাস ধরা দরকার ছিল । কিন্তু দর্শনার নদী, আখখেত, রাজহংসের রাজকীয় ভঙ্গীতে চলাফেরার চেয়েও যেটা মিস করব তা হলো মানুষের আথিতিয়তা । সমুদ্রের মতন হৃদয় নিয়ে যারা আমাদের অষ্টপান্ডবকে রীতিমত জামাই আদরে রেখেছেন তাদেরকে ধন্যবাদ দিয়েও বিব্রত করতে মন সায় দেয় না।
পরিশিষ্টঃ carew একজন ব্রিটিশ রমণির নাম। কারখানাখানা ব্রিটিশদের তৈরি সেতো বুঝতেই পারছেন। চিনি বানানোর কাজে প্রতিবছর কেনো এই সরকারি মালিকাধীন কোম্পানী লস (একমাত্র বৈধ ডিস্টলারি অবশ্য তাদেরি আর তাই মোটের উপর সামান্য লাভের মুখ দেখেন তারা; দেশ বিদেশে কেরুর তৈরী এই বস্তুর চাহিদাও নাকি অনেক ) করে তার কারণ উদ্ধার হলো আলাপে আলাপে। সবই নষ্ট রাজনীতির কুফল।কোম্পানীর সাড়ে তিন হাজার একর জমির অনেকটাই বেদখলে। কোম্পানীর প্রতি মায়াও হয়তো অনেক কম কারো কারো মধ্যে। সবমিলিয়ে সত্যিকারের বাংলাদেশের অনেকটাই প্রতিচ্ছবি।
কয়দিন ধইরা বড়োদিন উপলক্ষ্যে গুগল মামু একখান ডিম বাজারে ছেড়েছেন :P !! নাম esater egg. আচ্ছা আপনে প্রথমে GOOGLE এর হোম পেজে যান। এবার খেল শুরু করতে লিখেন, ‘LET iT snow’…… ব্যাস বরফ পড়া শুরু হয়ে যাবে। পুরা স্ক্রিন সাদা হয়ে যাবে। আরে রাখেন মিয়া খেল এখানেই শেষ না। চাইলে মাউসের লেফট সাইড টিপে ধরে বরফ সরাইতেও পারবেন !!(ছবিতে দেখুন )
তাহলে আরো কিছু মজার মজার আন্ডা দেখি তথা esater egg. দেখিঃ
২. ascii art লিখে গুগল লেখা টার দিকে তাকান, বুঝে যাবেন !!
৩. z or r twice মাথা ঘুরায়া দিবে হুম ।
৪. আগেরটার মতই আরেকটা হল do a barrel roll
৫. Tilt ছোট্ট এই শব্দটা কি করে দেখেন শুধু । আপনার GOOGLE পেজকে সামান্য বাকা করে দিবে কিন্তু এই জিনিস !!
৬. Hanukkah লিখলে সার্চ বক্সের নিচ বাত্তি জ্বলে উঠবে।
৭. santa claus এটাও আগেরটার মতই ।
আজকে এই গুলা নিয়া খেইল দেখেন। লাগলে কহিয়েন আরো দিমুনে।
হ্যাপি ঊইকেন্ড
বরফে ঢাকা গুগল !!!
মসজিদে জুতা রক্ষা:
মসজিদে জুতা হারান একটা নিত্য ঘটনা । জুতা চোর মহাশয় জুতা নিয়ে হাপিশ হইলে জুতার সাথে ইজ্জতও যায়। কারণ অনেক সময় খালে পায়ে আসতে হতে পারে।
কি করবেন??
আরে সেইজন্যেইতো আমি আছি। প্রথমেই খেয়াল করুন ,মসজিদে একাধিক জুতার বাক্স আছে। আমার টেকনিক খুবই সাধারণ ,আপনার দুই পাটি জুতা সম্পূর্ণ ভিন্ন বাক্সে রাখুন ।চোরের বাপের সাধ্য তথা সাহস নাই দুই বাক্স থেকে খুঁজে আপনার জুতা নিয়ে পালাবে। ওরতো জানের মায়া আছে নাকি বলেন!!
এতে করে সারা জীবনেও আপনার জুতা হারানোর সম্ভাবনা ১-২% এর বেশী না।
টিভির অনুষ্ঠানঃ
অনেকেই কাজ কর্ম না থাকলে বাসায় বসে বাংলাদেশের টিভি চ্যানেল দেখার চেষ্টা করেন। কিন্তু এডের জ্বালায় মাথার চুল ছিড়তে বাকি থাকে ।এড-ওয়ালারা ভুলে যায় যে, আপনার হাতে রিমোট আছে। কিন্তু অনেক সময় দুই তিনটা অনুষ্ঠান (বিশেষ করে ঈদের সময়) দেখতে গিয়ে খেই হারিয়ে ফেলেন তাইনা?? এসে গেছে সমাধান।
একখানা স্টপওয়াচ নেন।ধৈর্য ধরে এডের সময়টুকু মেপে ফেলেন। ব্যাস হয়ে গেল এড ক্যালিব্রেশন । আপনি অন্য চ্যানেলে নিশ্চিত চলে যান এন্ড যথা সময়ে ফিরে আসুন। মোক্ষলাভ নিশ্চিত।
মশককুলকে প্রতিরাত্তে গ্যালন গ্যালন রক্ত দিতে কোন আপত্তি আমার কোনকালেই ছিলনা। কিন্তু গায়ে আপসে সুই ফুটিয়ে রক্তদান ,ওরে বাবা !
কিন্তু হঠাৎ করেই ভ্যাম্পায়ারদের এক টি দলের খপ্পরে পড়ে গেলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকেই। তবে পাঠকদের কাছে এই ভাম্পায়ারদের পরিচয় দেবার আশা রাখছি, ভয় পাবেন না বোধকরি।
অথঃ ভ্যাম্পায়ার সমাচারঃ বাংলাদেশে স্বেচ্ছায় রক্তদাতাদের বিভিন্ন সংগঠণ আছে যার মধ্যে ' বাঁধন' অন্যতম। এর নিবেদিতপ্রাণ কর্মীরা অন্যের দেহের রক্তকে নিজের পৈত্রিক সম্পত্তির ন্যায় বিবেচনা করে তের সদ্গতির জন্য সদা তৎপর । এই বান্দাদের বিশেষত্ব হল এই যে তারা রক্ত নিয়ে ফ্রিজে রাখার ঝামেলায় যাবেন না, সোজা গরম গরম transfer করার ব্যবস্থা করে ক্ষান্ত হবেন।রক্ততো আর হটকেক না , আর তোরাও ব্যবসা করিস না বাপু।এদেরই এক কর্মী রক্তদানের বিনিময়ে রোগীর আত্মীয়দের কাছ থেকে সামান্য জলপান করতেও রাজি হননি , বরং বলেছেন- 'আপনার সাথে আমার কোন বাণিজ্য নাই! ' ( নামটা গোপন রাখলাম , সংগত কারণেই...) আর এভাবেই তারা বছরে হাজার হাজার ব্যাগ রক্ত সরবরাহ করে সাধরণ - অসাধারণ সবধরনের রোগীদেরকে।এহেন রক্তলোলুপ পোলাপাইনদের ভ্যাম্পায়ার না বলে উপায় আছে?
যাই হোক আমি অতোটা মহৎ নই।সুতরাং রক্ত চাইতে এলে মুখে কথা সরে না। ফস করে বলে বসি- ' ভাই,প্রথমবার রক্ত দিয়ে শারীরিক কোন ক্ষয়ক্ষতির শিকার না হলেও( আসলে নাদুস-নুদুস এই বান্দার সেই কথা বলার কন chane ই নাই) মানসিক problem হয়েছিল।' তবু বন্ধু ব. (মাইরের ভয়ে পুরা নাম চেপে গেলাম) একদিন গছিয়ে দিল ফিরোজ ভাইয়ের কাছে,কিছুক্ষণ ঘুমিয়ে থাকার ভান করলেও গুঁতা খেয়ে উঠতেই হল, ধানাই পানাই চলল না।
গন্তব্যস্থলঃ কোয়ান্টাম ফাউণ্ডেশ্ন।
ভাড়া ২৫ টাকা,যাব রিক্সায় ।
আরহী ত্রিরত্ন; আমি,ফিরোজ ভাই( এই কাহিনীর ভামপায়ার) এবং আরো একজন রক্তদাতা হাজী মহম্মদ মহসীন( সবুজ ভাই)।
' ক্যান্সারের রোগী,রক্ত দিয়ে লাভ কী? খেল খতম তো হবেই ।'
রিক্সায় এমন মনভাব পাত্তা পেলনা ।
খুব ভাবসাব নিয়ে নিয়ে ভিতরে ঢোকার পরে রীতিমত VIVA শুরু হল। কবার রক্ত দিয়েছি,রোগ-বালাই আছে কিনা,বিড়ি-তারি খাই কিনা,
অষুধ-পত্তর কি গিলছি ইত্যাদি ইত্যাদি। আরে বাপু , আমাকে দেখেও বুঝিস না এই বান্দা বিড়ি-তারি খাবার যোগ্য হয়ে উঠতে পারেনি। দুর্ভাগ্য ক্রমে কোন রোগ-বালাই নেই ,নইলে কি এ গেরোয় পড়ি! সে বান্দা হঠাৎ আর্কিমিডিস style এ বলে উঠল, আমার নাকি low-pressure ।আরে বাপু pressure কমতো কি হয়েছে, বাড়িয়ে নিতে কতোক্ষণ, compressor use কর, রক্ত নিবিই যখন, অত ঝামেলা কেনে বাপু।কিন্তু আমাকে ধরিয়ে দেয়া হল DRINKS হালকা সবুজাভ নীল বর্ণের মিষ্টি তরল পদার্থ।সবুজ ভাই সবুজ রং য়ের পানীয় না পেয়ে মন খারাপ করল বলে মনে হল, তবে গবেষ্ণায় ক্ষান্তি দিল না।chemical এর ছাত্র বলে কথা। বিস্তর গবেষণা করে জিনিসটাকে ' অজানা প্রকৃতি'র তরল বলে রায় দিলাম আমরা।
হঠাৎ মনে হল ,রক্ত,সেটাওতো আজানা প্রকৃতির তরল, অন্তঃত আমাদের মত আমজন্তার কাছে।বছর দুই -তিন আগে পাঠ্যবইয়ে কি পরেছি তা কি আর মনে আছে?ঈষৎ ক্ষারীয় লাল বর্নের তরল পদার্থ,শরীরের ভেতর ঘুরেফিরে দল খায় এর বেশী কিছু মনে নাই। কিন্তু এ ছাড়া যে কেউ বাঁচে না সেতো জানা কথা। তখোনি মনে পড়ল বাঁধনের স্লোগান-' একের রক্তে অন্যের জীবন,রক্তই গড়ে দেয় আত্মার বন্ধন'। ( অবশ্য অনেকে প্যারোডী করে বলে - 'অন্যের রক্তে আমাদের পুষ্টি,আমরা ভাম্পায়ারের গুষ্ঠী'!!!) যাইহোক ঠিকঠাক মত রক্ত দিয়ে হলে ফিরলাম পাঁচফুট মানুষ গর্বে দশ হাত হয়ে।
সবশেষে শুধু এই বলতে চাই, স্বেচ্ছা রক্তদান করে আপনি বাঁচাতে পারেন অসংখ্য মানুষকে।আপনার সামান্য সহানুভূতি যদি অন্তিম যাত্রীকে ভরসা যোগায় ,তবে কি আপনি মানব জন্ম সার্থক মনে করবেন না?
update: The unknown liquid is called spirulina, a kind of algae ! I was confirmed by one of my well-wisher later.