বিনোদ বর্মন
সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী| রোমান্টিক| অনুসন্ধানী
সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী| রোমান্টিক| অনুসন্ধানী
আমি বিনোদ বর্মন। ধরিত্রীর বুক চিরে এঁকেবেঁকে বয়ে চলা কংশ নদের পশ্চিম তীর ঘেরা পাঁচপাই গ্রামে কাটে আমার শৈশব।
আমার শৈশব-কৈশোরে ছিলো না কোন দুরুন্তপণা। বড়দের কাছ থেকে শুনেছি, আমি নাকি খুবই শান্ত-শিষ্ট স্বভাবের ছিলাম। ছোটবেলা থেকে আদর, ভালোবাসার কোন কমতি ছিল না। পরিবারের বড় ছেলে বলে কথা!!!
ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনার প্রতি বেশ মনযোগ ছিল।
একটা ভালো অভ্যাস ছিল আমার। আমি খুব কমই স্কুল কামাই করতাম। বিশেষ কোন কারণ না থাকলে প্রায় প্রতিদিনই স্কুলে যেতাম। আর ক্লাসে বেশিরভাগ সময়ই ফার্স্ট হতাম এজন্য শিক্ষকদেরও অনুপ্রেরণা এবং ভালোবাসা পেয়েছি সব সময়।
ছোটবেলার অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে আমার গাঁয়ের প্রতিটি বালুকনায়। বৃষ্টিতে বন্ধুদের সাথে ভেজা; বৈশাখের ঝড়ের দিনে আম কুঁড়ানো, মার্বেল খেলার মাঝে দিয়ে আমার কেটেছে শৈশব।
কৈশোর সময়টা জীবন থেকে দেখতে দেখতে পার হয়ে গেলো। কোন দুরন্তপণা আমাকে ছুঁতে পারে নি। পড়াশোনার ভেতর দিয়ে কিভাবে কৈশোর চলে গেলো টেরই পেলাম না।
স্কুল জীবনের অনেক অভিজ্ঞতা জমা আছে। সেগুলো বলে শেষ করা যাবে না। একটা স্মরণীয় ঘটনার আংশিক তুলে ধরছি:-
আমি তখন ক্লাস টেনে পড়ি। আমাদের স্কুলে তখন নির্বাচনী পরীক্ষা চলছিল। আর আমাদের স্কুলে গেলে নদী পার হয়ে যেতে হতো।
সময়টা বর্ষাকাল। নদী তখন কানায় কানায় পরিপূর্ণ। তাছাড়া নদীতে স্রোত ও ছিল খুব। সেদিন ছিল আমাদের শেষ পরীক্ষা। নদী পার হতে হলে ফেরি নৌকা দিয়ে পার হতে হতো। ছোট ছোট ফেরি নৌকা ছিল নদীতে। নদী পার হওয়ার জন্য ফেরিতে উঠলাম আমি এবং আমার কয়েকজন বন্ধু-বান্ধব। আমি নৌকার সামনের দিকে বসে দাঁড় টানছিলাম (মাঝে মাঝে শখের বশে দাঁড় টানতাম) যাতে তাড়াতাড়ি পার হয়ে যেতে পারি।
আমি নিয়ন্ত্রণ রেখে ধীরে ধীরে বাইতে লাগলাম। কিন্তু আমার একটা বান্ধবী আমাকে বললো, "কিরে তোর গায়ে কি আর জোর নেই নাকি?"☺️
এমন কথায় কার না শরীরে জেদ না উঠে?! আমি তখন আমার শরীরের সমস্ত শক্তি দিয়ে দাঁড় টান দিচ্ছি আর হঠাৎ করে দাঁড়ের রশি গেলো ছিড়ে আর আমি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সোজা গিয়ে পড়লাম পানিতে।
খরস্রোতা নদীতে আমি অনেকটা পানির নিচে চলে গিয়েছিলাম। পরে কয়েকজন মিলে আমাকে টেনে তুললো নৌকায়। আমিতো পানি খেয়ে একাকার আর সবাই আমাকে নিয়ে হাসতে শুরু করলো। সেদিন আমি ভিজা কাপড় নিয়েই পরীক্ষা দিয়েছিলাম।
স্কুলজীবনের সমাপ্তি ঘটিয়ে কলেজ জীবনে পা রাখলাম। ভর্তি হলাম নেত্রকোণা সরকারি কলেজে। প্রথমে এক কাকার বাসায় উঠেছিলাম। পরবর্তীতে মেস লাইফ শুরু করলাম। অনেকের সাথে এই সময়টাতে পরিচয় হয়। কলেজেও ফার্স্ট ইয়ারে বেশ কিছু বন্ধুর সাথে পরিচয় হয়।
সেকেন্ড ইয়ারে এক দিনও কলেজে ক্লাস করিনি। মেসে থেকেই পড়তাম, খেতাম আর ঘুমাতাম। এভাবে শেষ হয়ে গেলো দুইটা বছর।
অনার্স লাইফটা আমার জীবনের একটা গুরুত্বপূর্ণ সময়। এ সময়টা আমার জীবনের গতিপথ পাল্টে দিয়েছে। এই সময়টাতে আমি পেয়েছি কিছু প্রাণের বন্ধুত্ব যাদেরকে কোন দিনও ভুলা যাবে না।
আমার জীবনে প্রতিটি পদক্ষেপে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন আমার বাবা। তিনি আমার আদর্শ আমার গৌরব।
He is an ideal father. Always love and respect for these person!