Dr. Saran Ishika Maiti
Assistant Professor, Department of Statistics,
Siksha Bhavan, Visva-Bharati
Email: saran.ishika@visva-bharati.ac.in
Dr. Saran Ishika Maiti
Assistant Professor, Department of Statistics,
Siksha Bhavan, Visva-Bharati
Email: saran.ishika@visva-bharati.ac.in
নিরন্তর
একজন পরিসংখ্যানবিদ হিসেবে লেখাটা শুরু হোক পরিসংখ্যান দিয়েই। বিশ্বভারতীর শিক্ষা ভবন বা প্রাতিষ্ঠানিক পরিভাষায় সাইন্স ফ্যাকাল্টি তে মোট অধ্যাপিকার সংখ্যা সাকুল্যে সতেরো। এর মধ্যে গণিত বিভাগ অধ্যাপিকা শূন্য আর গণিতের সহোদর পরিসংখ্যান বিভাগে একা কুম্ভ একজন অধ্যাপিকা মাত্র। বাকি প্রত্যেকটি বিভাগেই এই সংখ্যা নামমাত্র দুই কি বড়জোর তিন। বিজ্ঞানের দুনিয়ায় মহিলাদের এহেন একাকীত্ব অতি সাধারণ ঘটনা, বিশেষত গণিতের দুনিয়ায় এই সংখ্যাটা বোধহয় আতশ কাঁচে ধরা পড়ে। একজন মহিলা গণিতজ্ঞ বা গবেষকের গোটা জীবনচর্যায় চলতে থাকে সংখ্যালঘুতার এই বিপন্নতা। আর পাঁচটা সাধারণ সংখ্যালঘু মানুষের মতোই মহিলা গণিতজ্ঞের প্রাত্যহিক জীবনে পরতে পরতে জড়িয়ে থাকে সমতুল্যপ্রমাণের আপ্রাণ প্রচেষ্টা তথা পূর্বনির্মিত সামাজিক ধারণার সঙ্গে হিসেবী আপোসের আত্মকথন।
মনে পড়ে যাচ্ছে ব্রিটিশ রসায়নবিদ রোজালিন্ড ফ্রাঙ্কলিন এর কথা, যিনি প্রথম ডিএনএ অণুর ডাবল হেলিক্স বা প্যাঁচালো গঠনের ধারণা দেন নিজের এক্স রে ফটোগ্রাফির মাধ্যমে। কিন্তু জীবদ্দশায় তার প্রাপ্য সম্মান তিনি পাননি। তাঁর আবিষ্কারের সূত্র ধরে ব্রিটিশ বিজ্ঞানীত্রয় জেমস ওয়াটসন, ফ্রান্সিস ক্রিক এবং মরিস উইলকিন্স, ১৯৬৪ সালে শারীরবিজ্ঞানে নোবেল লাভ করেন। রোজালিন্ড এর তোলা ফটো৫১ (recorded as photo51), ক্রিক ও ওয়াটসনকে ডিএনএ অণুর সম্ভাব্য আকৃতির ধারণা দেয়। এই গল্প এখন আমরা অনেকেই জানি কিন্তু যেটা হয়তো জানিনা তা হলো এই তিন নোবেল জয়ী তাঁদের এই বুদ্ধিমতী পূর্বসূরি মহিলা বৈজ্ঞানিককে কোন পকাঠিতে বিভিন্ন সময় মনে করেছেন। রোজালিন্ড লন্ডনের কিংস কলেজে উইলকিন্স এর সাথে কাজ করেছেন এবং গবেষণা সূত্রে কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটির ওয়াটসন ও ক্রিক এর সঙ্গেও তাঁর পরিচয় ছিল। ঘনিষ্ঠ পরিসরে উইলকিনস রোজালিন্ড সম্পর্কে বলেছিলেন ,"she barks often but does not succeed in biting me". এ কথা সত্য যে রোজালিন্ড কর্মক্ষেত্রে সর্বদাই স্বাধীন চিন্তাভাবনার প্রকাশ করতেন। প্রয়োজনে তর্ক করতেন এবং সবচেয়ে বড় কথা তিনি অমিশুকে ও রূঢ়ভাষী ছিলেন বরাবরই। সাজগোজের ব্যাপারে নারীসুলভ পারিপাট্য কমই ছিল তাঁর। বলাই বাহুল্য, উইলকিন্সের এহেন ভাষা বোধহয় রোজালিন্ডের বিজ্ঞানী সত্তার চেয়ে তাঁর সামাজিক অপারগতাকে বেশি প্রতিফলিত করে। পরবর্তী সময়ে ১৯৫১ সালে কিংস কলেজে রোজালিন্ডের কোন এক বক্তৃতায় শ্রোতা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ওয়াটসন, সেই অভিজ্ঞতা ভাগ করেছেন পরে এক চিঠিতে," momentarily I wondered how she would look if she took off her glass and did something novel with her hair". পাঠক লক্ষ্য করুন , একজন মহিলা সহকর্মীর বিজ্ঞানভিত্তিক গবেষণা পত্র শুনতে এসে আরেকজন বরিষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কোন নিক্তিতে তাঁর এই সহ বিজ্ঞানীকে বিচার করছেন। ২০১৫ সালে দি গার্ডিয়ান এর এক রিপোর্টে, ওয়াটসন ও ক্রিক এর পুরনো সাক্ষাৎকারের একটি অংশ জনমাধ্যমে প্রবল আলোড়ন তৈরি করে যেখানে সাংবাদিক জানাচ্ছেন ১৯৫৩ এপ্রিলে নেচার পত্রিকায় ওয়াটসন, ক্রিক এবং উইলকিন্সের ডিএনএ স্ট্রাকচারসংক্রান্ত যুগান্তকারী প্রবন্ধটি প্রকাশের পর লন্ডনের কিংস কলেজে উইলকিনস্ একটি সাফল্য উদযাপন পার্টির আয়োজন করেন। আশ্চর্যজনকভাবে, রোজালিন্ড সেই পার্টিতে ছিলেন না বুঝিবা আমন্ত্রিত হননি | তিনি তখন কিংস কলেজ ছেড়ে দিয়েছেন। পরবর্তীতে, বহু সাক্ষাৎকারে ওয়াটসন নিজের ত্রুটি মেনে নেন যে নেচারের ওই প্রবন্ধে ঋণ স্বীকার পর্বে রোজালিন্ডর অবদান উল্লেখ করা উচিত ছিল কিন্তু গবেষণাপত্র লেখার বা প্রকাশের আগে তাঁদের সেটা মনে ছিল না ("we forgot that"). শুধু রোজালিন্ড নন গত শতাব্দী জুড়ে বেশকিছু ঘটনা মহিলা বৈজ্ঞানিকদের সংখ্যালঘু লড়াই এর একক অংশীদারত্ব প্রমাণ করে। and preserving traditional Indian art forms. Pratima Devi made significant contributions to the field of rural reconstruction in India as she believed that traditional Indian art and culture could be used to promote social and economic development in rural areas.
এই লেখার দ্বিতীয় পর্বে উত্থাপনা করি জার্মান গণিতজ্ঞ এমিলিয়ে এমি ন্যটেরর কথা যিনি তাত্ত্বিক পদার্থবিদ্যার দুনিয়ায় এমি ন্যটের নামে বিখ্যাত।
১৮৮২ সালে জার্মানির নুয়েমবার্গ শহরে জন্মগ্রহণ করেন ন্যটের।১৯০৭ সালে পিএইচডি ডিগ্রী পান এরলাঙগেন ইউনিভার্সিটি থেকে। ন্যটেরস থিওরেম গাণিতিক উপায়ে প্রাকৃতিক সাম্য ও শক্তির সংরক্ষণ সূত্রের সম্পর্ক ব্যাখ্যা করে। আধুনিক পদার্থবিদ্যায় যেকোনো বস্তুর নির্দেশ তন্ত্র ও তাঁর সাম্য সংক্রান্ত সমীকরণ ন্যটেরস প্রথম উপপাদ্য বলে বিখ্যাত যা কিনা আধুনিক পদার্থবিদ্যা , বিশেষত কণা পদার্থবিদ্যার গাণিতিক ধারণাই এক ধাক্কায় অনেকখানি এগিয়ে দিয়েছিল। যে সময় ন্যটের একের পর এক যুগান্তকারী গাণিতিক সমাধান সূত্র আবিষ্কার করে চলেছেন, বলা ভালো আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতাবাদের অন্য এক তত্ত্ব উদ্ভাসে মগ্ন ঠিক সেই সময় বিখ্যাত গোটিনগেন বিশ্ববিদ্যালয় তিনি অধ্যাপনা করছেন বিনা পারিশ্রমিকে এবং অন্য আরেক পৃথিবী খ্যাত সহকর্মী গণিতজ্ঞ ডেভিড হিলবার্টের একজন সাধারণ সহকারী হিসেবে। কারণ গোটিনগেনে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মানুসারে , সেই সময় কোন মহিলা গণিত বিভাগের স্বাধীন অধ্যাপকের পদে নিযুক্ত হতে পারতেন না । অন্য কোন পুরুষ সহকর্মীর অধীনে তাঁকে কাজ করতে হতো। বস্তুত সেই সময় গণিত বিভাগে কোনো মহিলা ছাত্রীও ছিলনা। মাত্র একশ বছর আগেকার ঘটনা, ১৯১৫ তে ন্যটের গোটিনগেনে যোগদান করেন। এই সমস্ত অবমূল্যায়ন ন্যটেরকে বিন্দুমাত্র চঞ্চল করত না । তিনি অতি সাধারণ জীবন যাপনে বিশ্বাসী ছিলেন, হাসিখুশি নরম স্বভাবের এমিকে ছাত্ররা পছন্দ করত। যদিও মাঝেমধ্যে বিভাগীয় সভা গুলোতে সহকর্মীদের সাথে তাত্ত্বিক মতান্তর হলে রেগেও যেতেন। প্রায়শই নিজের ছোট্ট অ্যাপার্টমেন্টে ছাত্রদের ডেকে নিয়ে গাণিতিক আলোচনায় মেতে উঠতেন, সঙ্গে থাকতো নিজের হাতে তৈরি পুডিং।
গোটিনগেন ইউনিভার্সিটির বেশ কিছু অধ্যাপক ন্যেটারের এই উদার মেলামেশার বিরোধিতা করেন। কিছু জাতিগত ও ব্যক্তিগত কুৎসা অচিরেই ন্যটেরের নামে ছড়িয়ে পড়ে। এতদসত্ত্বেও ন্যাটের সমগ্র পরিস্থিতিতে নিজেকে স্থির রাখেন | ঘনিষ্ঠ মহলে তিনি বলতেন যে তিনি গণিতের পূজারী আর বাকি যা কিছুই তাঁর কাছে গুরুত্বহীন। ১৯৩৩ সালে জার্মানিতে নাৎসি পার্টি ক্ষমতায় এলে ইহুদি হওয়ার জন্য ন্যটারকে বরখাস্ত করা হয়। আইনস্টাইনের পরামর্শে তিনি আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি দেন ও পেনিসেলভেনিয়া রাজ্যের ব্রনমেয়ার কলেজের গণিত বিভাগের স্বাধীন অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন। ভালোবাসতেন হাঁটতে, পেনিসিলভ্যানিয়ায় থাকার সময় অবসর পেলেই মাইলের পর মাইল গ্রামের পথে হেঁটে চলতেন আবার পরিশ্রান্ত হয়ে পড়লে মাঠে ঘাসের ওপর বসে পড়তেন। অনেক সময় সঙ্গী হতো ছাত্ররা, হাঁটতে হাঁটতেই চলতো দীর্ঘ গাণিতিক আলোচনা। দুর্ভাগ্যজনকভাবে ,যুক্তরাষ্ট্রের আপাত উদারপন্থী আবহাওয়াতেও লিঙ্গভিত্তিক মন্তব্য বিদ্ধ করেছে তাঁকে, শুনতে হয়েছে তিনি পুরুষালি, তিনি অতিরিক্ত খোলামেলা ইত্যাদি। ব্যক্তিগত জীবনে একা থাকা নিয়ে সহকর্মীরা উৎসুকও হয়েছে। উল্লেখ করা যাক, তাঁর জীবনীকার ডিক আগস্টের মন্তব্য," even those who admired Noether judged her by different standards than they judged men, in USA too she was struggling against all odds.” প্রকৃতপক্ষে , স্বাধীন চিন্তার সোচ্চার বহিঃপ্রকাশ মানুষকে একা করে, কোথাও বা সংখ্যালঘিষ্ঠের নিরাপত্তাহীনতার দিকে ঠেলে দেয়, আর মেয়েদের ক্ষেত্রে এর মাত্রা আরো গভীর |
মাত্র ৫৩ বছর বয়সে জরায়ুর অস্ত্রোপচারজনিত জটিলতায় এই অসম্ভব প্রতিভাময়ী গণিতবিদের জীবনাবসান হয়। তাঁর মৃত্যুর পর নিউ ইয়র্ক টাইমসে আইনস্টাইনের শোকবার্তা প্রকাশিত হয় -"Noether was the most significant creative mathematical genius thus far produced since the higher education of women began". নিঃসন্দেহে প্রশংসা সূচক মন্তব্য তবুও কোথাও যেন বৈষম্যের সুর ধরা পড়ে, "since the higher education of women" নয়, এমি ন্যটের এর শ্রেষ্ঠত্ব লিঙ্গ নির্বিশেষে ,সর্বজনীন, সর্বকালীন |
১৮৮২ সালে জার্মানির নুয়েমবার্গ শহরে জন্মগ্রহণ করেন ন্যটের।১৯০৭ সালে পিএইচডি ডিগ্রী পান এরলাঙগেন ইউনিভার্সিটি থেকে। ন্যটেরস থিওরেম গাণিতিক উপায়ে প্রাকৃতিক সাম্য ও শক্তির সংরক্ষণ সূত্রের সম্পর্ক ব্যাখ্যা করে। আধুনিক পদার্থবিদ্যায় যেকোনো বস্তুর নির্দেশ তন্ত্র ও তাঁর সাম্য সংক্রান্ত সমীকরণ ন্যটেরস প্রথম উপপাদ্য বলে বিখ্যাত যা কিনা আধুনিক পদার্থবিদ্যা , বিশেষত কণা পদার্থবিদ্যার গাণিতিক ধারণাই এক ধাক্কায় অনেকখানি এগিয়ে দিয়েছিল। যে সময় ন্যটের একের পর এক যুগান্তকারী গাণিতিক সমাধান সূত্র আবিষ্কার করে চলেছেন, বলা ভালো আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতাবাদের অন্য এক তত্ত্ব উদ্ভাসে মগ্ন ঠিক সেই সময় বিখ্যাত গোটিনগেন বিশ্ববিদ্যালয় তিনি অধ্যাপনা করছেন বিনা পারিশ্রমিকে এবং অন্য আরেক পৃথিবী খ্যাত সহকর্মী গণিতজ্ঞ ডেভিড হিলবার্টের একজন সাধারণ সহকারী হিসেবে। কারণ গোটিনগেনে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মানুসারে , সেই সময় কোন মহিলা গণিত বিভাগের স্বাধীন অধ্যাপকের পদে নিযুক্ত হতে পারতেন না । অন্য কোন পুরুষ সহকর্মীর অধীনে তাঁকে কাজ করতে হতো। বস্তুত সেই সময় গণিত বিভাগে কোনো মহিলা ছাত্রীও ছিলনা। মাত্র একশ বছর আগেকার ঘটনা, ১৯১৫ তে ন্যটের গোটিনগেনে যোগদান করেন। এই সমস্ত অবমূল্যায়ন ন্যটেরকে বিন্দুমাত্র চঞ্চল করত না । তিনি অতি সাধারণ জীবন যাপনে বিশ্বাসী ছিলেন, হাসিখুশি নরম স্বভাবের এমিকে ছাত্ররা পছন্দ করত। যদিও মাঝেমধ্যে বিভাগীয় সভা গুলোতে সহকর্মীদের সাথে তাত্ত্বিক মতান্তর হলে রেগেও যেতেন। প্রায়শই নিজের ছোট্ট অ্যাপার্টমেন্টে ছাত্রদের ডেকে নিয়ে গাণিতিক আলোচনায় মেতে উঠতেন, সঙ্গে থাকতো নিজের হাতে তৈরি পুডিং।
গোটিনগেন ইউনিভার্সিটির বেশ কিছু অধ্যাপক ন্যেটারের এই উদার মেলামেশার বিরোধিতা করেন। কিছু জাতিগত ও ব্যক্তিগত কুৎসা অচিরেই ন্যটেরের নামে ছড়িয়ে পড়ে। এতদসত্ত্বেও ন্যাটের সমগ্র পরিস্থিতিতে নিজেকে স্থির রাখেন | ঘনিষ্ঠ মহলে তিনি বলতেন যে তিনি গণিতের পূজারী আর বাকি যা কিছুই তাঁর কাছে গুরুত্বহীন। ১৯৩৩ সালে জার্মানিতে নাৎসি পার্টি ক্ষমতায় এলে ইহুদি হওয়ার জন্য ন্যটারকে বরখাস্ত করা হয়। আইনস্টাইনের পরামর্শে তিনি আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি দেন ও পেনিসেলভেনিয়া রাজ্যের ব্রনমেয়ার কলেজের গণিত বিভাগের স্বাধীন অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন। ভালোবাসতেন হাঁটতে, পেনিসিলভ্যানিয়ায় থাকার সময় অবসর পেলেই মাইলের পর মাইল গ্রামের পথে হেঁটে চলতেন আবার পরিশ্রান্ত হয়ে পড়লে মাঠে ঘাসের ওপর বসে পড়তেন। অনেক সময় সঙ্গী হতো ছাত্ররা, হাঁটতে হাঁটতেই চলতো দীর্ঘ গাণিতিক আলোচনা। দুর্ভাগ্যজনকভাবে ,যুক্তরাষ্ট্রের আপাত উদারপন্থী আবহাওয়াতেও লিঙ্গভিত্তিক মন্তব্য বিদ্ধ করেছে তাঁকে, শুনতে হয়েছে তিনি পুরুষালি, তিনি অতিরিক্ত খোলামেলা ইত্যাদি। ব্যক্তিগত জীবনে একা থাকা নিয়ে সহকর্মীরা উৎসুকও হয়েছে। উল্লেখ করা যাক, তাঁর জীবনীকার ডিক আগস্টের মন্তব্য," even those who admired Noether judged her by different standards than they judged men, in USA too she was struggling against all odds.” প্রকৃতপক্ষে , স্বাধীন চিন্তার সোচ্চার বহিঃপ্রকাশ মানুষকে একা করে, কোথাও বা সংখ্যালঘিষ্ঠের নিরাপত্তাহীনতার দিকে ঠেলে দেয়, আর মেয়েদের ক্ষেত্রে এর মাত্রা আরো গভীর |
মাত্র ৫৩ বছর বয়সে জরায়ুর অস্ত্রোপচারজনিত জটিলতায় এই অসম্ভব প্রতিভাময়ী গণিতবিদের জীবনাবসান হয়। তাঁর মৃত্যুর পর নিউ ইয়র্ক টাইমসে আইনস্টাইনের শোকবার্তা প্রকাশিত হয় -"Noether was the most significant creative mathematical genius thus far produced since the higher education of women began". নিঃসন্দেহে প্রশংসা সূচক মন্তব্য তবুও কোথাও যেন বৈষম্যের সুর ধরা পড়ে, "since the higher education of women" নয়, এমি ন্যটের এর শ্রেষ্ঠত্ব লিঙ্গ নির্বিশেষে ,সর্বজনীন, সর্বকালীন |
রোজালিন্ড ফ্রাঙ্কলিন ও এমি নটারের পথ অনুসরণ করে আজ মেয়েরা বিজ্ঞান চর্চায় তথা গণিত চর্চায় অনেকখানি এগিয়ে এসেছে বটে, তথাপি প্রচলিত আর্থসামাজিক ঘেরাটোপের বাইরে গেলেই বিভিন্ন মানসিক ও বাহ্যিক সংঘাতের সৃষ্টি হয়
মহিলাদের বিজ্ঞান সাধনায়। হতেই পারে সংখ্যালঘু সেই লড়াই একটি নারীর একক যাত্রা, নিজস্ব প্রত্যাঘাত কিন্তু এই ব্যক্তিগত যাত্রার সমষ্টিই একটা বিশেষ সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর উত্থানের বিরল ইতিহাস রচনা করে।
শুরুর মতো এই প্রবন্ধের ছেদ টানি আবারও পরিসংখ্যান দিয়ে । আমাদের শিক্ষা ভবনের ছাত্রী সংখ্যা বর্তমানে মোটামুটি ৬৫৫ বা ৬৫৬ যা কিনা মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যার প্রায় ৩৭ শতাংশ। এই সংখ্যার দিকে তাকালে মনে হয় নিশ্চয়ই এই মেয়েদের অন্তত কিছু অংশ ভবিষ্যতে উচ্চতর বিজ্ঞান/ গণিত সাধনায় ব্রতী হবে, একলা পথে নেমে আরও কিছুজনের পথপ্রদর্শক হবে । অনিশ্চয়তার বিহ্বলতা তাদের পিছপা করবে না।
ঋণ স্বীকার:
August Dick, Emmy Noether, 1882-1935. Translated by Heidi I Blocher(1981), available in online archive.
Maddox, Brenda (2003). “The double helix and the 'wronged heroine'” Nature. 421 (6921): 407-408.
Sexism in science: “did Watson and Crick really steal Rosalind Franklin’s data?” The Guardian, 23rd June 2015 article by Matthew Cobbler.
Siddhartha Mukherjee (2016). The Gene: An intimate history . Scribner, USA.
Wikipedia