মূলত শিক্ষক-শিক্ষার্থীকেন্দ্রিক শিক্ষা প্রাতিষ্ঠানিক পরিবেশে পরিচালিত হয়ে থাকে। আধুনিককালে শিখন-শেখানো কার্যক্রমে শুধু বিষয়ভিত্তিক জ্ঞান অর্জন করলে হয় না। মানসম্মত ও যুগোপযোগী শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনায় কতগুলো বিষয়ে দক্ষতা ও কৌশল অবলম্বন করতে হয়, যা সামগ্রিকভাবে শিক্ষার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। মানুষের জীবন যেমন ডায়নামিক বা চলমান, তেমনি শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনাও সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিভিন্ন রূপ ধারণ করেছে। বর্তমান সময়ে শিক্ষা ক্ষেত্রে এরকম একটি সংশ্লিষ্ট ও প্রাসঙ্গিক বিষয় হল, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি।
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা যায়, পঠন দক্ষতা উন্নয়নে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সমন্বয় ঘটিয়ে প্রমিত উচ্চারণ শেখা ছাড়াও পড়ার আগ্রহ তৈরিতে আইসিটি কার্যক্রম ভূমিকা রাখতে সক্ষম হচ্ছে। মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুমে শিশুরা খুশিমনে শেখে। মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম ব্যবহারের মাধ্যমে গতানুগতিক শিক্ষককেন্দ্রিক শিক্ষাকার্যক্রমকে শিক্ষার্থীকেন্দ্রিক আনন্দময় শিক্ষায় রূপান্তর করা হয়েছে।
বর্তমান যুগ ডিজিটাল যুগ। ডিজিটালাইজেশনের এ যুগে শুধু বক্তৃতা পদ্ধতি অনুসরণ না করে অংশগ্রহণমূলক পদ্ধতি, পর্যবেক্ষণ পদ্ধতি, আলোচনা পদ্ধতিসহ বিভিন্ন পাঠ উপযোগী পদ্ধতি ও সঠিক উপকরণ ব্যবহার করে এবং ডিজিটাল কনটেন্টের মাধ্যমে মাল্টিমিডিয়া দ্বারা পাঠদান করা হলে পাঠের শিখন ফল অর্জন সহজ ও অধিকতর স্থায়ী হয়। বিভিন্ন শিখন-শেখানো পদ্ধতির মধ্যে প্রদর্শন পদ্ধতি একটি অত্যন্ত যুগোপযোগী ও কার্যকর শিক্ষণ পদ্ধতি।
শিক্ষার্থীদের একবিংশ শতকের দক্ষ জনগোষ্ঠী হিসেবে গড়ে তুলতে শিক্ষা ক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তির সমন্বয় ঘটানোর কোনো বিকল্প নেই। আধুনিক শিক্ষা বিজ্ঞানের এ প্রত্যাশা পূরণের ক্ষেত্রে আমাদের দেশে সত্যিকার অর্থে শিক্ষার প্রধান শক্তিশালী হাতিয়ার হল আইসিটি। এমডিজি অর্জনে প্রাথমিক শিক্ষায় আইসিটির ব্যবহার বাংলাদেশের ব্যাপক সাফল্য নিশ্চিত করেছে। এসডিজিতেও সরকার মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষার প্রতি অপরিসীম গুরুত্ব দিয়েছে এবং ব্যাপক কার্যক্রম গ্রহণ করেছে।
প্রাথমিক শিক্ষার লক্ষ্য হচ্ছে, শিশুর শারীরিক, মানসিক, সামাজিক, নৈতিক, মানবিক, নান্দনিক, আধ্যাত্মিক ও আবেগিক বিকাশ সাধন এবং তাদের দেশাত্মবোধে, বিজ্ঞানমনস্কতায়, সৃজনশীলতায় ও উন্নত জীবনের স্বপ্নদর্শনে উদ্বুদ্ধ করা।
প্রাথমিক শিক্ষার উক্ত লক্ষ্য পূরণে আইসিটি হতে পারে অন্যতম সহায়ক। আইসিটিকে পাশ কাটিয়ে বা অবহেলা করে আধুনিক বা মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত সম্ভব নয়।
বর্তমান যুগ আইসিটি’র যুগ। সারা বিশ্বব্যাপী আইসিটি ব্যবহারের ক্ষেত্র দিন দিন সম্প্রসারিত হচ্ছে। মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিতে আইসিটি’র ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাই প্রাথমিক শিক্ষায় শতভাগ আইসিটি’র ব্যবহার এখন সময়ের দাবি।
বর্তমান সময়ে আইসিটি’র এই গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তাকে প্রাধান্য দিয়ে প্রাথমিক শিক্ষায় আইসিটি’র ব্যবহার নিশ্চিতে সরকার নানা পদক্ষেপ ও কর্মকাণ্ড বাস্তবায়ন করছে।
প্রাথমিক শিক্ষার উদ্দেশ্যের মধ্যেও পরোক্ষ এবং প্রত্যক্ষভাবে আইসিটি ব্যবহারের গুরুত্ব সম্পর্কে উল্লেখ রয়েছে। যেমন; বলা হয়েছে, বিজ্ঞানের নীতি-পদ্ধতি ও প্রযুক্তির জ্ঞান অর্জন, সমস্যা সমাধানে এর ব্যবহার এবং বিজ্ঞানমনস্কতায় ও অনুসন্ধিৎসু করে গড়ে তুলতে সহায়তা করা এবং ভাষা ও যোগাযোগ দক্ষতার বিকাশ এবং নিজেকে প্রকাশ করতে সহায়তা করা। কাজেই, মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতে আইসিটি ব্যবহারের গুরুত্ব অপরিসীম।
শিশু শিক্ষার্থীদের একঘেয়েমি দূর করতে মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে পাঠ উপস্থাপন হতে পারে অন্যতম ভালো উপায়। এর মাধ্যমে পাঠদান করলে পাঠ হয় আনন্দদায়ক, স্থায়ী এবং আকর্ষণীয়।
প্রাথমিক শিক্ষার লক্ষ্য-উদ্দেশ্যের সফল বাস্তবায়ন নির্ভর করে শ্রেণি কার্যক্রম মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে কিনা তার ওপর। তাই উন্নত বিশ্বের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাংলাদেশের প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই আইসিটি’র ব্যবহার নিশ্চিতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর একযোগে কাজ করছে।
এরই ধারাবাহিকতায়, গত এক দশকে আমাদের প্রাথমিক শিক্ষায় আইসিটি’র ব্যবহার এ খাতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে। শিক্ষাক্ষেত্রে আইসিটি’র ব্যবহার যে শিক্ষাকে টেকসই এবং মানসম্মত পর্যায়ে পৌঁছায় এটাই তার আদর্শ প্রমাণ।
আইসিটি যেমন আমাদের জীবনমান উন্নত করছে, তেমনি আমাদের শিক্ষার্থীদের আধুনিক বিশ্বের যোগ্য ও স্মার্ট নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে সাহায্য করছে।
শিক্ষা ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার এই বিষয় সম্পূর্ণ জ্ঞান অর্জনের জন্য অবশ্যই আপনাকে পুরো পোস্টটি ভালোভাবে পড়তে হবে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি হচ্ছে এমন একটি মাধ্যম যেটি ছাড়া বর্তমান এর আধুনিক পৃথিবী সম্পূর্ণ অচল।
মানব সমাজ প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহার করে থাকে এবং শিক্ষাক্ষেত্র হচ্ছে সেগুলোর মধ্যে অন্যতম।
শিক্ষা ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ৫টি ব্যবহার, নিচে উল্লেখ করা হলো:
অনলাইনের মাধ্যমে PDF আকারে যেকোনো বই দ্রুত সংগ্রহ করা সম্ভাব।
শিক্ষায় মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর ব্যবহার করে শিক্ষার্থীর মনোযোগ আকর্ষণ।
বিনা পরিশ্রমে ঘরে বসে উচ্চ মানের শিক্ষা গ্রহন সম্ভব।
শিক্ষা বিষয়ক সকল আপডেট ও ভালো পরামর্শ পাওয়া সম্ভব।
যেকোনো সময় রেকর্ডেট ক্লাস ও শিক্ষা গ্রহন করা সম্ভব।
আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির রয়েছে নানা প্রকার ব্যবহার, প্রয়োজনীয়তা ও সুবিধা। তবে এখানে আমি কিছু গুরুত্বপূর্ণ পাঁচটি ব্যবহার নিয়ে আলোচনা করেছে যা অনেক বেশি ব্যবহৃত হয় শিক্ষাক্ষেত্রে।
শিক্ষা ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির কাজ এত বেশি হওয়ার মূল কারণ হলো ডিজিটাল ধারণা ও ডিজিটাল পৃথিবী। সকল কিছুর জ্ঞান তুচ্ছ করে তোলার জন্য এবং যেকোনো তথ্য হায়দার নাগালে পাওয়ার জন্য তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহৃত হয় শিক্ষা ক্ষেত্রে।
আমরা শিক্ষাক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিভিন্ন প্রকার সুযোগ সুবিধা উপভোগ করে থাকে এবং জ্ঞান অর্জন করি।
খোঁজ নিতে গেলে দেখা যাবে অসংখ্য সুযোগ সুবিধার কথা উল্লেখ আসবে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি শিক্ষা ক্ষেত্রে ব্যবহারের ফলে।
শিক্ষা ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সুবিধা কি কি তা নিচে উল্লেখ করা হলো:
যে কোন প্রশ্নের সমাধান দ্রুত অনলাইন থেকে পাওয়া যায়।
অনলাইন ক্লাসের মাধ্যমে যাতায়াতের সময় অপচয় রোধ হয়।
বড় বড় কলেজ ও ইউনিভার্সিটির শিক্ষকদের নিকট হতে শিক্ষা গ্রহণ করা যায়।
যেকোনো ধরনের প্রয়োজনীয় বই সমূহ দ্রুত সংগ্রহ করা যায়।
প্রয়োজন অনুযায়ী যেকোনো বিষয় দ্রুত দক্ষতা বৃদ্ধি করা যায়।
উপরে আমি শুধুমাত্র কয়েকটি সুবিধা নিয়ে আলোচনা করেছি শিক্ষা ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি। তবে বলে নেই এমন অসংখ্য সুযোগ সুবিধার কথা উল্লেখ আসবে যদি আমরা জানতে চাই তাহলে শিক্ষাক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির নিয়ে।
দিন দিন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির কাজ ও ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং সেই সাথে বৃদ্ধি পাচ্ছে এর চাহিদা।
তবে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সবচেয়ে প্রয়োজনীয় দিক ও শিক্ষার্থীর জন্য প্রয়োজনীয় হচ্ছে শিক্ষা ক্ষেত্রে এর ব্যবহার। আর শিক্ষা ক্ষেত্রে এই প্রযুক্তি আমরা নানাভাবে ব্যবহার করে থাকি বিভিন্ন জ্ঞান ধারণ, লাভ ও বিশ্লেষণ করতে।
শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য এবং শিক্ষার্থীদের যাবতীয় জ্ঞান অর্জনে অনুপ্রেরণা দিতে তথ্য প্রযুক্তির ভূমিকা অপরিসীম।
হাতের নাগালে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার করতে পেরে শিক্ষার্থীরা অনেক বেশি অনুপ্রেরিত হয়েছে শিক্ষা অর্জন করার বিষয়।
যদিও ভাই এর কিছু খারাপ দিক রয়েছে তবুও সবচেয়ে বেশি ভালো দিক লক্ষ্য করা যায় তথ্য প্রযুক্তির শিক্ষা ক্ষেত্রে। যারা ভাল ছাত্র এবং নিজের জীবন অযথা নষ্ট করতে চায় না তারা অবশ্যই কোন প্রকার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির অপব্যবহার করবে না এবং সঠিক ব্যবহার করবে।
M19704
M20735
M20736
M20727
M20728