নমস্কার শ্রোতাবন্ধুরা, "গল্প-কথার আসর"-এর আজকের বৈঠকে যোগদান করার জন্য অশেষ ধন্যবাদ । আমি রাজীব ঘোষ । আজকের পাঠ, শিবরাম চক্রবর্তী-র একটি হাসির গল্প ।
হাসির রাজা শিবরাম চক্রবর্তী-র সাহিত্য প্রতিভা নিয়ে কথা বলা হয়তো আমার পক্ষে ধৃষ্টতা হবে । তাঁর অমর সৃষ্টির হাত ধরে আমরা অনেকেই বড় হয়েছি । শিবরাম জন্মেছিলেন রাজকুলে, চঞ্চল রাজবাড়ি পরিবারে । তবে তাঁর জন্ম কিন্তু কলকাতাতে, ১৩ ডিসেম্বর ১৯০৩ সালে তাঁর মামাবাড়িতে দর্জিপাড়ার নয়ন দেব স্ট্রীটে । ছাত্রাবস্থায় স্বদেশী করতে গিয়ে তাঁর ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষায় বসা হয়নি, কিন্তু তিনি নিজে ছিলেন নিজের শিক্ষক । যৌবনে আনন্দবাজার আর দৈনিক বসুমতীতে নিয়মিত ফীচার লিখে জীবিকা নির্বাহ করতেন । ছিলেন কবিও । পরবর্তী কালে তিনি বাংলা ভাষায় নিয়ে আসেন এক নতুন ঘরানাকে - শব্দের বিভিন্ন অর্থে ব্যবহার - যাকে পরিভাষায় বলে "পান্" । এই শিবরামকে নিয়েই আমাদের বড় হয়ে ওঠা । তাঁর কাছে থেকেই এই কৌতুকজ্ঞানের শিক্ষা আমাদের ।
আজীবন অবিবাহিত শিবরাম থাকতেন কলকাতার এক ভাড়া বাড়িতে । এক সময় কলকাতার মেসে তাঁর সাথে সময় কাটিয়েছিলেন প্রেমেন্দ্র মিত্র, শিবরাম তাঁর ঘনাদা-র গল্পের "শিবু" হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন । সাহিত্যিক জীবনে প্রায় ১৫০-টি বই লিখেছেন শিবরাম । কে ভুলতে পারে তাঁর হর্ষবর্ধন, আর তাঁর ছোটো ভাই গোবর্ধনের সেই সব বিখ্যাত কর্মকান্ড । সেই সব গল্পে শিবরাম নিজেও একজন চরিত্র ছিলেন । জীবনের শেষ অধ্যায়টা তাঁর কেটেছে অর্থকষ্টে । পশ্চিমবঙ্গ সরকার তাঁর জন্য একট মাসোহারার বন্দোবস্ত করে দিয়েছিলেন । ১৯৮০ সালের ২৮-এ আগস্ট তাঁর মৃত্যুতে বাংলা সাহিত্য হারায় এক হাস্য কৌতুকের রাজাকে, খোদ রাজ বাড়িতে জন্ম হলেও যিনি জীবন কাটাননি রাজার মতো - অথচ পাঠকদের মনের মণিকোঠায় তিনি রাজত্ব করেছেন কালোত্তীর্ণ ভাবে ।
আজকের পাঠ, শিবরাম চক্রবর্তী-র হাসির গল্প, "হাতির সঙ্গে হাতাহাতি" ।