নমস্কার শ্রোতা বন্ধুরা। গল্প কথার আসরের আজকের অনুষ্ঠানে যোগদানের জন্য আপনাদের অশেষ ধন্যবাদ। আমি রাজীব ঘোষ।
আজকে আপনাদের কাছে নিয়ে আসব আরো এক দিকপাল সাহিত্যিকের সাহিত্য কর্ম। তাঁর নাম মনোজ বসু। দুই বিশ্ব যুদ্ধের মধ্য বর্তিকালীন কথাশিল্পী মনোজ বসুর জন্ম ১৯০১ সালের ২৫শে জুলাই। পৈতৃক বাসভূমি যশোরের ডঙ্গাঘাটা গ্রামে। তাঁর পিতার সাহিত্য চর্চা ছিল তাঁর লেখক হওয়ার পথের পাথেয়। কিন্তু আট বছর বয়সেই পিতৃহীন হন তিনি। তারপর কলকাতা হল তাঁর বাসস্থান। মহাত্মা গান্ধীর অসহযোগ আন্দোলনের ডাক এ পড়াশোনা মুলতুবি রেখে দেশের কাজে যোগদান করেন। পরবর্তী কালে কলকাতার সাউথ সাবার্বান স্কুলে শিক্ষকতা করতে যোগ দেন অর্থ সংকট থেকে মুক্তি পেতে। ১৯৩২ থেকে ১৯৩৬ এর মধ্যে তিনি তাঁর সাহিত্য কর্মের জন্যে খ্যাতির অধিকারী হন।
যদিও সময়কাল বিচারে মনোজ বসু ছিলেন কল্লোল যুগের সাহিত্যিক কিন্তু চরিত্র ধর্মে তিনি ছিলেন বিপরীত প্রান্তের লেখক। মনে প্রাণে গ্রামীণ। গ্রামীণ ঐতিহ্যে বিশ্বাসী। অচিন্ত্য কুমার সেনগুপ্ত তাঁর সম্বন্ধে বলেছেন যে, সভ্যতার কৃত্রিমতায় কল্লোল দেখেছে ট্রাজেডি, প্রকৃতির পরিবেশে মনোজ দেখেছে মানুষের স্বাভাবিকতা। তবে তিনি বিভূতিভূষণের মত প্রকৃতিপ্রাণ নন, মনোজ বসুর রচনা তাই সাহিত্যিকের নির্লিপ্ততা নয়; স্রষ্টার আনন্দই সেখানে প্রধান। তার বিশিষ্ট উপন্যাস গুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল "নিশিকুটুম্ব", "বন কেটে বসত", "বকুল", "আমার ফাঁসী হল", ইত্যাদি। ১৯৬৬ সালে "নিশিকুটুম্ব" উপন্যাসের জন্যে তিনি সাহিত্য অ্যাকাডেমি পুরস্কার পান। বেঙ্গল পাবলিশার্স নামক অতি পরিচিত প্রকাশনী সংস্থাটিও তিনি স্থাপন করেন। ২৭শে ডিসেম্বর ১৯৮৭ সালে মনোজ বসুর প্রয়াণ ঘটে।
আজ পাঠ করবো, মনোজ বসুর একটি ছোট গল্প, "লাল চুল" ।