নমস্কার শ্রোতা বন্ধুরা। গল্প কথার আসরের আজকের অনুষ্ঠানে যোগদানের জন্য আপনাদের অশেষ ধন্যবাদ। আমি রাজীব ঘোষ।
বুদ্ধদেব গুহ। বাংলা সাহিত্যের এই নামটির সাথে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেবার প্রয়োজন বোধয় নেই কোন বাঙ্গালীর কাছেই। বাংলা সাহিত্যের যে যুগটিকে আমরা এখনো সে ভাবে ছুঁই নি সেই উনিশশো সত্তর থেকে দু হাজার সাল পর্যন্ত বাংলা সাহিত্যের এক জনপ্রিয় মহীরুহ হলেন বুদ্ধদেব গুহ। তাঁর জন্ম ১৯৩৬ সালের ২৯শে জুন। ২০২১ সালের ২৯ আগস্ট তাঁর প্রয়াণ।
এই পঁচাশি বছরের জীবনে বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী এই মানুষটি রেখে গেছেন বাংলা সাহিত্য সম্ভারে অতুল অবদান। একাধারে তিনি ছিলেন প্রতিষ্ঠিত সঙ্গীতশিল্পী, চিত্রশিল্পী এবং পেশাগত ভাবে চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট। তাঁর সৃষ্টি করা ঋজুদা-র চরিত্র যেমন কৈশোরে আমাদের অ্যাডভেঞ্চার এর স্বপ্ন দেখিয়েছে, তেমনি প্রাপ্ত বয়স্ক হবার পরে "মাধুকরী"-র রিভু জাগিয়েছে রোমান্টিকতা। বুদ্ধদেব গুহর মৃত্যুর ঠিক পরেই আমি তাঁর একটি শেষ দিকের লেখা ঋজুদা-র গল্প "যমদুয়ারে" পাঠ করেছিলাম। শ্রোতা বন্ধুরা, যদি আপনারা শুনতে ইচ্ছুক থাকেন ও আগে না শুনে থাকেন, আমাদের পডকাস্ট লাইব্রেরী খুঁজে দেখবেন।
আজ যে গল্পটি পাঠ শুরু করবো এটি ঋজুদা-র প্রথম উপন্যাস বা বড় গল্প। এটির প্রথম প্রকাশ কাল ১৯৭৩ সালের এপ্রিল মাসে। এই গল্পে এক কিশোরের চোখ দিয়ে লেখক পূর্ব ভারতের জঙ্গল কে মূর্ত করে তুলেছেন পাঠকের চোখের সামনে। আবার ঋজুদা-র চরিত্রটিকেও পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন। ঋজুদা-র সমস্ত পূর্ব কথা জানা না গেলেও, তাঁর এক ব্যর্থ হৃদয় ঘটিত আখ্যানের ও আভাস দিয়েছেন। ঋজুদা হয়ত এইখানেই রক্ত মাংসের একজন মানুষ হয়ে ওঠে বয়ঃসন্ধিক্ষণের কোন কিশোর মনের কাছে। এই গল্পে শিকার আছে, প্রয়োজনের তাগিদে, আনন্দের উপকরণ হিসেবে নয়। শ্রোতা বন্ধুরা, আমরা অকারণে এবং নির্বিচারে পশু পক্ষী হত্যা ও তাদের ক্ষতি করার ঘোর বিরোধী। এই কাহিনী টি শুনতে শুনতে আপনারাও উপলব্ধি করবেন যে লেখক ও তাই। ঋজুদা-র কথায়, তার সাবধানী বাণীতে তাই বার বার সেই সচেতনতার কথা ফিরে ফিরে এসেছে।
এই কথা বলে, এবারে গল্প পাঠে যাই। শুরু করছি পাঠ, বুদ্ধদেব গুহ র ঋজুদা-র শিকার অ্যাডভেঞ্চার উপন্যাস "ঋজুদার সাথে জঙ্গলে" ।