Rajib and Rudra converse about the significance of the month of May for Bengali litterateurs, and talk briefly of the life and literature of Premendra Mitra. Released May 2nd, 2021. Episode 61 of Season Two.
রাজীবঃ নমস্কার শ্রোতাবন্ধুরা, গল্প-কথার আসরের আজকের বৈঠকে যোগদানের জন্য আপনাদের অশেষ ধন্যবাদ । আমি রাজীব ঘোষ ।
রুদ্রঃ আর আমি রুদ্র দত্ত ।
রাজীবঃ মে মাস এসে গেলো এরই মধ্যে । বছরটা কি তাড়াতাড়িই না যাচ্ছে - তাই না রুদ্র ?
রুদ্রঃ ঠিক বলেছিস । ২০২০-র বিভীষিকা কাটানোর জন্য মনে হচ্ছে আমরা সবাই প্রায় তড়িৎ গতিতে স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে পৌঁছনোর চেষ্টা করে চলেছি । বছরও তাই প্রায় দৌড়চ্ছে ।
রাজীবঃ ভালো বলেছিস । মে মাসটা কিন্তু বেশ তাৎপর্যপূর্ণ মাস । শুরু হয় মে দিবস দিয়ে । তার পর একে একে বেশ কিছু তারিখ আসে যার নানা ঐতিহাসিক গুরুত্ব আছে ।
রুদ্রঃ যেমন ধরা যাক দোসরা মে । সত্যজিৎ রায়ের জন্মদিন । এবারে তো তাঁর জন্ম-শতবার্ষিকী ।
রাজীবঃ তার পরে সাতই মে হলো পঁচিশে বৈশাখ, এই দিনটাকে তো আর নতুন করে চিনিয়ে দেওয়ার দরকার নেই ।
রুদ্রঃ বাইশে মে, রাজা রামমোহন রায়-র জন্মদিন । বাইশে মে, ১৭৭২ ।
রাজীবঃ আবার মে মাসে আমরা হারিয়েছি অনেক স্বনামধন্য ব্যক্তিত্বকে । যেমন ধর সাতাশে মে, ১৯৬৪-তে পন্ডিত নেহেরু, তিরিশে মে ২০১৩-তে ঋতুপর্ণ ঘোষকে ।
রুদ্রঃ আরেকজন আমাদের প্রিয় লোককেও আমরা কিন্তু হারিয়েছি মে মাসে । প্রেমেন্দ্র মিত্র । আমাদের ছোটোবেলার ঘনাদার অমর সৃষ্টিকর্তা ।
রাজীবঃ তেসরা মে, ১৯৮৮ সালে প্রেমেন্দ্র মিত্র মারা যান । আজকের এই আলাপচারিতায় ওনার কথা একটু বিশেষভাবে বলতে ইচ্ছে করছে ।
রুদ্রঃ হ্যাঁ, রাজীব, প্রেমেন্দ্র মিত্র শুনেছিলাম তোর ছোটো বেলার পাড়ার বাসিন্দা ছিলেন । তোর সাথে আলাপ ছিলো নাকি ?
রাজীবঃ (হেসে) আলাপ ছিলো না ঠিক । পথে-ঘাটে দেখতাম মাঝে মধ্যে । তবে হ্যাঁ, হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রীটের যে বাড়িতে উনি থাকতেন এবং যেখানে ওনার মৃত্যু হয় - সেই বাড়িটা আমাদের বাড়ি থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে ছিলো । হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রীট তো এখন পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী শ্রীমতী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গৃহস্থান বলে বিখ্যাত হয়ে গেছে । আমাদের ছোটোবেলায় ওই রাস্তা প্রেমেন্দ্র মিত্র আর সঙ্গীতশিল্পী পিন্টু ভট্টাচার্যের বাসস্থানের জন্য খ্যাত ছিলো । প্রেমেন্দ্র মিত্র ওখানে থাকতেন এইটুকু জানতাম - কিন্তু ওনার বাড়িতে ওনার জীবিত অবস্থায় কখনো যাওয়া হয়নি !
রুদ্রঃ ওঁর মৃত্যুর সময় কি গিয়েছিলি নাকি ?
রাজীবঃ হ্যাঁ, সে নিয়ে একটা গল্প আছে বটে ।
রুদ্রঃ তাই নাকি, বলেই ফেল তবে, আমাদের শ্রোতারাও শুনুন একটু ।
রাজীবঃ আমি তখন যাদবপুরে ইলেক্ট্রিক্যাল এনজিনিয়ারিং-এর প্রথম বর্ষের ছাত্র । পাড়ায় আবৃত্তি করি-টরি বলে একটু পরিচিতি হয়েছে আবৃত্তিকার বলে । নাটকে অভিনয় করি - লোকেরা একটু চেনে-টেনে আর কি । কিন্তু হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রীট হলো পুরনো সেকেলে কলকাতার মতো পাড়া, এখনকার মতো apartment complex না, চারি দিকে নানা ক্লাব, রাজনৈতিক দলের দপ্তর । সবাই সংস্কৃতিবাদী, কাজেই মাঝে মাঝেই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন হতো । তাতে, গান, বাজনা, কবিতা এইসবের চর্চা হতো - স্থানীয় প্রতিভাদের নিয়েই । জীবন অন্যরকম ছিলো আরকি ।
রুদ্রঃ তার পর?
রাজীবঃ তেসরা মে ছিলো বোধহয় মঙ্গলবার । কলেজ-এর ক্লাস ছিলো আমার । কিন্তু তখন তো ফার্স্ট ইয়ার, অত ক্লাসে যাবার মাথা ব্যথা ছিলো না । সকালে পাড়ার দাদারা দেখি বাড়ির কড়া নেড়ে আমাকে ডাকছে । কি ব্যাপার ? শুনি প্রেমেন্দ্র মিত্র মারা গেছেন । অঞ্চলের সব ক্লাব এবং রাজনৈতিক দলেরা ঠিক করেছে যে ওনার মৃতদেহ লরিতে করে শোভাযাত্রা করে নিয়ে যাওয়া হবে কেওড়াতলা মহাশ্মশানে । সাধু প্রস্তাব কিন্তু আমাকে কেন ? দাদাদের বক্তব্য "তুই তো আবৃত্তি করিস, লরিতে আমরা মাইক্রোফোন আর স্পীকার দিয়ে দেবো - ওনার শোভাযাত্রাতে কোনো পাঠ আবৃত্তি থাকবে না সে আবার হয় নাকি ।" বোঝো কান্ড !
রুদ্রঃ বাপরে ! তারপর তুই কি করলি ?
রাজীবঃ তখন বর্তমানের স্বনামধন্য বাচিক শিল্পী এবং অভিনেতা সতীনাথ মুখোপাধ্যায় আমাদের ওই অঞ্চলে থাকতেন । উনি তখন দূরদর্শনে বাংলা সংবাদ পাঠ করে পরিচিতি অর্জন করেছেন, ওনার আবৃত্তিও বেশ জনপ্রিয় হচ্ছে । দাদাদের সিদ্ধান্ত হলো ওনাকেও অনুরোধ করা হবে লরিতে থাকতে ও পাঠ আবৃত্তি করতে । যেমন কথা তেমনি কাজ । দাদাদের সাথে আমিও গেলাম সকালে ওনার বাড়ি । উনি দরজা খুলে সব শুনে বললেন ঠিক আছে, আমি প্রেমেন্দ্রবাবুর বাড়ির সামনে পৌঁছে যাচ্ছি কিছুক্ষণের মধ্যে ।
রুদ্রঃ পৌঁছে গেলেন ?
রাজীবঃ হ্যাঁ ! আমি আর সতীনাথ বাবু লরিতে উঠে পড়লাম । দেখলাম মাইক্রোফোনের ব্যবস্থা করা হয়েছে আর বাইরে লাউডস্পীকার !
রুদ্রঃ সতীনাথবাবুর পাশে বসে তুইও কবিতা পড়লি ? এ তো দারুণ ব্যাপার !
রাজীবঃ হ্যাঁ, সেলিব্রিটির পাশে বসে কাব্য পাঠের সেই শুরু আর শেষ বলতে পারিস ! (হেসে) কালীঘাট থেকে বেরিয়ে হরিশ মুখার্জী রোড, রবীন্দ্র সদন হয়ে ঘুরে শেষে আমরা পৌঁছলাম কেওড়াতলা শ্মশানে ।
রুদ্রঃ কি কবিতা পড়েছিলি মনে আছে ?
রাজীবঃ সব মনে নেই, সঞ্চয়িতা আর প্রেমেন্দ্র মিত্রর শ্রেষ্ঠ কবিতার বই সঙ্গে নিয়েছিলাম । যার আবৃত্তি শুনে আমার আবৃত্তি করার ইচ্ছে জন্মেছিলো ছোটোবেলায় সেই শম্ভূ মিত্র প্রেমেন্দ্র মিত্রের একটি কবিতা "নিরর্থক" ওনার একটা আবৃত্তির অ্যালবামে প্রকাশ করেছিলেন - "দরজা জানলা ভেজাও যত না / আকাশ তোমাকে খুঁজবে / পাল্লা সার্শি ফাটলে ফুটোয় কত কাঁথা কানি গুঁজবে" - এইটা আমাকে খুব নাড়া দিয়েছিলো । এইটা পড়েছিলাম সেদিন মনে আছে ।
----------
রুদ্রঃ আমাদের শ্রোতা বন্ধুদের কাছে তুই যে এই স্মৃতিটুকু রোমন্থন করলি তার জন্যে তোকে ধন্যবাদ । শ্রোতাবন্ধুরা, এইরকম টুকরো টুকরো গল্প আর স্মৃতি আমাদের গল্প পড়া বা লেখক নির্বাচনের পেছনে কাজ করে নির্বাক ভাবে । আগেও করেছে, ভবিষ্যতেও করবে । আমাদের পরবর্তী সাহিত্যক, যাঁর রচনাতে আমরা এবারে মনোযোগ দেবো, তিনি হলেন প্রেমেন্দ্র মিত্র । কেন দেবো - তা নিয়ে দু-চার কথা বলে নিই ।
রাজীবঃ প্রেমেন্দ্র মিত্র বাংলা সাহিত্যে একজন ঐকিক ব্যক্তিত্ব । তিনি একাধারে স্বনামধন্য কল্লোল যুগের কবি, গল্পকার, ঔপন্যাসিক, চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্যকার, এবং চলচ্চিত্র পরিচালক । এতোগুলো বিভিন্ন শাখায় বাংলা সাহিত্যের আর কোনো স্বনামধন্য কথাকারকে অবলীলায় বিচরণ করতে দেখিনি আমরা ।
রুদ্রঃ সাহিত্যকীর্তির কথা বলার আগে ওঁর জীবন নিয়ে ছোট্ট দু একটা কথা বলে নিই । প্রেমেন্দ্রর জন্ম হয় ১৯০৪ সালে বারাণসীতে ওঁর বাবার কর্মস্থলে । বাবা জ্ঞানেন্দ্রনাথ মিত্র ছিলেন ভারতীয় রেলওয়েজের কর্মী তাই বদলির চাকরি ছিলো । প্রেমেন্দ্র মাতৃহারা হন খুব অল্প বয়সে । বাবার বদলির চাকরি আর দ্বিতীয় বিবাহের কারণে মাতামহ ডক্টর রাধারমণ ঘোষ নাতিকে নিজের কাছে মিরজাপুরে নিয়ে আসেন । কিন্তু এর কিছুদিনের মধ্যে তিনিও প্রয়াত হন । তখন তার এক দূর সম্পর্কের আত্মীয় প্রেমেন্দ্রকে বীরভূমের নলহাটিতে তাঁর নিজের বাড়িতে রেখে প্রাথমিক পড়াশুনোর আয়োজন করেন । বীরভূমের নলহাটি এম. ই. স্কুলে ও তার পর ভবানীপুরের সাউথ সুবার্বান স্কুলে ছাত্রজীবন শুরু, তার পর স্কটিশ চার্চ কলেজ হয়ে, শান্তিনিকেতন, ঢাকা, এবং আশুতোষ কলেজে কেটেছে ছাত্রজীবনের পরবর্তী পর্ব ।
রাজীবঃ প্রেমেন্দ্রর সৃষ্টি ঘনাদা অমরত্ব পেলেও, তাঁর সৃষ্টি করা অন্যান্য আরো কিছু চরিত্রও কিন্তু খুবই বিখ্যাত হয়েছিলো । যেমন মামাবাবু যাঁর পুরো আসল নাম লেখক কখনো প্রকাশ করেননি - পদবী রায়, এইটুকুই জানা গেছে । আপাতঃ গোবেচারা কিন্তু ভিতরে ভিতরে ডাকাবুকো এই চরিত্রর বেশ কিছু অভিযানের গল্প ধরা আছে তাঁর লেখনীতে । শোনা যায় যে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় পরবর্তী কালে তাঁর কাকাবাবু চরিত্র নাকি এই মামাবাবুর গল্পে উদ্বুদ্ধ হয়েই তৈরী করেছিলেন ।
রুদ্রঃ তার পরে ধরুন ডিটেকটিভ পরাশর বর্মা যিনি ডিটেকটিভও বটে আবার তার সাথে কবিতা চর্চাও করেন । কিন্তু গোয়েন্দাগিরি যতটাই সফল, কাব্যপ্রচেষ্টা ততটাই অসফল - আর তাঁর কবিতা ছাপার চেষ্টা বার বার খারিজ করেন যে সম্পাদক, সেই কৃত্তিবাসই আবার গোয়েন্দা পরাশরের সহকারী, যাকে বলে sidekick ! বেশ অদ্ভুত মেলবন্ধন বলা যায় । এ ছাড়া আছেন ভূতশিকারী মেজকর্তা । তবে আর কোনো চরিত্র বাঙালীর মননে ঘনাদার মতো রেশ রাখতে পারেনি বোধহয় । ঘনাদা ওরফে ঘনশ্যাম দাস আর তাঁর চারজন ৭২ নম্বর বনমালী নস্কর লেনের মেসবাড়ির বাসিন্দা অল্পবয়স্ক ভক্তের দল - শিশির, শিবু, গৌর, আর সুধীর ।
রাজীবঃ ওই চারজন তো আবার কোনো কল্পনার চরিত্র না - তাই না রুদ্র ?
রুদ্রঃ হ্যাঁ, ঠিক বলেছিস । চার জনেই প্রায় স্বনামধন্য বলা যায় । শিবু হলো সাহিত্যিক শিবরাম চক্রবর্তী, গৌর হলো গৌরাঙ্গপ্রসাদ বসু, বসুমতী চিত্র প্রতিষ্ঠানের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা । শিশির হলো শিশির মিত্র, বাংলা চলচ্চিত্রের প্রযোজক আর অভিনেতা । আর সুধীর হলো প্রেমেন নিজেই, ওটা নাকি ছিলো তাঁর আরেকটি ডাক নাম ।
রাজীবঃ এ ছাড়া আছে রাঁধুনী বনোয়ারী আর চাকর রামভুজ । এইসব চরিত্রগুলির মাঝে মহারাজের মতো অধিষ্ঠান ঘনাদা আর তাঁর বিচিত্র উদ্ভাবিত অভিযানের কাহিনী । প্রতিটি গল্পে রয়েছে বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক চিন্তাধারার বর্ণনা আর ভৌগোলিক পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ । ওই সব গল্প পড়ে ছোটো বেলায় পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তগুলোকে যেন চোখের সামনে দেখতে পেতাম ।
রুদ্রঃ আর সেই দেখার সঙ্গে সঙ্গে কতটা জানা আর শেখাও মিশে ছিলো, ছোটোবেলায় ঘনাদার গল্প পড়তে পড়তে তা কখনো বুঝতে পারিনি, বরং, লজ্জার সঙ্গে জানাচ্ছি, ধরেই নিয়েছিলাম ঘনাদার মতো লেখকও গুলতাপ্পি মেরে গল্প বানাচ্ছেন । অনেক পরে আস্তে আস্তে বুঝতে পেরেছি যে ঘনাদার নিজের কার্যকলাপ ছাড়া বাকি পটভূমিকা সবই নির্ভুল তথ্যভিত্তিক - ইতিহাস, ভূগোল, প্রাণীবিদ্যা, প্রকৃতিবিদ্যা এবং আরো অনেক বিস্তারিত বিভিন্ন বিষয় থেকে যেসব কৌতূহলোদ্দীপক এবং মনোজ্ঞ তথ্য তিনি তুলে আনতেন, তার সবকটাই তৎকালীন জ্ঞান ও বিজ্ঞানের নবতম আবিষ্কার আর অগ্রগতির প্রাঞ্জল বিবরণ - মনগড়া নয় ।
রাজীবঃ বিজ্ঞানের শেষ সীমা থেকে কল্পনার জোরে আর একটু অগ্রসর হয়ে যে গল্প রচনা, তাকে বলে বিজ্ঞানভিত্তিক গল্প বা সায়ান্স ফিকশন, অনেকে কল্পবিজ্ঞানও বলে থাকেন । বাংলায় বিজ্ঞানভিত্তিক গল্প ঠিক কে প্রথম লেখেন, তা নিয়ে কিছু মতভেদ আছে, কিন্তু নিঃসন্দেহে প্রেমেন্দ্র মিত্র বাংলা কল্পবিজ্ঞানের প্রধান একজন হোতা । শুধু ঘনাদার গল্পে বা মামাবাবুর গল্পে নয়, বেশ কিছু বিশুদ্ধ বিজ্ঞানভিত্তিক গল্প ও উপন্যাসও তিনি রচনা করেছিলেন ।
----------
রুদ্রঃ শ্রোতাবন্ধুরা, এই দোসরা মে, ২০২১-এ, আপনাদের কাছে প্রেমেন্দ্র মিত্র, তাঁর সাহিত্য, আর কিছু ব্যক্তিগত স্মৃতি উপস্থিত করতে পেরে ভালো লাগলো - আপানাদেরও খারাপ লাগেনি আশা করি । এই মে মাসে যাঁদের স্মরণ করি, তাঁদের প্রত্যেকের লেখা আমাদের পরবর্তী কিছু এপিসোডে পড়ার ইচ্ছা রইল । প্রেমেন্দ্র মিত্রর ঘনাদার গল্প, এবং অন্যান্য গল্প, অবশ্যই তার মধ্যে থাকবে ।
রাজীবঃ বন্ধু রুদ্র সত্যজিৎ রায়ের প্রোফেসর শঙ্কুর গল্প তো আগে থেকেই পড়ছে । কিন্তু সত্যজিৎ রায়ের ফেলুদা আর শঙ্কু ছাড়াও অনেক সার্থক গল্প আছে, যা অপেক্ষাকৃত স্বল্পপরিচিত । এই শতবার্ষিকী বছরে তার কিছু কিছু পড়ার ইচ্ছা রইল ।
রুদ্রঃ আর যাঁর জন্মদিন এই মে মাসকে অমর করে রেখেছে, যাঁর আবার করে পরিচয় দেবার ধৃষ্টতা আমাদের নেই, যাঁর গান-কবিতা বাঙালীকে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে বাঁচার রসদ জুগিয়ে যাচ্ছে, সেই বিশ্বকবির লেখাতে প্রবেশ করারও ইচ্ছা রইল । রবীন্দ্রনাথকে আমরা প্রধানতঃ কবি আর গীতিকার হিসেবেই সবচেয়ে বেশী চিনি । কিন্তু আমাদের এই আসর গল্পপাঠের; আমরা রবীন্দ্রনাথের গল্পই পাঠ করবো ।
রাজীবঃ বাংলা সাহিত্যে আরো বহু উজ্জ্বল জ্যোতিষ্ক আছেন, যাঁদের কারুর কারুর লেখার সঙ্গে আমরা যতটা পরিচিত থাকলে ভালো হতো, ততটা হয়তো নই । যতদূর সম্ভব, তাঁদের সঙ্গে মাঝে মাঝে পরিচয় করার, এবং আপনাদের পরিচয় করিয়ে দেওয়ার, সদিচ্ছাও থাকলো ।
রুদ্রঃ কেমন লাগলো জানাতে ভুলবেন না কিন্তু শ্রোতাবন্ধুরা । আর আমাদের চয়ন করা গল্পের বাইরে যদি আরো কিছু শোনার ইচ্ছা থাকে, আমাদের অবশ্যই জানাবেন । আজ তাহলে আসি ? নমস্কার ।
রাজীবঃ নমস্কার ।