Rajib and Rudra introduce Mahasweta, a new reader for this podcast; Mahasweta briefly talks about the literature of Nabanita Debsen, and reads one of her short stories. Released April 2021. Episode 60 of Season Two.
রাজীবঃ নমস্কার শ্রোতাবন্ধুরা, গল্প-কথার আসরের আজকের বৈঠকে যোগদানের জন্য আপনাদের অশেষ ধন্যবাদ । আমি রাজীব ঘোষ ।
রুদ্রঃ আমি রুদ্র দত্ত । শ্রোতাবন্ধুরা, আপনাদের সবাইকে আমাদের আসরের তরফ থেকে জানাই শুভ নববর্ষ ।
রাজীবঃ শুভ নববর্ষ । শ্রোতাবন্ধুরা, আপনারা জানেন যে আমাদের এই গল্পকথার আসরের এক-একটি বৈঠকে সাধারণতঃ হয় শুধু আমি, নয় শুধু বন্ধু রুদ্রই আপনাদের স্বাগত জানাই - যেদিন যার গল্প পাঠ করার দিন । আর কোনো-কোনোদিন আমরা দুজনেই থাকি, সেই সব বৈঠকে সাধারণতঃ আমাদের কথোপকথনই থাকে - গল্প পাঠ নয় ।
রুদ্রঃ কিন্তু আজ এই সন ১৪২৮-এর প্রথম সপ্তাহে আমাদের বৈঠক একটু অন্যরকম । এটা কথোপকথনের এপিসোড নয়, গল্পপাঠ আছে । কিন্তু পাঠ বন্ধুবর রাজীব করছে না ।
রাজীবঃ রুদ্রও করছে না ।
রুদ্রঃ তবে করছে কে ? শ্রোতাবন্ধুরা, পরিচয় করিয়ে দিচ্ছি আমাদের বৈঠকের এক নতুন সদস্যা, আজকের অতিথি কথক, মহাশ্বেতা মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে ।
মহাশ্বেতাঃ নমস্কার শ্রোতাবন্ধুরা, গল্প-কথার আসরের আজকের বৈঠকে উপস্থিত থাকতে পেরে, এবং আপনাদের জন্য পাঠ করতে পেরে, আমি খুবই আনন্দিত । এই আসর তো শুধু চিত্তবিনোদনের নয়, সংরক্ষণের যে কাজটা রুদ্রদা আর রাজীবদা হাতে নিয়েছে, আমার মতে সেটা অসামান্য গুরুত্বপূর্ণ একটা ব্যাপার । আমার নিজের পাঠের অভিজ্ঞতা সামান্যই, কিন্তু এই আসরে যথাসাধ্য সাহায্য যদি করতে পারি, আমি খুব খুশী হয়েই তা করবো, সেটা আমারই গৌরব । রাজীবদা, রুদ্রদা, তোমাদের ধন্যবাদ ।
রাজীবঃ ধন্যবাদ আমাদেরই মহাশ্বেতাকে দেওয়া উচিত, এবং আমরা দিচ্ছিও তাই । মহাশ্বেতা বলেছে পাঠের অভিজ্ঞতা ওর সামান্য, কিন্তু তাতে ওর পরিচয় কিছুই দেওয়া হয় না । মহাশ্বেতা বেশ নামকরা গায়িকা । কলকাতায় আর উত্তর আমেরিকায় যাঁদের রবীন্দ্রসংগীতের সঙ্গে যোগাযোগ আছে, তাঁরা অনেকেই মহাশ্বেতাকে চিনবেন ।
রুদ্রঃ মহাশ্বেতার কৃতির পুরো পরিচয় দিতে অনেক সময় লাগবে । দক্ষিণী-পুরষ্কার, পশ্চিমবঙ্গ সঙ্গীত আকাদেমীর নিখিল বঙ্গ প্রতিযোগিতায় প্রথম পুরষ্কার, অনেক কিছুই তাহলে বলতে হয় ।
রাজীবঃ তাই শুধু এইটুকুই বলি, যে নিজে ডাকসাইটে গায়িকা হওয়া ছাড়াও, বেঙ্গল মিউজিক কলেজের প্রাক্তন অধ্যাপিকা মহাশ্বেতা বহু বছর ধরে ছোটোদের একটি রবীন্দ্রসংগীতের স্কুল চালায় - এবং সেটাকেই নিজের বেশী বড় কীর্তি মনে করে । এটাই ওর পরিচয় ।
রুদ্রঃ আর অন্য একটা পরিচয় অবশ্যই এই যে ও আমার আর রাজীবের দুজনেরই পাড়াতুতো বোন । যার জোরে আমরা আজকে ওকে অতিথি কথক হিসেবে পেয়েছি - মাঝে মাঝে আবারো হয়তো পাবো, আশা রাখি । আর সেই গর্বেই মহাশ্বেতার কথা একটু বললাম ।
মহাশ্বেতাঃ অনেক ধন্যবাদ তোমাদের - কিন্তু আর বললে শ্রোতারা হয়তো ধৈর্য হারিয়ে চলে যাবেন । এবার গল্প পাঠ করি ?
রাজীবঃ বেশ । তা আজকে কার কোন গল্প পাঠ করছিস একটু বলবি নাকি ?
মহাশ্বেতাঃ আজ যাঁর গল্প পাঠ করব, তিনি হয়তো কবি হিসেবেই বেশী গভীর কীর্তি রেখে গেছেন । কিন্তু তাঁর রম্যরচনাগুলি পড়লে মনটা যেরকম খুশী হয়ে যায়, গল্পকার হিসেবেও তাঁকে উপেক্ষা করা যায় না মোটেই । কবি নবনীতা দেবসেনের কথা বলছি । নরেন্দ্র দেব আর রাধারাণী দেবী, দুই কবির কন্যা । নিজে সার্থক কবি, আর সেই সঙ্গে নাটক, নভেল, উপন্যাস, ভ্রমণকাহিনী, সবই লিখেছেন ।
রুদ্রঃ নবনীতা নামটা তো রবীন্দ্রনাথের দেওয়া, তাই না ?
মহাশ্বেতাঃ হ্যাঁ - আর মজার কথা এই যে তাঁর এককালীন স্বামী, নোবেল পুরষ্কার-জয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের নামও রবীন্দ্রনাথেরই দেওয়া । ... যাইহোক, নবনীতার রম্যরচনার কথা বলি । নবনীতার কবিতা যতটা বিমূর্ত, তাঁর রম্যরচনা ততটাই যেন ঘরোয়া, মাটির কাছাকাছি । সেইসব রচনায় যে সব চরিত্র ঘুরে ফিরে এসেছে, তারা সবাই অতি সাধারণ, আমাদের চেনা, অতি-পরিচিত মানুষ । সব গল্পগুলোই আসলে যেন নবনীতার নিজের জীবনের স্মৃতিচারণ । যেমন, আজ যে গল্পটি পড়বো, অনেক গল্পের মতোই তার বক্তা নবনীতা নিজেই, তাঁর মা, তাঁর মেয়েরাও তাতে উপস্থিত । কিন্তু এইসব ঘরোয়া পরিস্থিতির মধ্যে দিয়েও মানুষের চিরন্তন চরিত্রের পরিচয় ।
রাজীবঃ কোন গল্পটা বল তো ?
মহাশ্বেতাঃ এই গল্পটার নাম হলো "পরীক্ষা" ।
রুদ্রঃ বাঃ ! খুব মজার গল্প । আমরা সবাই ছোটোবেলায় স্কুল পাশের পরীক্ষা দিয়েছি, আর আমাদের মা-বাবা-রা তার ধকল সয়েছেন । কাজেই আমাদের সকলের পরিচিত ব্যাপার ।
মহাশ্বেতাঃ হুঁ! আর এখন আমি মেয়ে হবার পরীক্ষা পাশ করে মা হবার কঠিন পরীক্ষা দিচ্ছি তো ! তাই এই ঘরোয়া কিন্তু চিরন্তন গল্পটা খুব মনে ধরল ।
রাজীবঃ তাহলে আর দেরী নয়, গল্পপাঠ শুরু হোক ।
মহাশ্বেতাঃ তাহলে শুরু করছি আজকের পাঠ, নবনীতা দেবসেনের ছোটো গল্প, "পরীক্ষা" ।