[ I wrote this article on Higher Study Abroad Facebook Group to introduce UofL to prospective Bangladeshi Graduate students, August 26, 2018 ]
University of Louisville বিশ্ববিদ্যালয়টি খুবই অপরিচিত আমাদের দেশে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে এডমিশন হবার পর যখন সবাইকে জানালাম কেউই খুব একটা ভরসা পেলনা। মনে মনে ভাবল, হয়ত হবে কোন অগামগা ভার্সিটি। যাই হোক, খুব একটা অগামগা ইউনিভার্সিটি না, মোটামুটি নিম্ন-মাঝারি র্যাংকের স্টেট ইউনিভার্সিটি। এই বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে সবার আগে যা জানতে হবে, তা হল Louisville কিভাবে উচ্চারণ করতে হয়? প্রথমবার সবাই উচ্চারণ করে লুইসভিল, কিন্তু আসলে হচ্ছে “লুইভিল” । খোদ আমেরিকানরা এই ভুল করে থাকে। কেন্টাকি স্টেটের সবচেয়ে বড় শহর হল এই লুইভিল। লুইভিলকে আবার কেন্টাকির রাজধানী ভেবে বসবেননা। কেন্টাকির রাজধানী হচ্ছে ফ্রাংকফোর্ট, লুইভিল থেকে ৬০ মাইল দূরে অবস্থিত।
ইঞ্জিনিয়ারিং, ন্যাচারাল সাইন্স, হেলথ সাইন্স, মাথেম্যাটিকস, বিজনেস আমরা বাংলাদেশিরা যেসব সাবজেক্ট পড়তে চাই, মোটামুটি সবই আছে। আরো জানতে নিচের লিংক থেকে ঢুঁ মেরে আসতে পারেন।
আন্ডারগ্র্যাড, মাস্টার্স, পিএইচডি, সার্টিফিকেট সবই পড়া যাবে। শুধু পিএইচডি এর জন্য ইউনিভার্সিটি সাধারণত ফান্ড দিয়ে থাকে। তবে, মাস্টার্সে যে ফান্ড পাওয়া যায়না, এরকম না। প্রফেসর রাজি থাকলে সম্ভব। যেহেতু আমরা ফান্ড নিয়েই পড়তে ইচ্ছুক, এর পরবর্তী সকল আলোচনা পিএইচডি বিষয়ক।
Application Fee $ 65
Transcripts UnderGrad/Masters CGPA: 3.00 , পূর্ববর্তী সকল ডিগ্রির একটা করে অফিশিয়াল ট্রান্সক্রিপ্ট সিলকৃত খামে পাঠাতে হবে।
GRE বাঁধা-ধরা কোন নিয়ম নাই, তবে 307+ থাকলে ফান্ড আশা করা যায়।
English Proficiency TOEFL 79 অথবা IELTS 6.5
Statement of Purpose গুছিয়ে লেখা
Recommendations ২ টা লেটার
WES Equivalence এডমিশনে পেজে লিখে রেখেছে WES equivalence score প্রেফার করে, কিন্তু বাংলাদেশী কাউকে শুনিনাই WES করাইতে।
Financial Statement এডমিশনে পেজে লিখে রেখেছে, কিন্তু আমরা কেউই দেইনাই (আমরা গরীব ও মেধাবী) ।
Application Deadline জানুয়ারি ১৫ তারিখ আবেদনের শেষ তারিখ। এর পরেও এপ্লাই করা যাবে, কিন্তু ফান্ডের জন্য বিবেচনা হবেনা। সাধারণত ফল সেশনেই ফান্ডেড এডমিশন হয়। তবে ব্যতিক্রম হয়ে, স্প্রিং, সামারেও হতে পারে, প্রফেসর রাজি থাকলে। এডমিশন সম্পর্কিত তথ্যাদি এখানে পাওয়া যাবে,
আমার সিজিপিএ এত, জি আর ই এত, রিসার্চ পেপার অতটা-- আমি কি ফান্ডিং পাব?
সিজিপিএ ৩ +, জি আর ই ৩০৭ + , টোফেল ৮০+ যদি থাকে, তাহলে আপনি অনেক ভাল ক্যান্ডিডেট। এর সাথে সুন্দর স্টেটমেন্ট অফ পারপাস, ভাল রেকোমেন্ডেশন লেটার আর যদি পেপার ১-২ টা থাকে তাহলে প্রোফাইল অনেক স্ট্রং। কিন্তু এডমিশন-ফান্ডিং হবে কিনা এর কোন গ্যারান্টি নাই।
পি এইচ ডি এপ্লাই করতে কি মাস্টার্স থাকা লাগবে?
অনেক ডিপার্টমেন্ট মাস্টার্স চায়, আবার অনেকে চায় না। ডিপার্টমেন্টের ওয়েবসাইটে এই তথ্য পেয়ে যাবেন। যদি না পান, তাহলে গ্র্যাড কো-অর্ডিনেটরকে জিজ্ঞেস করুন। [গ্র্যাড কো-অর্ডিনেটরঃ প্রত্যেক ডিপার্ট্মেন্টে একজন প্রফেসর গ্র্যাজুয়েট এডমিশন সম্পর্কিত সকল বিষয় দেখভাল করেন। ডিপার্টমেন্টের ওয়েবসাইটে গ্র্যাজুয়েট সেকশনে গেলেই গ্র্যাড কো-অর্ডিনেটর কে তা পেয়ে যাবেন। ]
মাস্টার্সে কি ফান্ডিং পাওয়া যায়?
সাধারণত, না, কিন্তু কোন প্রফেসরকে যদি কনভিন্স করতে পারেন, তাহলে হতে পারে।
প্রফেসরদের কখন ইমেইল করা উচিৎ?
প্রফেসরদের বছরের যেকোন সময়ই ইমেইল করতে পারেন। তবে সেপ্টেম্বর-অক্টোবর-নভেম্বর উত্তম সময়। স্থানীয় সময় সকালের দিকে ইমেইল করলে রিপ্লাই পাবার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
কোন প্রফেসর থেকে রিপ্লাই পাইনাই, তবু কি এপ্লাই করব?
হ্যাঁ করবেন। যদি কোন প্রফেসর আওয়াজ না দেয়, আপনার সিজিপিএ, জি আর ই, টোফেল যদি রেঞ্জের (সিজিপিএ ৩ +, জি আর ই ৩০৭ + , টোফেল ৮০+ ) সাথে মিলে যায়, দারুণ করে একটা স্টেটমেন্ট অফ পারপাস লিখুন, ভাল রেকোমেন্ডেশন লেটার জোগাড় করুন এবং এপ্লাই করে ফেলুন। এখানে কিছু ইউনিভার্সিটি ফেলোশিপ আছে, যা আপনাকে ফুল ফান্ড দিবে। তবে অবশ্যই গ্র্যাড কো-অর্ডিনেটর এর সাথে যোগাযোগ করে নিবেন, উনি ভাল গাইড দিতে পারবেন।
কখন অ্যাপ্লাই করা উচিৎ?
প্রফেসর ইয়েস বললে, আর দেরি করা যাবেনা। আর যদি কোন প্রফেসর ম্যানেজ না হয়, তবে জানুয়ারি ১৫ আগে করলেই হবে।
ফান্ডিং কেমন দেয়?
মাস প্রতি ১৭০০-২০০০ ডলার এই রেঞ্জে। স্কুলভেদে ফান্ডিং এর পরিমাণ একেক রকম হয়।
এই ফান্ডিং দিয়ে চলবে ?
লুইভিল শহরের লিভিং এক্সপেন্স সহনীয় পর্যায়ে। ১০০০ ডলারের মধ্যে একজন ছাত্রের থাকা খাওয়া হয়ে যায়। আর বিবাহিত হলে আরো ৩০০-৪০০ বেশি পড়বে। লুইভিলে বসবাস করে বড় শহরের সকল রকম সুযোগ-সুবিধাই পাবেন কম খরচে ।
আরো কিছু জানার আছে?
এডমিশন, ফান্ডিং নিয়ে সবচেয়ে অথেন্টিক তথ্য পাবেন, গ্র্যাড কো-অর্ডিনেটর এর কাছে। মনে কোন প্রশ্ন জাগলেই, ইমেইল করুন গ্র্যাড কো-অর্ডিনেটর কে।
University of Louisville ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুলটি মোটামুটি মাঝারি র্যাংকিং এর স্কুল। কম্পিউটার সায়েন্স, ইলেক্ট্রিক্যাল, সিভিল, কেমিক্যাল, মেকানিক্যাল, ইন্ডাস্ট্রিয়াল এবং বায়োইঞ্জিনিয়ারিং । সব ডিপার্ট্মেন্টেই সবধরনের অত্যাধুনিক রিসার্চ ফ্যাসিলিটি আছে। প্রফেসরদের কাছে রিসার্চ ফান্ড ও আছে। অথচ, এখানকার সিভিল এবং বায়োইঞ্জিনিয়ারিং এ কোন বাংলাদেশী ছাত্র নাই। https://goo.gl/ogQXGU
College of Arts and Sciences এ অনেক ইন্টারেস্টিং পড়াশুনার বিষয় আছে। কেমিস্ট্রি, ফিজিক্স, আরবান এন্ড পাবলিক অ্যাফেয়ার, এবং এপ্লাইড এন্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল ম্যাথেম্যাটিক্স মাত্র এই চারটি ডিপার্টেমেন্টে কয়েকজন বাংলাদেশী ছাত্র আছে। https://goo.gl/PgRwPs
হেলথ সায়েন্স বিষয়ক গবেষণায় University of Louisville অনেক ভাল। হেলথ সায়েন্স রিলেটেড স্কুলগুলোতে অনেক নামিদামি প্রফেসর আছেন, অনেক টাকা গবেষণা ফান্ড পেয়েছেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় এই অনুষদে আমাদের বাংলাদেশী ছাত্র ১-২ জন মাত্র। হেলথ সায়েন্স সম্পর্কে আরো জানতে ঘুরে আসুন নিচের ওয়েবসাইটগুলো।
https://goo.gl/HRUcLp , https://goo.gl/WPtv1d
আরো অনেক স্কুল আছে, যেমন বিজনেস স্কুল, ল’ স্কুল, সোশ্যাল ওয়ার্ক স্কুল কিন্তু এইসব স্কুলে কোন বাংলাদেশী স্টুডেন্ট নাই।
University of Louisville থেকে পি এইচ ডি করা সবাই বড় বড় কোম্পানিতে জব করছে। তিন তিনটা ফরচুন ৫০০ কোম্পানীর লুইভিলে হেডকোয়ার্টার-- হিউম্যানা (হেলথ ইন্সুরেন্স), কিন্ড্রেড হেলথ কেয়ার এবং ইয়াম ব্র্যান্ড (কে এফ সি, পিৎজা হাট এবং ট্যাকো বেল এর মাদার কোম্পানী)। এছাড়া আছে ইউ পি এস এর ওয়ার্ল্ড হাব, জি ই হোম এপ্লায়েন্স , ফোর্ড ট্রাক প্ল্যান্ট, ব্রাউন-ফোরম্যান (ওয়াইন, হুইস্কি কোম্পানী)। লুইভিল থেকে ১ ঘন্টার দূরত্বে আছে নর্থ আমেরিকায় টয়োটার সবচেয়ে বড় প্ল্যান্ট । এছাড়াও, এই লুইভিলের আশেপাশেই অনেক বড় বড় শহর আছে, যেমন- সিনসিনাটি, ইন্ডিয়ানাপলিস, ন্যাশভিল, শিকাগো, আটলান্টা, মিশিগান। অতএব, চাকুরি আশা করি পাওয়া যাবে।
University of Louisville একটি মেট্রো ইউনিভার্সিটি তাই ক্যাম্পাস লুইভিল শহরের বিভিন্ন জায়গায় ছড়ানো ছিটানো। ছাত্রদের সুবিধার্থে সিটি বাস সার্ভিস ফ্রি। কয়েকমাস টাকা জমিয়ে পুরনো গাড়িও কিনে ফেলতে পারেন। আবহাওয়া শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা সবই আছে। শীতে -১০ ডিগ্রি হয়, তুষার পড়ে সর্বোচ্চ ৪-৫ দিন, গরমের সময় ৩৫ ডিগ্রি পর্যন্ত । বৃষ্টিপাতও অনেক হয়। আমাদের দেশীয় তরি-তরকারি, মসলা, চাল-ডাল সবই এখানে পাওয়া যায়। যারা ভোজনরসিক তাদের জন্য লুইভিল শহর দারুণ হবে, কারণ এখানে আছে অনেক অনেক রেস্টুরেন্ট, বিভিন্ন দেশের বাহারী ইয়াম্মি কিউসিন। আর যারা ঘুরনচন্ডী মানে ঘুরতে ভালবাসেন, লুইভিল তাদের জন্য ওছম। খুব কাছেই আছে গ্রেট স্মোকি মাউন্টেন, ওয়েস্ট ভারজিনিয়া ওয়াইল্ডার্নেস। আরো আছে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় গুহা- ম্যামথ কেভ। লুইভিলে এসে পড়াশুনা ভাল না লাগলে গুহায় গিয়ে কিছুদিন সন্ন্যাসযাপন করতে পারেন। এই শহরটি ধর্ম পালনের জন্য অনেক ভাল, অনেক মসজিদ, মন্দির গীর্জা আছে।লুইভিলের বিখ্যাত ব্যক্তিদের মধ্যে আছেন মোহাম্মদ আলি, টমাস আলভা এডিসন এবং বর্তমান সময়ের ক্রেজ জেনিফার লরেন্স । লুইভিলের সবচেয়ে বড় লোকাল ইভেন্ট হল কেন্টাকি ডার্বি ফেস্টিভাল - বার্ষিক ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা। এই ফেস্টিভ্যালের উদ্ভোদন করা হয় জাকজমকভাবে আতশবাজি ফাটিয়ে। এটি নর্থ আমেরিকার সবচেয়ে বড় আতশবাজি প্রদশর্নী। এছাড়াও, এই শহরের পাশ দিয়েই বয়ে গেছে ওহাইয়ো নদী। গবেষণা করে ক্লান্ত হয়ে এই নদীর পাশে গেলে, এই নদী ভালবাসা দিয়ে সব ক্লান্তি দূর করে দেয়। https://goo.gl/oZPCKZ
University of Louisville এ বাংলাদেশী ছাত্র আছে ৩০ জন, ছাত্র ছাড়াও এই শহরে চাকুরীজীবি, ব্যবসায়ী সবার পরিবার-পরিজন নিয়ে ১৫০ জন এর মত বাংলাদেশী আছে। আপনিও চলে আসুন, তাহলে আমাদের কাউন্টিং n+1 হয়ে যাবে। University of Louisville এ আপনাকে স্বাগতম।
University of Louisville এ এপ্লাই করার পর যখন এডমিশন, ফান্ডিং হবে এবং আপনি মনস্থির করবেন লুইভিলেই আসবেন তখন আপনি যোগাযোগ করেন আমাদের স্টুডেন্ট এসোসিয়েশনের সাথে। আপনাদের বাসাবাড়ি ঠিকঠাক করার কাজে আমরা সর্বাত্মক সাহায্য করব।