মায়ের ভালোবাসা
-★আজহারুল ইসলাম জুয়েল
আকাশের ঐ যে বিশালতা
আর সমুদ্রের অতল গভীরতা,
যেন অতি ক্ষুদ্র হয়ে যায়
সেই ভালোবাসার কাছে ।
হিমালয়ের ঐ যে উচ্চতা আর
সাগরের অসম ঢেউয়ের তীব্রতা,
যেন নিমিষেই ম্লান হয়ে যায় যা
মায়ের ভালোবাসায় আছে ।।
পৃথিবীর অন্যসব ভালোবাসাগুলো
মনের গহীনে থেকেও যখন,
জীবন চলার সন্ধিক্ষণে
খুঁজে ফেরে স্বার্থপরতার রূপ ।
স্রষ্টার সৃষ্টির ঐ মহিমা আর
অজানা রহস্যে ভরা ঐ যে হৃদয়
নিঃস্বার্থ ক্লান্তিহীন অমোঘ সেই
মায়ের ভালোবাসার স্বরূপ ।।
যাঁর কষ্টে ঐ যে জীবন স্নিগ্ধ আজ
সূরের মূর্ছনা যেখানে অম্লান ,
মনের আংগিনায় ঐ যে বাগান
যাঁর ছন্দে পৃথিবী ধন্য ।
সেই তো সেরা জননী আমার
যাঁর জন্যে পৃথিবীতে আমি,
অস্তিত্বে আজো, তাই ঋনী চিরকাল
মায়ের ভালোবাসার জন্য ।।
----------------
শিক্ষক
-★আজহারুল ইসলাম জুয়েল
নিত্য তাঁর চলার পথে
হয় না কখনো দেরী,
নিয়মে সে বেঁধে রেখেছে
জীবন নামের তরী।
হররোজ সে করে অভিনয়
দর্শক তাঁর ক্ষুদে,
চাহনীতে তাঁর দীপ্ত হাসি
তৃপ্তিতে বুঁদ বুঁদে।
এ যেন তাঁর রসনা বিলাস
জ্ঞানের সাগরে ভেসে,
যায় করে সব অকাতরে দান
ক্লান্তি নাই তো শেষে।
জন্মেছিল সে বিলিয়ে যেতে
যা আছে তাঁর কাছে ,
সৃ্ষ্টিতে সে বেজায় খুশি
যে যাই বলুক পাছে।
জীবনটা তাঁর সমৃদ্ধ সে তো
মানে সে ভরপুর ,
ফিরে সে দেখে না কভু
জীবন নদীর সুর।
মুক্তা মানিক গড়াই তাঁর
আপন মনের চাওয়া,
শেষ বিকেলে একটাই তাঁর
সম্মানটুকু পাওয়া।
----------------
কবিতা
-★আজহারুল ইসলাম জুয়েল
কবিতা, মানুষ কেন
তোমায় এত ভালোবাসে?
তুমি কি রাখালিয়া সেই
সাঁঝের বাঁশির সুর ?
অথবা কপোত-কপোতীর
গোপন আলিংগন ! আর যেন
অপ্সরীর নরম ছোঁয়া !
কবিতা, তোমার স্বাদ কেন
এত মধুর, এত তৃপ্তিদায়ক ?
যেন মায়ের হাতে খাওয়া
এক কোলা ভাত !
অথবা পিপাসিত পথিকের
হৃদয় জুড়ানো গ্লাস ভরা পানি !
কবিতা, তুমি কি সেই
তাঁরায় ভরা আকাশ ,
আর জ্যোৎস্না ছোঁয়া রাত !
অথবা নদীর বহমান ঢেউ আর
কল-কাকলির তান , যেন
সুর্যাস্তের রক্তিম আভা !
তবে সবকিছুর শেষে
একটাই পরিচয় তোমার ,
তুমি হিজিবিজি কিছু
মনের কালির আঁচর !
তাইতো অজান্তেই তুমি
হৃদয়ে সবার, চিরদিন, চিরকাল ।
----------------
অযাচিত
-★আজহারুল ইসলাম জুয়েল
কোন এক প্রান্ত থেকে
তুই আসবি বলেই
অহর্নিশি শুনছিলাম !
সত্যিই সেদিন
তুই আসলি বলেই
চলা বন্ধ করলাম !
নিত্য বাইরে
তুই ঘুরছিস বলেই
ঘরে আবদ্ধ হলাম !
পৃথিবীর মানুষকে
তুই কষ্ট দিচ্ছিস বলেই
তোকে শত্রু ভাবলাম !
সৃষ্টির সেরা জীবকে
তুই চিনিস না বলেই
তোর বাহাদুরি দেখলাম!
জানি খুব অচিরে
তুই ধ্বংস হবি বলেই
সেই অপেক্ষায় রইলাম !
অশান্ত পৃথিবী আবার
শান্তিতে ভরে উঠুক
তারই আশায় থাকলাম !
পথিক
-★ আজহারুল ইসলাম জুয়েল
জন্ম নিয়েই করেছ পথ চলা
থমকে দাঁড়াওনি একটি বার ,
এরই মাঝে হেঁটেছ অনেক দূর
হোচট্ খেয়েও বার বার ।
কত যে নদী, কত যে পাহাড়
পেরিয়েছ একেলা বিনিদ্র রজনী ,
চলেছ আজও নিঃশব্দে একাকী
ছাড়িয়ে যত প্রিয় আর সজনী ।
আশা নিয়ে বুকে ছুটেছ অবিরত
হতে জয়ী জীবন নামের যুদ্ধে ,
পাছে ফিরে তাঁকাওনি কভু তুমি
যতই হোক সে তোমার বিরুদ্ধে ।
এমনি করেই একদিন জানি তাই
করবে তুমি এ পৃথিবী জয় ,
সেদিন তোমার বিজয়ের হাসিতে
আনন্দে সবার ভরবে হৃদয় ।
----------------
বিরহ
-★ আজহারুল ইসলাম জুয়েল
কেন এমন হয় ?
সামান্য পরিচয়ে
এতটুকু ভালোবাসা !
কেন এমন হয় ?
প্রথম দেখাতেই
সবটুকু ভাললাগা !!
কেন এমন হয় ?
মনের অজান্তেই
গভীর প্রেমে পড়া !
কেন এমন হয় ?
মনের গহীন থেকে
এত প্রেম ঝরা !!
কেন এমন হয় ?
সামান্য বিরহে
এতটুকু অভিমান !
কেন এমন হয় ?
অজানা আবেগে
ভেংগে যায় প্রাণ !!
কেন এমন হয় ?
এত গভীর প্রেমেও
আশা ভেংগে যায় !
ঠিক তখনই এমন হয়
যখন তুমি বলা
তুমিটা ফেরত চায় !!
----------------
নারী
- ★ আজহারুল ইসলাম জুয়েল
সৃষ্টিতে অপরূপ তুমি
প্রস্ফুটিত ফুলের সৌরভে ভরা
মায়াবী হরিনীর দৃষ্টির সাথে মধুর মিষ্টতায়
চাঁদ আর সূর্যের আলোয় মাখানো
স্নিগ্ধতায় ঝলমলে প্রফুল্লতা।
সৃষ্টিতে অনন্য তুমি
চড়ুই পাখির কিচিরমিচির আর
কোকিলের মিষ্টি কুহুতানের ধ্বনি
মেশানো আগুনের উষ্ণতায় ঔজ্জ্বল্য
শশকের ভীরুতায় সারশের কপটতা।
সৃষ্টিতে নন্দিতা তুমি
সবুজ ঘাসের শিশিরের শিহরণ
পত্র পল্লবের হালকা চপলতা আর
মেঘের অশ্রুপাতে শবের তনু বল্লরী
মেশানো হাওয়ার অনিশ্চয়তা।
সৃষ্টিতে বিভুষিতা তুমি
লতার বংকিমতায় জড়ানো আর
লতানো সুললিত অংগে ভরা
ষোলকলায় পূর্ণ তুমি ক্ষনিকেই
দৃষ্টি কাড়ানো এক নারী বিভূষিতা।
----------------
সৃষ্টি
-★আজহারুল ইসলাম জুয়েল
আমি বাবা, পৃথিবীকে গতিময় করতেই
আমার আসা, আমাকে সৃষ্টি করা হয়েছে
চলমান পৃথিবীর জন্য ।
আমি মা, পৃথিবীকে আগলে রাখতেই
আমার আসা, আমাকে সৃষ্টি করেই সমগ্র
পৃথিবী হয়েছে ধন্য ।
আমি ভাই, পৃথিবীকে সুখে ভরিয়ে দিতেই
আমার আসা , আমাকে সৃষ্টি করা হয়েছে
অন্য এক পৃথিবী খোঁজার ।
আমি বোন, মায়ের বিকল্প হয়েই পৃথিবীতে
আমার আসা। আমাকে সৃষ্টি করা হয়েছে
নতুন একটা পৃথিবী গড়ার ।
আমরা একেকটা পৃথিবী, প্রতিটা পৃথিবীকে একই
সুত্রে বাঁধতে আমাদের আসা,
আমাদের সৃষ্টি করা হয়েছে একে অপরের জন্য ।
আমরা মানুষ, স্রষ্টার সেরা জীব হিসাবেই
আমাদের আসা, আমাদের সৃষ্টি করা হয়েছে
সর্বদা স্রষ্টার গুনগানের জন্য ।